Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দু’সপ্তাহের মধ্যে বিলকিসকে দিতেই হবে ক্ষতিপূরণ, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

বিলকিস মামলায় সাজা শুনিয়েছিলেন যে বিচারপতি, সেই বিজয়া তাহিলরামানির বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করার জন্য সিবিআইকে অনুমতিও দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি গগৈ।

গুজরাত সরকারের হয়ে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলেন, দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিলকিসের ক্ষতিপূরণ, চাকরি ও বাসস্থানের বন্দোবস্ত হবে।

গুজরাত সরকারের হয়ে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলেন, দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিলকিসের ক্ষতিপূরণ, চাকরি ও বাসস্থানের বন্দোবস্ত হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও গুজরাত দাঙ্গায় গণধর্ষণের শিকার বিলকিস বানোর ক্ষতিপূরণ দেয়নি গুজরাত সরকার। পাঁচ মাস কেটে গিয়েছে। আজ ওই নির্দেশের পর্যালোচনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি পেশ করার ইচ্ছা প্রকাশ করল তারা। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ অবশ্য জানিয়েছে, ওই নির্দেশের কোনও পর্যালোচনা হবে না। দু’সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘চাইলে আপনারা দু’সপ্তাহের আগেই কাজটা করতে পারেন।’’ গুজরাত সরকারের হয়ে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলেন, দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিলকিসের ক্ষতিপূরণ, চাকরি ও বাসস্থানের বন্দোবস্ত হবে।

অন্য দিকে বিলকিস মামলায় সাজা শুনিয়েছিলেন যে বিচারপতি, সেই বিজয়া তাহিলরামানির বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করার জন্য সিবিআইকে অনুমতিও দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি গগৈ।

২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গায় গণধর্ষিতা হন বিলকিস। চোখের সামনে পরিবারের ১৪ জন সদস্যকে খুন হতে দেখেছিলেন তিনি। পাঁচ মাসে আগে, গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট সেই বিলকিসকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, চাকরি ও বাসস্থানের বন্দোবস্ত করে দেওয়ার জন্য গুজরাত সরকারকে নির্দেশ দেয়। তবে ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন ছাড়াও আরও একটি কারণে বিলকিস মামলা নতুন করে খবরে ফিরে এসেছে। ২০১৭-য় বম্বে হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি বিজয়া তাহিলরামানি বিলকিস মামলায় ১১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন। নিম্ন আদালত পুলিশ অফিসার, চিকিৎসক-সহ ঘটনায় জড়িত সাতজনকে ছাড় দিলেও বিচারপতি তাহিলরামানি তা খারিজ করে দেন। আজ তাঁর বিরুদ্ধেই সিবিআই তদন্তে অনুমোদন দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

বিলকিস বানো মামলায় ১১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি বিজয়া তাহিলারামানি। সোমবার আর্থিক অনিয়মের মামলায় তদন্তের মুখে পড়েছেন তিনিই। ছবি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেওয়া।

সম্প্রতি বিচারপতি তাহিলরামানিকে মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সরিয়ে মেঘালয় হাইকোর্টে বদলি করা হলে তিনি পদত্যাগ করেন। বদলির আগে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা আইবি ওই বিচারপতির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের রিপোর্ট দিয়েছিল। আইবি-র রিপোর্টে চেন্নাইয়ে তাঁর দু’টি ফ্ল্যাট কেনায় আর্থিক অনিয়ম মিলেছিল। সে কারণে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম তাঁকে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে সূত্রের খবর।

বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি আকিল কুরেশিকেও সম্প্রতি ত্রিপুরা হাইকোর্টে বদলি করা হয়েছে। তাঁকে কলেজিয়াম মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি করতে চাইলেও মোদী সরকারের আইন মন্ত্রক তাতে আপত্তি তোলে। বিচারপতি কুরেশি গুজরাত হাইকোর্টের বিচারপতি থাকার সময় সোহরাবুদ্দিন শেখ ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় অমিত শাহকে দু’দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছিলেন। আইন মন্ত্রক অবশ্য কলেজিয়ামের কাছে বিচারপতি কুরেশির কাছে অন্য নানা কারণে আপত্তি জানায়।

প্রশ্ন উঠেছে, কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অন্য অভিযোগ মিললে প্রধান বিচারপতি তাঁকে ইমপিচমেন্টের সুপারিশ করতে পারেন। তা না করে বিচারপতিদের উত্তর-পূর্বে বদলি করা হচ্ছে কেন! বিরোধী তথা আইনজীবী শিবির এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও ঘরো আলোচনায় এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই দেখছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE