Advertisement
E-Paper

গাঁধী হত্যার তদন্ত? মত নেবে কোর্ট

বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘ন্যায়মিত্র (অ্যামিকাস কিউরি)’ হিসেবে অমরেন্দ্রকে যে সুপ্রিম কোর্টের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণই মেনে নিতে হবে তা নয়। তিনি স্বতন্ত্র ভাবে আর্জির সারবত্তা খতিয়ে দেখে, সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেবেন সুপ্রিম কোর্টকে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪৩

বম্বে হাইকোর্ট আর্জিটি খারিজ করেছে আগেই। আবেদনটির সমর্থনে তেমন প্রমাণও নেই বলে মনে করে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। তবু শীর্ষ আদালত আজ মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর হত্যা নিয়ে নতুন করে তদন্তের আর্জি খারিজ করেনি। বরং এ বিষয়ে শীর্ষ আদালতকে পরামর্শ দেওয়ার ভার দেওয়া হয়েছে অমরেন্দ্র সরনকে। বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘ন্যায়মিত্র (অ্যামিকাস কিউরি)’ হিসেবে অমরেন্দ্রকে যে সুপ্রিম কোর্টের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণই মেনে নিতে হবে তা নয়। তিনি স্বতন্ত্র ভাবে আর্জির সারবত্তা খতিয়ে দেখে, সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেবেন সুপ্রিম কোর্টকে।

আবেদনটি করেছেন পঙ্কজ ফডনিস নামে মুম্বইয়ের এক গবেষক এবং একটি দক্ষিণপন্থী সংগঠনের ট্রাস্টি অভিনব ভারত। তাঁদের দাবি, মোহনদাস হত্যার পিছনে ষড়যন্ত্রের সবটুকু প্রকাশ্যে আসেনি। এর পিছনে রয়েছে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। যা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। ইতিহাসে সত্য গোপনের সবচেয়ে বড় ঘটনাগুলির অন্যতম এটি। এই মামলা তাই ফের চালু করে পুনরায় তদন্ত হওয়া উচিত।

কীসের ভিত্তিতে তাঁদের এই দাবি?

পঙ্কজ-অভিনবদের বক্তব্য, ১৯৪৮-এর ৩০ জানুয়ারি গাঁধীকে ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক’ দূরত্ব থেকে গুলি করা হয়েছিল। তিনটি নয়, ছোড়া হয়েছিল মোট চারটি বুলেট। এবং ওই চতুর্থ বুলেটেই মৃত্যু হয় তাঁর। আবেদনকারীদের সন্দেহ, নারায়ণ আপ্টে ও নাথুরাম বিনায়ক গডসে ছাড়াও তৃতীয় কোনও আততায়ী ছিল ঘটনাস্থলে। চতুর্থ গুলিটি সে-ই ছুড়েছিল। ‘ফোর্স ১৩৬’ নামে ব্রিটিশদের একটি গুপ্ত বাহিনী জড়িত ছিল এই হত্যা ষড়যন্ত্রে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র পূর্বসুরি ছিল ‘অফিস অব স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেস’ (ওএসএস)। তারা গাঁধীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল বলেও দাবি পঙ্কজদের।

ষড়যন্ত্র নিয়ে শুধু নয়, গাঁধী হত্যার বিচার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আবেদনকারীরা। ভারতে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হওয়ার আগে পর্যন্ত অন্য ব্রিটিশ উপনিবেশগুলির মতো এ দেশেও সর্বোচ্চ বিচার-সংস্থা হিসেবে কাজ করত ‘প্রিভি কাউন্সিল’। ভারত স্বাধীন হওয়ার দু’বছর পরে ১৯৪৯ সালে প্রিভি কাউন্সিল জানিয়েছিল, ভবিষ্যতে এই হত্যা মামলাটি অবশ্যই সুপ্রিম কোর্টের পর্যালোচনা করে দেখা উচিত। প্রিভি কাউন্সিল বিলোপ করে করে দেশে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হয় ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি। কিন্তু তার মাস আড়াই আগেই ১৯৪৯-এর ১৫ নভেম্বর হিন্দু মহাসভার সদস্য নাথুরাম গডসে ও নারায়ণ আপ্টেকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ফলে মামলার ‘মেরিট’-এর দিকটি বিবেচিতই হয়নি সুপ্রিম কোর্টে। এর পরে ১৯৬৬ সালে যে তদন্ত কমিশন গড়া হয়, সেটিও ষড়যন্ত্রের পুরোটার উপরে আলো ফেলতে পারেনি।

বিচারপতি এস এ বোবড়ে এবং বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টে বেঞ্চে আজ পঙ্কজদের আবেদনটি নিয়ে মিনিট ১৫ শুনানি হয়। বিচারপতিরা তাঁদের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে জানান, বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে বহু আগেই। এখন আর আইন মোতাবেক কিছুই করার নেই। কিন্তু এর পরেই বেঞ্চ মন্তব্য করে, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আপনাদের আগ্রহের প্রশংসা করছি। তবে আবেদনটির সমর্থনে প্রাথমিক ভাবে কোনও প্রমাণও আমরা দেখতে পাচ্ছি না। কিন্তু আমরা এতে হস্তক্ষেপ করারও পক্ষপাতী নই।’’ এই কারণেই বেঞ্চ এর পরে বিষয়টি অমরেন্দ্রকে আদালতের পরামর্শদাতা নিয়োগ করে জানিয়ে দেয়, গাঁধী-হত্যা নিয়ে নতুন করে তদন্তের প্রয়োজন আছে কি না তা খতিয়ে দেখে স্বাধীন ভাবেই মত জানাবেন তিনি। আবেদনটি নিয়ে পরের শুনানি হবে ৩০ অক্টোবর।

Mahatma Gandhi Murder Supreme Court Amicus Curiae অ্যামিকাস কিউরি মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy