E-Paper

রায় বদলের জন্য শুনছি না মামলা: সুপ্রিম কোর্ট

রাষ্ট্রপতি প্রশ্নপত্র পাঠানোর পরে প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানির সিদ্ধান্ত নেয়। ১২ অগস্টের মধ্যে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রকে তাদের লিখিত বক্তব্য পেশ করতে বলা হয়েছিল।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৫ ০৭:০৬
সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট। — ফাইল চিত্র।

তামিলনাড়ু সরকারের মামলায় রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে ভাবে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতিকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল, তার আইনি ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সুপ্রিম কোর্টের কাছেই তাঁর প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সেই মামলায় কেরল সরকার এবং তামিলনাড়ু সরকারের যুক্তি খারিজ করে বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে শোনার প্রয়োজন আছে বলেই সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে এতে রায়ের হেরফের হবে না বলেই মৌখিক ভাবে জানান বিচারপতিরা।

রাষ্ট্রপতি প্রশ্নপত্র পাঠানোর পরে প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানির সিদ্ধান্ত নেয়। ১২ অগস্টের মধ্যে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রকে তাদের লিখিত বক্তব্য পেশ করতে বলা হয়েছিল। কেরল সরকার এবং তামিলনাড়ু সরকারের তরফে সওয়াল করা হয়েছিল যে, যেহেতু সুপ্রিম কোর্টই এ বিষয়ে রায় দিয়েছে, তার পরে আর নতুন করে এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নেই।

মঙ্গলবারও কেরলের তরফে কে কে বেণুগোপাল এবং তামিলনাড়ুর তরফে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সেই যুক্তিই পেশ করেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, রাষ্ট্রপতি যে সব প্রশ্ন তুলেছেন, তার বেশির ভাগের উত্তরই এপ্রিল মাসে তামিলনাড়ুর মামলার রায়ে দেওয়া আছে। তার পরে এ নিয়ে শুনানির কী প্রয়োজন! আইনি যুক্তি দেখিয়ে তাঁরা বলেন, যেহেতু কোনও রিভিউ পিটিশন বা কিউরেটিভ পিটিশন হয়নি, সুতরাং রায় পুনর্বিবেচনার অবকাশ এখানে নেই।

এই সূত্রেই বিচারপতিরা মৌখিক ভাবে বলেন যে, তাঁরা কোনও আপিল মামলা শুনছেন না। উপদেষ্টার এক্তিয়ারে মামলাটি শোনা হচ্ছে। তাঁরা আইনি মতামত জানাতে চান, তবে তাতে রায়ের হেরফের হবে না। প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘‘আমরা স্রেফ আইনি মতামত প্রকাশ করব, তামিলনাড়ু মামলার রায় নিয়ে কিছু বলব না।’’

বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘‘আমরা কোনও আপিল শুনছি না। উপদেষ্টার এক্তিয়ার থেকে শুনছি। সংবিধানের ১৪৩ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোনও রায় আইনের সঠিক ব্যাখ্যা করেছে কি না, তা নিয়ে মত প্রকাশ করা যেতে পারে। কিন্তু তাতে রায়টা বাতিল হয়ে যাবে না।’’

কেরলের তরফে বেণুগোপাল আরও একটা যুক্তি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতির তোলা প্রশ্নের উত্তর তামিলনাড়ু মামলা ছাড়াও পূর্ববর্তী একাধিক মামলার রায়ে দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, সেই রায়গুলো কি পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের রায় ছিল? প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগোপাল বলেন, দুই বা তিন সদস্যের বেঞ্চ ছিল। প্রধান বিচারপতি এ বার কিছুটা ভর্ৎসনার স্বরে বলেন, ‘‘আপনি কি সত্যি সিরিয়াস? রাষ্ট্রপতি কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ কেন সেটা শুনবে না? এতে ভুলটা কী আছে?’’ প্রসঙ্গত সোমবারই প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা, আইনজীবী হরিশ সালভে প্রমুখ মামলাটির গ্রহণযোগ্যতার সমর্থনে সওয়াল করেন। ভেঙ্কটরামানি বলেন, তামিলনাড়ু মামলার সময়েই বৃহত্তর বেঞ্চের আর্জি জানানো হয়েছিল। তা মানা হয়নি। মেহতা বলেন, আদালতের নিজস্ব ক্ষমতা রয়েছে তার নিজের রায় বাতিল করার। তার জন্য সব সময় আপিলের প্রয়োজন নেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Supreme Court of India Tamil Nadu Kerala

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy