Advertisement
E-Paper

সুপ্রিম কোর্টেও ধাক্কা, রথযাত্রায় ছাড় পেল না বিজেপি

সুপ্রিম কোর্টেও রাজ্যে রথযাত্রার অনুমতি পেল না বিজেপি। রথযাত্রার জেরে প্রাণহানি, সাম্প্রদায়িক হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে— রাজ্য সরকারের এই আশঙ্কায় আজ সিলমোহর দিল শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চের মতে, ‘‘রাজ্যের আশঙ্কা অমূলক নয়।’’ 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩০

সুপ্রিম কোর্টেও রাজ্যে রথযাত্রার অনুমতি পেল না বিজেপি। রথযাত্রার জেরে প্রাণহানি, সাম্প্রদায়িক হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে— রাজ্য সরকারের এই আশঙ্কায় আজ সিলমোহর দিল শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চের মতে, ‘‘রাজ্যের আশঙ্কা অমূলক নয়।’’

রাজ্য রথযাত্রায় না বলায় প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। পরে মামলা আসে সুপ্রিম কোর্টে। আজ বিজেপির আইনজীবীরা কিছু বলার আগেই প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি হলে এই মামলা শুনতেনই না। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমাদের কি পুলিশের কাজ করতে হবে?’’

সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের রায় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। এটা আদালতের বিষয়, আর কিছু বলতে পারছি না।’’

শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, বিজেপি-কে রথযাত্রার অনুমতি পেতে হলে রাজ্যের আশঙ্কা দূর করতে হবে। তারা চাইলে রথযাত্রার নতুন কর্মসূচি তৈরি করে প্রস্তাব দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে রাজ্যকে তা দ্রুত খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। কারণ, ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক ও অন্য বোর্ডের পরীক্ষার জন্য লাউডস্পিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: অর্ধেক দামে উন্নত রাফাল ফ্রান্সকে! খবর নিয়ে তরজা

রথযাত্রার ছাড়পত্র আদায় করতে বিজেপির আইনজীবী মুকুল রোহতগি যুক্তি দেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, অসম-সহ ছ’টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সভায় যোগ দেবেন। প্রধান বিচারপতি তাঁকে স্পষ্ট বলে দেন, ‘‘এই সব নাম আমাদের প্রভাবিত করতে পারবে না।’’

এর পরে রাজ্যে রথযাত্রা করা আপাতত সম্ভব হবে না বলেই মনে করছে বিজেপি। তার বদলে রথযাত্রার অঙ্গ হিসেবে ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে যে বড় জনসভার কথা ভাবা হয়েছিল, শুধু সেগুলি করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনা করে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বুধবারই কলকাতা যাচ্ছেন। প্রাথমিক ভাবনা হল, লোকসভা কেন্দ্রগুলির আগে সব বিধানসভায় জনসভা হবে।

রাজ্য আজও কোর্টে বলেছে, জনসভায় তাদের আপত্তি নেই। তবে সভার স্থান-কাল ও কারা বক্তৃতা করবেন, তা জানাতে হবে। কিন্তু বিজেপি রাজি হচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, বিজেপি সময়মতো সব তথ্য দিলে রাজ্য জনসভার অনুমতি দেবে।

কিন্তু রথযাত্রায় অনড় বিজেপি গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিল, ৪০ দিনের যাত্রা তারা ২০ দিনে নামিয়ে আনতে রাজি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ৮ জানুয়ারি নতুন কর্মসূচি জানিয়ে নবান্নের অনুমতি চাওয়া হয়। সোমবার স্বরাষ্ট্র দফতর চিঠি লিখে জানায়, চারটি রথ রাজ্যের চার দিকে ২০ দিন ধরে চললে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা, সাম্প্রদায়িক অশান্তি তৈরি হতে পারে। কারণ, যে সব জায়গায় অতীতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়েছে, সেখান দিয়ে রথ নিয়ে যেতে চাইছে বিজেপি।

আজ রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি যুক্তি দেন, ৩১টি পুলিশ-জেলা থেকে নতুন করে গোয়েন্দা রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তাতে অশান্তির আশঙ্কা কথা বলা হয়েছে। রোহতগি প্রশ্ন ছোড়েন, রাজ্য কী ভাবে ‘রাজনৈতিক’ কর্মসূচিকে ‘সাম্প্রদায়িক’ বলতে পারে? রাজ্যের চিঠিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল, হিন্দু বাহিনীর লোকেরা যাত্রায় যোগ দিতে পারেন বলে আপত্তি তোলা হয়েছে। এগুলো কি নিষিদ্ধ সংগঠন? তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সংবিধান প্রদত্ত এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করছে রাজ্য। সিঙ্ঘভি পাল্টা বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু বিজেপি-কে রাজ্যের আশঙ্কার দিক দেখতেই হবে।

Ratjyatra BJP Supreme Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy