নিজের দলের বহিষ্কৃত নেতার কাছ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেলেন জনশক্তি জনতা দলের (জেজেডি) প্রধান তথা লালুপ্রসাদ যাদবের জ্যেষ্ঠপুত্র তেজপ্রতাপ! পুলিশের পাশাপাশি বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্রাট চৌধরি এবং মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। প্রাণনাশের হুমকির কথা উল্লেখ করে নিরাপত্তা বৃদ্ধির আবেদনও জানিয়েছেন তেজপ্রতাপ।
২১ ডিসেম্বর পটনার সচিবালয় থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন লালুপুত্র। তাঁর দাবি, সন্তোষকুমার রেণুকে তিনি জেজেডির জাতীয় মুখপাত্র করেছিলেন। কিন্তু সন্তোষের বিরুদ্ধে দলীয় আদর্শের বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগ ওঠায় তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি, দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযোগ, সন্তোষ নাকি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করছিলেন। দলবিরোধী এই কাজের জন্য সন্তোষকে দল থেকে বহিষ্কারের পর থেকেই প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন তেজপ্রতাপ!
লালুপুত্রের কথায়, ‘‘বিষয়টি নজরে আসার পরই সন্তোষকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও তিনি একই কাজ করছিলেন। তাই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।’’ ১৪ ডিসেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করার পর থেকেই সন্তোষ সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিয়ো পোস্ট করতে শুরু করেন। অভিযোগ, সেই সব পোস্টে আপত্তিকর ভাষায় তেজপ্রতাপকে আক্রমণ করেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছেন বলে অভিযোগ। তেজপ্রতাপের দাবি, এমন কাজ কোনও পরিস্থিতিতেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এর বিরুদ্ধে কঠোর এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন তেজ।
যদিও সন্তোষ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি দলের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তাঁর সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘এক জন বিজেপি নেতার ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছিলাম। তাই আমায় বলা হয় আমি নাকি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত।’’ সন্তোষের অভিযোগ, তেজপ্রতাপও তাঁর ভাই তেজস্বী যাদবের মতনই। তাঁরা কোনও তরুণ নেতাকে উঠতে দেন না।
আরও পড়ুন:
তবে তেজপ্রতাপের অভিযোগের ভিত্তিতে সন্তোষের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এ ছাড়াও, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাটের কাছে পুলিশি নিরাপত্তার অনুরোধ করেছেন তেজপ্রতাপ। সম্রাট তেজপ্রতাপের চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
‘দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ’ এবং ‘পারিবারিক মূল্যবোধ ক্ষুণ্ণ’ করার কারণে জ্যেষ্ঠপুত্র তেজপ্রতাপকে দল এবং পরিবার থেকে বিতাড়িত করেছেন লালু। তার পরেই ‘জনশক্তি জনতা দল’ গঠন করেন তেজপ্রতাপ। বিহারের বিধানসভা ভোটে লড়ে তাঁর দল। তবে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি জেজেডি। ভোটের মুখেও তিনি খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন। আবার এক বার প্রাণনাশের হুমকির কথা বললেন তেজপ্রতাপ।