ভারত কোনও ধর্মশালা নয়। গোটা বিশ্বের উদ্বাস্তুদের এখানে আশ্রয় দেওয়া যায় না। এক মামলার শুনানি চলাকালীন মৌখিক পর্যবেক্ষণে এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শ্রীলঙ্কার তামিল নাগরিককে আটক করার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে মামলা হয়েছিল। ওই মামলা খারিজ করার সময় এই পর্যবেক্ষণ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চ।
আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’ অনুসারে, বিচারপতি দত্ত বলেন, “ভারত কি গোটা বিশ্বের উদ্বাস্তুদের জন্য আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে? আমাদের নিজেদেরই ১৪০ কোটি (জনসংখ্যা) রয়েছে। এটা কোনও ধর্মশালা নয় যে আমরা গোটা বিশ্বের বিদেশি নাগরিকদের জন্য ব্যবস্থা করব।” এই মামলার ক্ষেত্রে আবেদনকারী শ্রীলঙ্কার তামিল নাগরিকের বিরুদ্ধে ইউএপিএ মামলায় অভিযোগ রয়েছে। মাদ্রাজ হাই কোর্ট এর আগে জানিয়েছিল, সাত বছরের কারাদণ্ড শেষ হওয়ার পরে অভিযুক্তকে অবিলম্বে ভারত ছেড়ে চলে যেতে হবে। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শ্রীলঙ্কার ওই নাগরিক। তাঁর আইনজীবীর দাবি, অভিযুক্ত ভিসা নিয়েই এ দেশে এসেছিলেন। নিজের দেশে তাঁর প্রাণ সংশয় রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন।
অভিযুক্ত যে প্রায় তিন বছর ধরে আটক রয়েছেন, সে কথাও তুলে ধরেন আইনজীবী। তখন বিচারপতি দত্ত জানতে চান, ওই ব্যক্তির ভারতে বসবাসের কী অধিকার রয়েছে? মামলাকারীর আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল একজন উদ্বাস্তু এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরাও ভারতে বসবাস করেন। তবে সেই যুক্তি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেনি আদালত। বিচারপতি দত্ত স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যাঁরা এ দেশের নাগরিক, সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে একমাত্র তাঁদেরই ভারতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের মৌলিক অধিকার রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মামলাকারীর প্রাণের ঝুঁকি সংক্রান্ত আর্জিও টেকেনি আদালত। ওই ব্যক্তি নিজের দেশে ফিরে গেলে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা শুনে বিচারপতি দত্ত বলেন, “তা হলে অন্য কোনও দেশে যান!” সম্প্রতি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের ভারত থেকে বিতাড়ন ঠেকাতে একটি মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। ওই মামলাটিতেও কোনও হস্তক্ষেপ করতে চায়নি শীর্ষ আদালত।