গুজরাতের অহমদাবাদের বিমানবন্দর থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে বিজে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ২৪২ জনকে নিয়ে সেখানেই ভেঙে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১। ওই হস্টেল থেকে আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে কথা বললেন এমবিবিএস-এর তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া শুভম গুপ্তা। হস্টেলেই থাকেন তিনি। বিমান ভেঙে পড়ায় তাঁর আঘাত লাগেনি। তবে তাঁর অনেক সহকর্মী এবং জুনিয়র ডাক্তারেরা আহত হয়েছেন। অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। দুর্ঘটনার পর হস্টেলটাই যেন হয়ে উঠেছে হাসপাতাল। সেখানে বসে রোগী দেখতে দেখতে আনন্দবাজার ডট কমের প্রতিনিধিকে ফোনে তেমনটাই জানিয়েছেন শুভম। জানিয়েছেন, তিনি ‘ট্রমা’য় আছেন।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে শুভম বলেছেন, ‘‘আমরা সকলে হস্টেলেই ছিলাম। এখনও ট্রমায় আছি। এখানেই রোগী দেখছি। আমার তেমন কিছু হয়নি। তবে আমার অনেক জুনিয়র এবং সহকর্মী আহত। আমাদের হস্টেলের মেস-এ বিমান ক্র্যাশ করেছে।’’ আহতেরা কেমন আছেন? শুভম বলেন, ‘‘কয়েক জনের অবস্থা স্থিতিশীল। কারও কারও মৃত্যুও হয়েছে।’’ বলতে গিয়ে গলা কেঁপে ওঠে শুভমের। কিছু ক্ষণ থেমে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখন যেটুকু যা করতে পারছি, করছি।’’ ওই হস্টেলের আর এক আবাসিক তথা শুভমের সহকর্মীকে ফোন করা হলে তিনি জানান, বন্ধুদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। কথা বলার মতো পরিস্থিতিতেই নেই তিনি।
আরও পড়ুন:
জানা গিয়েছে, হস্টেলের মেস-এ, যেখানে আবাসিকেরা খাবার খান, সেখানে বিমানটি ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, বহু বেঞ্চ ভেঙে পড়ে আছে। ছড়িয়েছিটিয়ে আছে খাবার। অনেকেই সে সময়ে খাচ্ছিলেন। মেস পুরো তছনছ হয়ে গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে মেস-এর দেওয়াল।
বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৩৮ মিনিট নাগাদ অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি উড়েছিল। গন্তব্য ছিল লন্ডন গ্যাটউইক বিমানবন্দর। মাটি ছাড়ার মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। মাত্র ৬২৫ ফুট উপরে বিমানটি উঠতে পেরেছিল। বিমানবন্দরের সামনে ডাক্তারদের হস্টেলে বিমানটি ভেঙে পড়ার পরেই আগুন ধরে যায়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেখানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে অহমদাবাদের পুলিশ, দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটিতে ২৩০ জন যাত্রী, ১২ জন বিমানকর্মী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়। এ ছাড়া ওই বিমানে ছিলেন ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, এক জন কানাডিয়ান এবং সাত জন পর্তুগিজ নাগরিক। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে এখনও অনেকে ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ৩০টি দেহ এখনও পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা গিয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।