আইন নেই। তাই, কোনও ভাবেই আটকে রাখা যাবে না নাবালক অপরাধীকে। সে তার অপরাধের জন্য আইন মোতাবেক শাস্তি পেয়েছে। কিন্তু, সেই শাস্তি পর্যাপ্ত নয় বলেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল দিল্লি মহিলা কমিশন। অথচ, আদালত আইনসভার উপরেই সমস্ত দায় চাপিয়ে তাদের আবেদন নাকচ করে দিল। জানিয়ে দিল, আইন না থাকার কারণে কারও ব্যক্তি স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে আইনসভার অনুমোদন প্রয়োজন।
নির্ভয়া ধর্ষণ-খুনে দোষী নাবালকের সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রবিবার তার মুক্তি মিলেছে। কিন্তু, শাস্তির মেয়াদ শেষ হলেও তার মুক্তি আটকাতে প্রথমে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়। সেখানে মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর শনিবার গভীর রাতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বাড়িতে যান দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ার পার্সন স্বাতী মালিওয়াল। রাত প্রায় দুটো নাগাদ জানা যায়, সোমবার ওই বিষয়ে শুনানি হবে। এ দিন সেখানেও আবেদন খারিজ হয়ে যায়। নিম্ন আদালতের মতো সুপ্রিম কোর্টও জানিয়ে দিল তিন বছরের সর্বোচ্চ সাজা খাটা হয়ে গিয়েছে ওই নাবালক ধর্ষকের। আইন মাফিকই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ দিন স্বাতী জানান, মহিলাদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিল অনেক হয়েছে, এ বার মশাল জ্বালাতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টে আবেদন খারিজ হওয়ায় হতাশ নির্ভয়ার পরিবার। তাঁর মা আশা দেবী জানান, তিনি ওই দোষীর ফাঁসি চান। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘এ বার আইন বদলের জন্য লড়তে হবে।’’
আধ ঘণ্টা ধরে চলে এ দিনের শুনানি। বিচারপতি এ কে গয়াল এবং ইউ ইউ ললিতের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয়। আবেদনে জানান হয়, ওই নাবালকের আরও সংশোধনের প্রয়োজন। তাই এখনই যাতে তার মুক্তি না মেলে, আদালতের কাছে সেই আবেদন জানানো হয়। তিন বছরের মেয়াদ শেষ হলেও আরও বছর দুই তার সংশোধনের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী কারও ব্যক্তি স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া যায় নি। জুভেনাইল আইন মোতাবেক ইতিমধ্যেই সর্বোচ্চ সাজা খাটা হয়ে গিয়েছে ওই অপরাধীর। বর্তমান জুভেনাইল আইনে এর থেকে বেশি দিন কোনও নাবালক অপরাধীকে আটকে রাখার ক্ষমতা নেই আদালতের। এ বিষয় শীর্ষ আদালত হস্তক্ষেপও করতে পারে না।
তিন বছর আগে দিল্লিতে বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা হল থেকে বাড়ি ফেরার পথে চলন্ত বাসে ধর্ষিত হন নির্ভয়া। জানা যায়, ধর্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছিল ওই নাবালকই। ধর্ষণের পর খুঁচিয়ে বের করে এনেছিল তাঁর শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy