Advertisement
E-Paper

স্তব্ধ দেশে লোকসান ২৫ হাজার কোটি টাকা

বিপর্যস্ত সাধারণ জনজীবন। কোথাও হয়তো আংশিক। কিন্তু ধর্মঘটে থমকে যাওয়া বুধবারের ছবিটা মোটামুটি গোটা দেশ থেকেই স্পষ্ট। কয়লা উৎপাদন থেকে শুরু করে, ব্যাঙ্কিং ও পরিবহণ পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ায় ভুগেছেন সাধারণ মানুষ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৫
মোটরসাইকেল আরোহীদের উপরে হামলা ধর্মঘটকারীদের। বুধবার ভুবনেশ্বরে। ছবি: এপি।

মোটরসাইকেল আরোহীদের উপরে হামলা ধর্মঘটকারীদের। বুধবার ভুবনেশ্বরে। ছবি: এপি।

বিপর্যস্ত সাধারণ জনজীবন। কোথাও হয়তো আংশিক। কিন্তু ধর্মঘটে থমকে যাওয়া বুধবারের ছবিটা মোটামুটি গোটা দেশ থেকেই স্পষ্ট। কয়লা উৎপাদন থেকে শুরু করে, ব্যাঙ্কিং ও পরিবহণ পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ায় ভুগেছেন সাধারণ মানুষ। হিংসার ছবি অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ ছা়ড়া আর কোথাও তেমন চোখে পড়েনি। বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম তবু সিঁদুরে মেঘ দেখছে। তাদের হিসেব— আজকের ধর্মঘটে দেশ জুড়ে ক্ষতির অঙ্ক কম করে ২৫ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্র যদিও ধর্মঘটকে সফল মানতেই নারাজ।

তবে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি একে ‘সর্বাত্মক সফল’ বলছে কেন? নেতৃত্বের ব্যাখ্যা— সংগঠিত ক্ষেত্রের অন্তত ১৫ কোটি শ্রমিক ধর্মঘটে অংশ নেন। পাল্টা দাবিতে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী বন্দারু দত্তাত্রেয় জানান, দেশের ১২টি শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে মাত্র ৭টি ধর্মঘটে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে প্রায় সব শ্রমিক সংগঠনকেই আজ দিনভর সরব থাকতে দেখা গিয়েছে।

এ দিকে, ধর্মঘটের বিরোধিতায় পুলিশ ও দলীয় সমর্থকদের মাঠে নামানোয় অভিযুক্ত পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ত্রিপুরা, কেরল, কর্নাটক থেকে শুরু করে পুদুচেরি, ওড়িশায় ধর্মঘট কার্যত আজ বন্‌ধের চেহারা নেয়। আংশিক প্রভাব লক্ষ করা গিয়েছে পঞ্জাব, হরিয়ানা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, দিল্লি এমনকী মোদীর রাজ্য গুজরাতেও। পরিবহণ পরিষেবা ব্যাহত হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড-সহ প্রায় সর্বত্র। ত্রিপুরাতে বেশির ভাগ স্কুল, কলেজ, দোকানপাট বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল চটকলের দরজাও।

সে দিক থেকে বরং মুম্বইয়ের চেহারা কিছুটা ব্যতিক্রমী। মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল ট্রেন চলাচল। অবশ্য ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় ধাক্কা সামলানো যায়নি। মুম্বইয়ের সঙ্গে অচল থেকেছে বিশাখাপত্তনম বন্দরও।

তবে দেশে সব চেয়ে বেহাল দশা ব্যাঙ্কিং পরিষেবার। আজকের ধর্মঘটে ২৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত, ১২টি বেসরকারি, ৫২টি গ্রামীণ এবং ১৩ হাজার সমবায় ব্যাঙ্কের কাজে ধাক্কা লেগেছে বলে সূত্রের খবর। ধর্মঘটের প্রভাব পড়ে ডাক বিভাগ ও বিএসএনএলেও।

যান চলাচলে মুম্বই স্বাভাবিক থাকলেও, রাজধানী দিল্লিতে অটো ও ট্যাক্সি মিলে প্রায় ১ লক্ষ যানবাহন নামেনি। এখানে প্রতিবাদ কেজরীবাল সরকারের বিরুদ্ধেও। ফলে ভোগান্তি ছিল। নয়াদিল্লি স্টেশনেও হেনস্থার মুখে পড়েন যাত্রীরা। ব্যক্তিগত গাড়ির ভরসায় অবশ্য পথে নামেন অনেকেই। স্বাভাবিক ছিল বিমান পরিষেবাও।

ধর্মঘটে জেরবার কোল ইন্ডিয়াও। রোজ প্রায় ১১ লক্ষ টন কয়লা উৎপাদন হয় এখানে। আজ তার অর্ধেক উৎপাদনও হয়নি। বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়াল অবশ্য দাবি করেছেন, এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেমন সমস্যা হবে না। একই দাবি পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানেরও। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের কোথাও ধর্মঘটের তেমন গুরুতর কোনও প্রভাব পড়েনি।’’

অবশ্য অ্যাসোচ্যাম যে ক্ষতির আশঙ্কা করেছে, সরকারি তরফে তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া মেলেনি। শ্রমমন্ত্রী দত্তাত্রেয় আজই জি-২০ বৈঠকে অংশ নিতে তুরস্ক পাড়ি দিয়েছেন। গত কালই ধর্মঘট তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি তাতে আমল দেয়নি। বরং মন্ত্রীর বিদেশযাত্রা নিয়েই তারা কটাক্ষ করেছে দিনভর।

business banks industry postal department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy