লড়াই: যে বাড়িটিতে লুকিয়ে রয়েছে জঙ্গিরা, সেটিকে লক্ষ্য করে মর্টার শেল ছুড়ছেন জওয়ানেরা। মঙ্গলবার বদগামে বিএসএফ শিবিরে। ছবি:পিটিআই।
কাশ্মীরে পাকিস্তানি মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের তাণ্ডব কমার যে কোনও লক্ষণ নেই তা ফের প্রমাণ হলো। শ্রীনগর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছেই বিএসএফের শিবিরে হামলা চালাল তিন ফিদায়েঁ জঙ্গি। আগামী কয়েক দিনে এমন হামলা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে জানান গোয়েন্দারা।
উরিতে জঙ্গি হামলা ও কাশ্মীরে ক্রমাগত অশান্তির জেরে উপত্যকায় বাহিনীর ঘাঁটিগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে যে অনেক ফাঁক রয়ে গিয়েছে তার প্রমাণ মিলেছে আজ। বদগামের হুমহুমায় বিএসএফের শিবিরের বেড়া কেটে ভোর পৌনে চারটে নাগাদ ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। ঢুকেই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে তারা। ছোড়ে গ্রেনেডও। সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দেয় বাহিনী। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি মুনির খান জানিয়েছেন, শিবিরের দরজার কাছেই খতম হয় এক জঙ্গি।
শিবিরে হামলা
২ জানুয়ারি, ২০১৬: পঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটি আক্রান্ত।
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬: উরির সেনাঘাঁটিতে হামলা।
৯ জানুয়ারি, ২০১৭: আখনুরে নিশানায় জেনারেল ইঞ্জিনিয়ারিং ফোর্সের শিবির।
২৭ এপ্রিল, ২০১৭: পঞ্চগামে আক্রান্ত সেনা শিবির।
৫ জুন, ২০১৭: বান্দিপোরায় আক্রান্ত সিআরপি ছাউনি।
২৭ অগস্ট, ২০১৭: পুলওয়ামায় পুলিশ লাইনে হানা।
৩ অক্টোবর, ২০১৭: বিএসএফ শিবিরে হানা।
বাকি জঙ্গিরা শিবিরে ঢুকে একটি ভবনে আশ্রয় নেয়। তাদের খতম করার জন্য ডাকা হয় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপ ও সিআরপিকে। প্রায় ১০ ঘণ্টার লড়াইয়ে নিহত হন এস কে যাদব নামে এক বিএসএফ জওয়ান। খতম হয় আরও দুই জঙ্গিও। হামলার দায় নিয়েছে পাক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের ‘আফজল গুরু স্কোয়াড’।
ঘটনার জেরে শ্রীনগর বিমানবন্দরে পাঁচ ঘণ্টা বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়। তবে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি মুনির খানের দাবি, ‘‘বিমানবন্দর জঙ্গিদের লক্ষ্য ছিল বলে আমরা মনে করি না।’’ তিনি জানান, আরও ছ’সাত জন জঙ্গি ওই এলাকায় লুকিয়ে রয়েছে বলে গোয়েন্দাদের ধারণা।
দ্রুত হামলার মোকাবিলা করায় বাহিনীর প্রশংসা করেছেন রাজনাথ। কিন্তু গোয়েন্দারা তাঁকে জানান, জইশ জঙ্গিদের একটি দল গত মাসে বানিহাল সুড়ঙ্গের পাহারায় থাকা সশস্ত্র সীমা বলের উপরে হামলা চালায়। ওই দলেরই অন্য জঙ্গিরা আজ হামলা চালিয়েছে। প্রায় ১১২ জঙ্গি এখন কাশ্মীরে সক্রিয়। তারা দীপাবলির আগে আরও হামলার চেষ্টা চালাবে। বিএসএফ প্রধান কে কে শর্মার মতে, বাহিনীর অফিসার ও জওয়ানদের অপহরণের চেষ্টাও করতে পারে জঙ্গিরা। এ নিয়ে জওয়ান ও অফিসারদের সতর্ক করা হয়েছে।
গত বছরে উরির সেনাঘাঁটিতে হামলার পরে একটি কমিটি গড়েছিল কেন্দ্র। তারা সব ঘাঁটির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেয়। শিবিরগুলির চার দিকে পরিখা তৈরির কথা বলা হয়েছিল সেই রিপোর্টে। কিন্তু খুব কম শিবিরেই এখনও পর্যন্ত এমন ব্যবস্থা করা গিয়েছে। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মতে, ‘‘সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তান নীতি পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy