Advertisement
E-Paper

তেলে আবার শুল্ক, তোপের মুখে জেটলি

বিশ্ব বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গত কাল মধ্যরাতেই গোটা দেশে দাম কমেছিল জ্বালানি তেলের। কিন্তু তার পরেই পেট্রোল-ডিজেলের উপরে আরও এক দফা উৎপাদন শুল্ক চাপিয়ে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। যা নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। তর্কের জল গড়াল পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:২৬

বিশ্ব বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গত কাল মধ্যরাতেই গোটা দেশে দাম কমেছিল জ্বালানি তেলের। কিন্তু তার পরেই পেট্রোল-ডিজেলের উপরে আরও এক দফা উৎপাদন শুল্ক চাপিয়ে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। যা নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। তর্কের জল গড়াল পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত।

গত দেড় মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার তেলের উৎপাদন শুল্ক বাড়াল কেন্দ্র। বাড়তি শুল্ক বসিয়ে অতিরিক্ত ২,৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় সুনিশ্চিত করতে পারলেও আজ এ নিয়ে রাজ্যসভায় বিরোধীদের সম্মিলিত আক্রমণের মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। পাল্টা জবাবে জেটলি দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলিও একই ভাবে ফায়দা তুলেছে। তেল সংস্থাগুলি দাম কমালেও রাজ্যের ভ্যাট বা বিক্রয় কর বাড়িয়ে তেলের দাম একই রাখা হয়েছে।

জেটলির মুখে এই সমালোচনা শুনেই রাজ্যসভা থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যান তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে। অমিতবাবু তাঁকে জানিয়ে দেন, গত জানুয়ারির পর থেকে রাজ্য আর পেট্রোল-ডিজেলের উপরে কর বাড়ায়নি। পেট্রোলের উপর করের হার ২৫ শতাংশ এবং ডিজেলে করের হার ১৭ শতাংশে বাঁধা রয়েছে। জেটলি এর পর যুক্তি দেন, পশ্চিমবঙ্গে এমনিতেই করের হার যথেষ্ট বেশি। ডেরেক তখন বলেন, রাজ্যসভায় ভুল তথ্য দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।

বস্তুত, আজ কংগ্রেস-সিপিএম থেকে শুরু করে সব দলই অভিযোগ তুলেছে, অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু ১১৫ ডলার থেকে ৩৫ ডলারে নেমে এলেও মোদী সরকার ১৭ শতাংশ উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের উপর বোঝা চাপাচ্ছে। বিশেষত ডিজেলের দাম কমলে মূল্যবৃদ্ধিও কমতো বলে বিরোধীরা অভিযোগ তোলেন।

জবাবে জেটলি বলেন, এই বাড়তি আয়ের ৪২ শতাংশ রাজ্যগুলিও পাবে। যে বাড়তি টাকা আয় হবে, তার বেশির ভাগটাই জাতীয় সড়ক ও গ্রামীণ সড়ক তৈরিতে ব্যয় হবে। বেশি দামে অশোধিত তেল কিনে কম দামে তেল বেচতে বাধ্য হওয়ার ফলে তেল সংস্থাগুলির যে ক্ষতি হয়েছিল, তা-ও পূরণ হবে। সর্বোপরি, এই বাড়তি আয় হচ্ছে বলেই পরিকল্পনা খাতে ব্যয় ছাঁটাই না করে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাবে বলে জানান জেটলি। তাঁর অভিযোগ, ইউপিএ আমলে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন খাতে ব্যয় ছাঁটাই করে ও বিভিন্ন মন্ত্রকের বরাদ্দ কমিয়েই রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হতো। অর্থমন্ত্রীর এই জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে বামেরা ওয়াক আউট করেন। সীতারাম ইয়েচুরি অভিযোগ তোলেন, ‘‘সরকার এক দিকে কর্পোরেট কর কমাচ্ছে, অথচ সাধারণ মানুষের উপর বোঝা চাপাচ্ছে।’’

বিরোধীদের বক্তব্য, বারবার উৎপাদন শুল্ক বাড়ানোর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে যে পরিমাণে তেলের দাম কমছে, দেশের বাজারে তত কমছে না। ভারত বিশ্ব বাজার থেকে যে অশোধিত তেল কেনে, তার দাম দাঁড়িয়েছে ১১ বছরে সর্বনিম্ন। অন্য দিকে ডলারের সাপেক্ষে কমেছে টাকার দর।

এ সবের জেরে অন্তত ২ টাকা করে দাম কমানোর কথা হলেও কেন্দ্র যে ফের উৎপাদন শুল্ক বাড়াতে পারে, তা আঁচ করেছিল তেল সংস্থাগুলি। গত কাল তাই পেট্রোলের দাম লিটার-পিছু মাত্র ৪০ পয়সা কমিয়েছিল তারা। ডিজেলের দাম কমেছে মাত্র
৪৬ পয়সা।

Arun Jaitley petroleum products tax
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy