Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিচারপতি কারনানকে ছ’মাসের কারাদণ্ড দিল সুপ্রিম কোর্ট

সি এস কারনান নতুন ইতিহাস তৈরি হল সুপ্রিম কোর্টে। দেশের শীর্ষ আদালত আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিল। তাঁর অপরাধ, তিনি শীর্ষ আদালতের অবমাননা করেছেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০৪:২১
Share: Save:

সি এস কারনান নতুন ইতিহাস তৈরি হল সুপ্রিম কোর্টে।

দেশের শীর্ষ আদালত আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিল। তাঁর অপরাধ, তিনি শীর্ষ আদালতের অবমাননা করেছেন। এই প্রথম সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে এই ধরনের নির্দেশ দিল।

বিচারপতি কারনানকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাঁকে জেলে পোরার জন্য পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি-কে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের আগেই, আজ সকালে কলকাতা থেকে চেন্নাই চলে যান কারনান। প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ এখানেই থামেনি। কয়েক দিন ধরে কারনানের আচরণে ক্ষুব্ধ বিচারপতিরা নির্দেশ দেন, এই রায়ের পরে কারনান কোনও বয়ান বা নির্দেশ দিলে সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশ করা যাবে না। সংবাদমাধ্যমের উপরে এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অবশ্য আপত্তি আছে আইনজীবীদের একাংশ।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিচারপতি কারনান ২০ জন বিচারপতিকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তোলেন। এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির বেঞ্চ নিজে থেকেই আদালত অবমাননার মামলা শুরু করে। আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও প্রথমে হাজির হননি তিনি। পরে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর ৩১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের সামনে হাজির হয়েছিলেন। তাঁর আগে আর কোনও হাইকোর্টের বিচারপতিকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে হাজির হতে হয়নি।

আরও পড়ুন:শুধু তুলসীপাতা দিয়েছি: নয়না

এরপর অবশ্য আর আদালতের সামনে হাজির হননি তিনি। উল্টে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদেরই তাঁর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ জারি করেন। গত কাল আরও এক ধাপ এগিয়ে বিচারপতি কারনান তফসিলি জাতি-উপজাতি নির্যাতন আইনে প্রধান বিচারপতি খেহর-সহ সুপ্রিম কোর্টের আট জন বিচারপতিকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকার জরিমানাও করেন।

আগামী ১১ জুন বিচারপতি কারনানের অবসর নেওয়ার কথা। অবসরের পরেও আরও পাঁচ মাস কারনানকে জেলে থাকতে হবে। আজ শুনানির সময়ে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল মনীন্দ্র সিংহ. কে কে বেণুগোপাল, রূপেন্দ্র সিংহ সুরির মতো প্রবীণ আইনজীবীরা মেনে নেন, কারনান যা করছেন তা আদালতের চূড়ান্ত অবমাননা। এর কড়া শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু শাস্তির নির্দেশ এক মাস পরে দেওয়া উচিত হবে কি না, তা নিয়ে আইনজীবী বেণুগোপাল সংশয়ে ছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, কোনও কর্মরত বিচারপতির কারাদণ্ড হলে তাতে বিচারবিভাগের গায়েই কলঙ্ক লাগবে। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, আদালতের অবমাননার ক্ষেত্রে দোষী সাধারণ মানুষ না বিচারপতি, তা বিচার করা হবে না। অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে।

আইনজীবীরা মনে করছেন, কারনানের কাজকর্ম কলেজিয়াম প্রথায় বিচারপতি নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামই কারনানকে নিয়োগ করেছিল। তাই তাঁর বিরুদ্ধে এত কড়া পদক্ষেপ করেছে শীর্ষ আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Karnan Advocate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE