আবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নিশানায় মেঘালয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ইউএসটিএম)। তাঁর অভিযোগ, অসমের অস্বাভাবিক বন্যার জন্য দায়ী ওই বিশ্ববিদ্যালয়। বনভূমির জমি ‘দখল’ করে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হয়। এ বার সুপ্রিম কোর্টের এক কমিটির রোষের মুখেও পড়ল তারা। ওই কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে, কেন্দ্রের অনুমোদন ছাড়াই ২৫ হেক্টর বনভূমি দখল করে ওই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে।
মেঘালয়ের ইউএসটিএম নিয়ে অতীতে বার বার অভিযোগ করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ওই বিশ্ববিদ্যালয় অবৈধ ভাবে তৈরি হয়েছে। বনভূমি কেটে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছেন কর্তৃপক্ষ। এ বার হিমন্তের অভিযোগকে মান্যতা দিল সুপ্রিম কোর্টের কমিটি। তাদের সুপারিশ, ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৫০ কোটি টাকার জরিমানা করা হোক!
শুধু তা-ই নয়, শীর্ষ আদালতের কমিটির পেশ করা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইউএসটিএমের অধিকৃত জমি অবিলম্বে ছেড়ে দিতে হবে। পাশাপাশি, যে পরিমাণ বনভূমি ধ্বংস হয়েছে, তা আবার পুনরায় তৈরি করে দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। একই সঙ্গে ‘অবৈধ নির্মাণ’ ভেঙে ফেলার সুপারিশও করেছে সুপ্রিম কোর্টের কমিটি।
আরও পড়ুন:
২০০৮ সালে মেঘালয়ের রি-ভোই এলাকায় তৈরি হয় মেঘালয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সুপ্রিম কোর্টের ওই কমিটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়কে কাঠগড়ায় তোলেনি, তাদের নিশানায় রয়েছে রি-ভোই এলাকার অবৈধ খননও। কমিটির সুপারিশ অবিলম্বে ওই খনন বন্ধ করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন খতিয়ে দেখার পর অনুমতিক্রমে ওই এলাকায় খননকাজ করা যাবে।
গুয়াহাটিতে হড়পা বানের জন্য মেঘালয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণকে দায়ী করেছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ বনভূমি কেটে অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করেছেন। শুধু তা-ই অবৈধভাবে পাহাড় কাটাও হয়েছে। যদিও এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, রি-ভোই এবং মেঘালয়ের পূর্ব খাসি জেলার পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। মামলাকারীর আবেদন ছিল, পরিবেশ বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করুক শীর্ষ আদালত। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য আদালত তাদের মনোনীত কমিটির উপর দায়িত্ব দেয়। এ বার সেই কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা করল।
রিপোর্টে বলা হয়, কমিটির নজরে আসে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক ২০১৭ সালে মেঘালয় সরকারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল। কেন্দ্রকে জানানো হয় মেঘালয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যে জমিতে তৈরি হয়েছে তার ১৩ হেক্টর বনভূমির অংশ নয়। তবে পরে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের স্থানীয় অফিস খতিয়ে দেখে মেঘালয় সরকারের দাবি অসত্য।