দিল্লির এ পি জে আব্দুল কালাম রোডে শুক্রবার ঢাকঢোল নিয়ে উৎসব। বাঙালি বিজেপি নেতারা আনন্দে মেতেছেন। মিষ্টি বিলি চলছে। এই বাড়িতে সদ্য পা রেখেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
দিল্লির ভোটে বিজেপির জয়ের মধ্যে আজ বাংলার বিজেপি নেতারা নিজেদের সাফল্যও দাবি করেছেন। কারণ, এ বার দিল্লির বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় সুকান্ত ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পাল, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, সৌমেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্যদের প্রচারে নামানো হয়েছিল। তাই বাংলার বিজেপি নেতারা মনে করছেন, দিল্লির নির্বাচনে বাঙালি ভোট পাওয়ার সাফল্যের প্রতিফলন আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গেও দেখা যাবে।
বাংলার বিজেপি নেতারা এমন দাবি করলেও দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, দিল্লির বাঙালিদের একটা বড় অংশ এমনিতেই বিজেপিকে ভোট দেন। যেমন, দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্ক যে বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায়, সেই গ্রেটার কৈলাসে বিজেপি ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েই থাকে।
তা ছাড়া, দিল্লির বাঙালিরা কোনও দিনই এককাট্টা হয়ে এক দিকে ভোট দেন না। সেই কারণেই দিল্লিতে বিহার থেকে আসা পূর্বাঞ্চলীয় ভোটব্যাঙ্ক বা হিমাচল, উত্তরাখণ্ডের মানুষদের পাহাড়ি ভোটব্যাঙ্কের মতো বাঙালি ভোটব্যাঙ্ক গড়ে ওঠেনি। দিল্লির পুরনো বাঙালিদের মধ্যে তেমন কোনও রাজনীতিকও উঠে আসেননি।
সূত্রের খবর, এ বারও দিল্লির বিধানসভা ভোটের আগে বাঙালিদের সংগঠন গড়ে বাঙালি ভোটব্যাঙ্ককে এককাট্টা করার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। সেই চেষ্টা সফল হয়নি। তা সত্ত্বেও এ বার গ্রেটার কৈলাস কেন্দ্রে বিজেপি জয় পেয়েছে। ত্রিলোকপুরী, পটপরগঞ্জ, লক্ষ্মীনগর ও পালাম কেন্দ্রেও জিতেছে গেরুয়া শিবির। এখানেও বাংলার বিজেপি নেতাদের প্রচারে নামানো হয়েছিল। অসমের বাঙালি বিজেপি নেতা শিলাদিত্য দেবও প্রচারে নেমেছিলেন। অন্য দিকে, বঙ্গ বিজেপির নেতাদের প্রচার সত্ত্বেও কালকাজি, করোল বাগ এলাকায় আম আদমি পার্টি হারিয়ে দিয়েছে বিজেপিকে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির মুস্তফাবাদে বিজেপি জিতেছে ঠিকই। তবে তার কারণ হল, আপ-এর কাউন্সিলর মহম্মদ তাহির হুসেন এ বার এমআইএম-এর প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে আপের সংখ্যালঘু ভোট কেটে নিয়েছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)