বই কিনতে অহমদাবাদ শহরে গিয়েছিল সে। আর সেখানেই চোখের সামনে দেখতে হয়েছে বিমান দুর্ঘটনার সেই মুহূর্ত। শুধু চোখের দেখা হলেও হয়তো সব ঠিকই থাকত! কিন্তু দুর্ঘটনার মুহূর্তের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করা এবং তা সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় যে বিপাকে পড়তে হয়েছে, তাতে খানিক আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল গোটা পরিবার। পুলিশ তলব করেছিল ওই কিশোরকে। ডেকেছিল অহমদাবাদের অপরাধদমন শাখাও। তদন্তকারীদের জেরার পর অবশেষে গুজরাতের আরাবল্লী জেলার বাড়িতে ফিরল আরিয়ান আসারি নামে ওই কিশোর।
গত বৃহস্পতিবার অহমদাবাদের মেঘানিনগরে বই কিনতে এসেছিল আরিয়ান। আর সেই দিনই বিমান দুর্ঘটনা ঘটে সেখানে। কিশোর বলে, ‘‘কয়েক দিন আগেই একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শেষ হয়েছিল। পাশ করে দ্বাদশ শ্রেণিতে উঠেছিলাম। নতুন ক্লাসের বই কিনতে অহমদাবাদে এসেছিলাম। ওখানে বাবার একটা ভাড়াবাড়ি আছে। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই বাড়িতেই উঠেছিলাম।’’ আরিয়ান জানায়, ভাড়াবাড়ির ছাদে উঠে পাশে বিমানবন্দরে বিমানের ওঠানামা ক্যামেরাবন্দি করছিল সে। তা করতে গিয়েই দুর্ঘটনার মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছে সে।
আরিয়ানের তোলা ভিডিয়োই প্রথম সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় শনিবার তাকে ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। পরে তাকে তলব করে অপরাধদমন শাখা। গুজব রটেছিল যে, আরিয়ানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এতে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল কিশোরের পরিবার। পরে অবশ্য পুলিশ জানায়, কিশোরের গ্রেফতারির খবর একেবারেই সত্য নয়। প্রথম প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবেই তার বয়ান সংগ্রহ করা হয়েছে শুধু।
আরিয়ান জানায়, এত কাছ থেকে বিমানের ওঠানামা কখনই দেখেনি সে। তাই বিমানবন্দরের ভিডিয়ো করছিল। কিশোরের কথায়, ‘‘বিমানটি ওড়ার পর নীচের দিকে নামছিল। আমি বুঝতে পারিনি কেন হচ্ছে সেটা। বুঝতে বুঝতেই আমার চোখের সামনে সেটি ভেঙে পড়ে এবং বিস্ফোরণ হয়। আমি ভীষণই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম।’’
আরিয়ানের বাবা প্রাক্তন সেনা জওয়ান। এখন তিনি অহমদাবাদ মেট্রোয় নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করেন। সেখানে মেঘানিনগরের ভাড়াবাড়িতে থাকেন তিনি। আরিয়ান সেই বাড়িতেই উঠেছিল। ওই বাড়ির মালিক কৈলাসবা সংবাদমাধ্যম এন়ডিটিভি-কে বলেন, ‘‘ছেলেটা প্রথম বার অহমদাবাদে এসেছিল। আর এসেই চোখের সামনে ওই ঘটনা দেখল। ভিডিয়োটা তোলার পর প্রথমে সে বাবাকেই পাঠিয়েছিল। তার পরেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।’’