শবরীমালা মন্দিরে শ্রীকোভিল (গর্ভগৃহ) থেকে সোনা উধাওয়ের ঘটনার তদন্তে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিল ত্রাবাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ড (টিডিবি)-এর তদন্তকারী দল। তাতে ‘সন্দেহভাজন’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে এক শিল্পপতির নাম। অভিযোগ, আয়ের স্থায়ী উৎস না থাকা সত্ত্বেও মন্দির কর্তৃপক্ষকে সোনা দান করেছিলেন তিনি। কী ভাবে তা সম্ভব, তা নিয়ে কৌতূহলী শবরীমালা মন্দির পরিচালনাকারী বোর্ড। তারা চায়, এর যথাযথ তদন্ত হোক।
টিডিবি তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে কেরল হাই কোর্টে। রিপোর্টে নাম করা হয়েছে উন্নিকৃষ্ণন পট্টি নামে বেঙ্গালুরুর এক শিল্পপতির। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ওই শিল্পপতির আয়কর রিটার্নের তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাঁর চ্যাটার্ড অ্যাকাউনট্যান্টের মাধ্যমে। ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে কেরল পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-ও একমত হয়েছে। সিট জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট শিল্পপতির স্থায়ী আয়ের উৎস নেই। তৎসত্ত্বেও কী ভাবে এত দামি অলঙ্কার দান করেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। জানা যাচ্ছে, ২০২৫-’২৬ অর্থবর্ষে কামাক্ষী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা ঢুকেছিল পট্টির অ্যাকাউন্টে। ওই অর্থ দেওয়ার কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয় সামাজিক কাজে সাহায্য। এই প্রেক্ষিতে ওই ব্যবসায়ীর কর্মকাণ্ডের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। বস্তুত, বেশ কয়েক বার শবরীমালা মন্দিরে বেশ কিছু জিনিস দান করেছেন ওই ব্যবসায়ী।
প্রাথমিক তদন্তের পরে টিডিবি এ-ও জানিয়েছে, শবরীমালার গর্ভগৃহ সাজাতে সোনা পট্টির হাত থেকে এলেও আদতে তা দিয়েছিলেন বেলারির এক শিল্পপতি। তাঁর নাম গোবর্ধনন। কিন্তু তিনি নিজে দান না করে কেন পট্টির হাত দিয়ে মন্দিরে সোনা দিয়েছিলেন, সেটাও দেখার প্রয়োজন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন:
শবরীমালার গর্ভগৃহ থেকে সোনা ‘উধাও’ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে শোরগোল চলছে কেরলে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ২০১৯ সালে বিগ্রহের ওজন ছিল ৪২ কেজি ৮০০ গ্রাম। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বিগ্রহের ওজন ৩৮ কেজি ২৫৮ গ্রাম। কী ভাবে বিগ্রহের ওজন হ্রাস পেল, তা জানতে চেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ১৯৯৯ সালে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৯ সালে ত্রাবাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ড (টিডিবি) বিগ্রহের মেরামতের ব্যবস্থা করে। এবং তা করা হয় স্পেশ্যাল কমিশনার বা আদালতের অনুমোদন ছাড়াই। চেন্নাইয়ের একটি সংস্থাকে দিয়ে সেই কাজ করানো হয়। তখনই জানা যায়, বিগ্রহের ওজন হ্রাস পেয়েছে।