Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Same Sex Marriage Verdict

সমলিঙ্গে বিবাহের পক্ষে রায় দিল না সুপ্রিম কোর্ট, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সংসদকেই, স্বীকৃতি সমকামী সম্পর্ককে

কেন্দ্রকে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে সমলিঙ্গ বিবাহের বিষয়ে অগ্রসর হতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। তারা সমলিঙ্গে বিয়েতে আইনি স্বীকৃতি দেয়নি। পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এ বিষয়ে একমত।

An image representing Same Sex Marriage

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:১০
Share: Save:

সমলিঙ্গে বিবাহের স্বীকৃতি দিল না সুপ্রিম কোর্ট। পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এ বিষয়ে একমত হয়েছে। তবে সমলিঙ্গ সম্পর্ককে তারা স্বীকৃতি দিয়েছে। এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষিত করার বিষয়টিতেও বিচারপতিরা সকলেই একমত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ব্যক্তিবিশেষের কোনও সম্পর্কে প্রবেশের অধিকার তাঁর যৌন চাহিদা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হতে পারে না।

কেন্দ্রকে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে সমলিঙ্গে বিবাহের বিষয়ে অগ্রসর হতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। সমলিঙ্গ যুগলের রেশন কার্ড, পেনশন, উত্তরাধিকার সমস্যা প্রভৃতি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ওই কমিটির মাধ্যমে। উল্লেখ্য, গত ৩ মে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, সমলিঙ্গ যুগলেরা প্রশাসনিক যে সব সমস্যার মুখোমুখি হন, সেগুলি সমাধানের জন্য মন্ত্রিপরিষদের এক জন সচিবের নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি গড়ার ভাবনা রয়েছে তাদের। সেই কমিটিকেই পদক্ষেপ করতে বলেছে শীর্ষ আদালত।

সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ জন বিচারপতি একটি বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। সমলিঙ্গ যুগল সন্তান দত্তক নিতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে তাঁরা সকলে একমত হতে পারেননি। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউল সমলিঙ্গ যুগলের সন্তান দত্তক নেওয়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। কিন্তু বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্ট, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি এস নরসিংহ এ বিষয়ে সম্মতি জানাননি।

সমকামী কিংবা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের যে কোনও মানুষকেই হেনস্থা বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি জানান, এই সম্প্রদায়ের কাউকে তাঁদের যৌন পরিচয় জানার জন্য থানায় তলব করা যাবে না। তাঁরা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এলে তাঁদের সেখানে জোর করে ফেরানো যাবে না। এই সম্প্রদায়ের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করার আগে পুলিশকে প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। সমলিঙ্গে বিবাহ নিয়ে রায় ঘোষণা করতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা প্রত্যেকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সম্পর্ককে স্বীকৃতি না দেওয়ার অর্থ এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়কে অসম্মান করা।’’ কেন্দ্রের অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘সমকাম শহুরে না নাগরিক জীবনে সীমাবদ্ধ কোনও বিষয় নয়।’’

শুধু বিষমকামী যুগলই সন্তানকে স্থিতিশীল জীবন দিতে পারেন, এই তত্ত্ব মানতে চাননি প্রধান বিচারপতি। তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেন বিচারপতি কউলও। তিনি বলেন, ‘‘প্রাচীন কাল থেকেই সমলিঙ্গ সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। শুধু যৌন ক্রিয়াকলাপের জন্য নয়। মানসিক, আবেগপূর্ণ সম্পর্কেরও প্রতিফলন ঘটে তাতে। তাই আমি এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে একমত।’’

বিচারপতি ভট্ট বলেন, ‘‘কোনও বিয়ের স্বীকৃতি আইন ছাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু বিয়ের বিষয়ে কোনও আইন বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে আসতে পারে না।’’ সমলিঙ্গ বিবাহ নিয়ে আইনি পরিকাঠামো গঠনের বিষয়টি আইনসভাকেও দেখতে বলেছেন তিনি। সমলিঙ্গ বিবাহে আইনি স্বীকৃতি দিতে হলে বিশেষ বিবাহ আইনে পরিবর্তন আনতে হবে। যা বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে সম্ভব নয়। তাই আইনসভাকেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Same Sex Marriage Same Sex Wedding Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE