Advertisement
E-Paper

৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল নিয়ে সোমবার রায় সুপ্রিম কোর্টে, আশঙ্কায় কাশ্মীরে আঁটসাঁট নিরাপত্তা

ওমর আবদুল্লা জানান, রায় যেমনই হোক, তাঁর দল কাশ্মীরের শান্তিকে বিঘ্নিত করবে না। মেহবুবা মুফতির বক্তব্য, ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নেওয়ার নীতি যে ‘অবৈধ’ ছিল, আদালতের রায়ে তা স্পষ্ট হওয়া উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:০৬
Strict security arrangements in Jammu & Kashmir before Supreme Court’s Verdict on Article 370 on Monday

কাশ্মীরে টহল নিরাপত্তাবাহিনীর। —ফাইল চিত্র।

জম্মু ও কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিলের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে বহু মামলা দায়ের হয়েছিল। সেগুলি একত্রে এনে সম্প্রতি শুনানি শুরু করে দেশের শীর্ষ আদালত। সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণা হতে চলেছে।

গত ২ জুলাই থেকে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে শুরু হয় ধারাবাহিক শুনানি। ৫ সেপ্টেম্বর এই বিষয়ে রায়দান স্থগিত রাখে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। রায় ঘোষণার পরেই জম্মু ও কাশ্মীরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় আঁটসাঁট করা হয়েছে নিরাপত্তা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এক পুলিশ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, যে কোনও পরিস্থিতিতে উপত্যকায় শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর পুলিশ। শ্রীনগর প্রশাসনের তরফে একটি নির্দেশিকা দিয়ে বলা হয়েছে, সাম্প্রদায়িক কিংবা সন্ত্রাসবাদে মদত জোগাতে পারে, এমন কোনও পোস্ট সমাজমাধ্যমে করা যাবে না। অন্যথায় আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে। ফোনে আপত্তিকর কোনও বার্তা পেলে দ্রুত পুলিশকে জানানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কাশ্মীরের বিজেপি বিরোধী দলগুলি (যারা গুপকার জোট নামে পরিচিত) জানিয়েছে, তারা চায় কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ আবার ফিরিয়ে আনা হোক। ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) নেতা ওমর আবদুল্লা জানান, রায় যেমনই হোক, তাঁর দল কাশ্মীরের শান্তিকে বিঘ্নিত করবে না। পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির বক্তব্য, বিজেপি সরকারের ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নেওয়ার নীতি যে অবৈধ ছিল, আদালতের রায়েই তা স্পষ্ট হয়ে যাওয়া উচিত।

দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে ৩৭০ রদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ২০১৯ সালে কেন্দ্র সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করে। সাবেক জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখে ভাগ করা হয়। তার পরেই সুপ্রিম কোর্টে এই পদক্ষেপের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়। শুনানিতে সরকারের আইনজীবীরা জানান, জম্মু-কাশ্মীরকে পুরোপুরি ভারতের অন্তর্ভুক্ত করতে এই পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই সেখানে ভোট হবে। ফেরানো হবে রাজ্যের মর্যাদা। আবেদনকারীদের পক্ষে কপিল সিব্বল, গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের মতো প্রবীণ আইনজীবীরা জানান, কেন্দ্র সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জারি করা বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক নির্দেশের মাধ্যমে একটি পূর্ণ মর্যাদার অঙ্গরাজ্যকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করেছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপরে আঘাত। সংবিধানের সঙ্গেও ধোঁকাবাজি করা হয়েছে।

শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানিয়েছিল, যে সব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশেষ মর্যাদা লোপ করা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখবে আদালত। আইনজীবীরা তখন জানিয়েছিলেন, সে ক্ষেত্রে শুরু করতে হবে ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর থেকে। সে দিন জম্মু-কাশ্মীরের তৎকালীন রাজ্যপাল তৎকালীন জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা ভেঙে দেন। এক মাস পরে, ১৯ ডিসেম্বর ৩৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদ মেনে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা হয়। ৩ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির শাসন অনুমোদন করে সংসদ। ২০১৯ সালের ৩ জুলাই ছ’মাসের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট সংবিধান (জম্মু-কাশ্মীর সংক্রান্ত) নির্দেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। তার মাধ্যমে সংবিধানের ৩৬৭(৪) নম্বর অনুচ্ছেদ যোগ করা হয়। এই প্রক্রিয়ার ফলে সংবিধানের ৩৭০(৩) নম্বর ধারায় ‘রাজ্যের সংবিধান সভা’-র বদলে ‘রাজ্যের বিধানসভা’ শব্দটি যোগ হয়। সে দিনই সংসদে বিশেষ মর্যাদা লোপ ও জম্মু-কাশ্মীর ভাগের বিল পাশ হয়। পরের দিন রাষ্ট্রপতি জানান, ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ আর কার্যকর হচ্ছে না।

গত চার বছর ধরে এই সিদ্ধান্তের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একগুচ্ছ মামলা জমে ছিল। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ছাড়াও সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কউল, বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সূর্য কান্ত। বেঞ্চের প্রবীণতম সদস্য বিচারপতি সঞ্জয়কিষণ কউল অবসর নিচ্ছেন আগামী ২৫ ডিসেম্বর।

Supreme Court Article 370 jammu & kashmir Gupkar Alliance Abrogation of Article 370
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy