বিভিন্ন রাজ্যে পাশ হওয়া ধর্মান্তরণ বিরোধী আইন নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই নিজেদের বক্তব্য জানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত আইনগুলির ব্যবহারে স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে কিনা, সে ব্যাপারে রাজ্যগুলির বক্তব্য জানার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আজ জানিয়েছে, বিতর্কিত আইনগুলিতে স্থগিতাদেশের আর্জি নিয়ে ছয় সপ্তাহ পর বিবেচনা করা হবে।
উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, কর্নাটক, ছত্তীসগঢ়, হিমাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলি নিজেদের মতো করে ধর্মান্তরণ বিরোধী আইন তৈরি করেছে। ধর্মীয় স্বাধীনতার নাম দিয়ে আইনগুলি চালু করা হলেও অভিযোগ উঠেছে, একে ব্যবহার করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে হেনস্থা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ভিন্ন ধর্মে বিবাহ আটকাতে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উৎসব বন্ধ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে এই সব আইন। জামায়তে উলেমা-ই-হিন্দ এবং সিটিজ়েনস ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস-এর মতো সংগঠনগুলি এই সব আইনের বিরোধিতা করে মামলা করেছে সুপ্রিম কোর্টে। সিটিজ়েনস ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস-এর আইনজীবী চান্দের উদয় সিংহ আজ এই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি জানান। তিনি বলেন, রাজ্যগুলি সংশোধনী এনে তাদের আইনকে আরও কঠোর করে তুলছে।
এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ আদালত ধর্মান্তরণ বিরোধী আইন নিয়ে জানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে নোটিস পাঠিয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছয় সপ্তাহ পর ফের এই মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্যগুলির বক্তব্য জানার পর তারা বিবেচনা করবেন এই আইনগুলির ব্যবহার স্থগিত করে দেওয়া হবে কিনা। পাশাপাশি, বিতর্কিত ধর্মান্তরণ বিরোধী আইন নিয়ে বিভিন্ন হাই কোর্টে ঝুলে থাকা মামলাগুলিকেও নিজেদের কাছে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এ ব্যাপারে আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিংহের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন বিচারপতিরা।
সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলাকালীন আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় বলেন, জবরদস্তি ও প্রতারণার মাধ্যমে ধর্ম পরিবর্তন নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য তিনি একটি আবেদন করেছেন। প্রধান বিচারপতি গাভাই তখন মন্তব্য করেন, ‘‘প্রতারণা করা হচ্ছে কি না, সেটা কে খুঁজে বার করবে?’’ উপাধ্যায়ের আর্জি নিয়ে আইনজীবী সিংহ বলেন, ‘‘আমরা এখানে আইনের শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার কথা বলছি। আর তিনি আইন তৈরির প্রস্তাব দিচ্ছেন।’’ এরপর প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, উপাধ্যায়ের আর্জি বর্তমান মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হবে না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)