বিহারের বাহুবলী নেতা মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের জামিন খারিজ সংক্রান্ত একটি মামলায় তাড়াহুড়ো করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে পড়ল বিহার সরকার। তাঁরা জানতে চাইলেন, জরুরি হলে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়নি কেন? আদালত জানিয়ে দিয়েছে, শুনানি দু:দিন পিছিয়ে বুধবার করা হবে। এ দিকে, তাঁর জামিন খারিজ হলেই তাঁকে যাতে সঙ্গে সঙ্গে জেলে পোরা যায় তার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিহার পুলিশ।
সাহাবুদ্দিন সংক্রান্ত তিনটি পৃথক মামলা একত্র করে আজ শুনানি ছিল। সাহাবুদ্দিনের আইনজীবী রাম জেঠমালানি কোনও কারণে অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁর সহযোগী আইনজীবীরা শুনানি এক সপ্তাহ পিছনোর আবেদন করেন। বিচারপতি পিনাকি ঘোষ ও বিচারপতি অমিতাভ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ তাতে রাজি না হয়ে শুনানি দু’দিন পিছিয়ে দেন। বিহার সরকারের আইনজীবী আজই শুনানির জন্য আবেদন জানাতে থাকেন। সরকারের আইনজীবী আদালতে বলেন, এই মামলার শুনানি অবিলম্বে করা প্রয়োজন। কারণ সাহাবুদ্দিন জেলের বাইরে থাকলে আরও বহু মানুষের প্রাণ সংশয় হতে পারে। তখনই বিচারপতিরা বিহার সরকারের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ‘‘বিষয়টি যদি এতই জরুরি তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কেন তাঁরা স্থগিতাদেশ চাননি?’’ আগামী বুধবার শুনানির দিন ঘোষণা করেছে আদালত।
অন্য দিকে, সাহাবুদ্দিনের জামিন বাতিল হলেই যাতে তাঁকে দ্রুত গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে বিহার পুলিশ। সিওয়ান-সহ আশপাশের জেলাগুলির পুলিশ সুপারদের আগাম সতর্ক করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং কমান্ডো বাহিনী ‘চিতা’-কে সিওয়ানে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, গত দশ দিন ধরে সিওয়ানে ক্যাম্প অফিস করে রয়েছেন সিবিআই অফিসাররা। সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জনের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছেন তাঁরা। আগামী ১৭ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার অগ্রগতি জানাবে সিবিআই। ইতিমধ্যেই নিহত সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জনের স্ত্রী আশা রঞ্জনের মামলার প্রেক্ষিতে বিহার সরকার, রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজপ্রতাপ যাদব এবং সিওয়ানের সাংসদ মহম্মদ সাহাবুদ্দিনকে নোটিশ পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দু’সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রাজ্য সরকারকে আশা রঞ্জনের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতেও বলা হয়েছে।
আদালতে নিজের আবেদনে আশা রঞ্জন জানিয়েছিলেন, স্বামীর হত্যায় জড়িতদের মদত দিচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারা। সেই তালিকায় লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ এবং প্রাক্তন সাংসদ সাহাবুদ্দিনের নাম রয়েছে। এফআইআরে অভিযুক্ত হিসেবে তাঁদের নাম রাখার আবেদন করেছেন আশা। হত্যায় অভিযুক্ত মহম্মদ কাইফের সঙ্গে একই ছবিতে দেখা গিয়েছিল দু’জনকে। সাহাবুদ্দিন ছাড়া পাওয়ার পরে ভাগলপুর থেকে সিওয়ান পর্যন্ত তাঁর সঙ্গী ছিল কাইফ। এ ছাড়াও, এ দিনই সাংবাদিক হত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত জাভেদের সঙ্গে লালু-তনয়, স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজপ্রতাপের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তা নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছেন তেজপ্রতাপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy