E-Paper

মুম্বইয়ে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক বৃহস্পতি এবং শুক্রবার, কোনও নেতাকে এ বার আহ্বায়ক না করারই ভাবনা

ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক হতে সবচেয়ে আগ্রহী জেডিইউ নেতা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তিনি আগে থেকেই উদ্যোগী হয়ে সমন্বয়ের কাজ করে চলেছেন বিরোধীদের মধ্যে।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৪১
An image of Opposition Parties

ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের আগে সাংগঠনিক বিস্তার নিয়ে ঘরোয়া ভাবে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। —ফাইল চিত্র।

মুম্বইয়ে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের আগে সাংগঠনিক বিস্তার নিয়ে ঘরোয়া ভাবে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, কোনও নেতাকে সার্বিক ভাবে জোটের আহ্বায়কের দায়িত্ব না-ও দেওয়া হতে পারে। অতীতে রাজনৈতিক জোটে আহ্বায়ক হিসেবে একজনকে রাখার চল ছিল। ইন্ডিয়া জোটের ক্ষেত্রে তা করার সম্ভাবনা কম। তবে ইন্ডিয়া জোটের যে এগারো জনের সমন্বয় কমিটি মুম্বইয়ে ঘোষণা করা হবে, সেখানে কিন্তু একজন আহ্বায়ক থাকবেন বলেই সূত্রের খবর। তাঁর দায়িত্ব থাকবে এগারো জন সদস্যের মধ্যে সমন্বয় রাখা, বৈঠক ডাকা। বিরোধী দলগুলির কোন নেতা আহ্বায়ক হবেন, তা ঠিক হবে মুম্বইয়ের বৈঠকে। পাশাপাশি চেষ্টা চলছে ইন্ডিয়া-র লোগো প্রকাশের। তবে মুম্বইয়ের বৈঠকের সময়েই তা প্রকাশ করা হবে কিনা, তা চূড়ান্ত নয়। কারণ, লোগোর কাজ এখনও চলছে। ইন্ডিয়া-র লোগোর সম্ভাব্য থিম, দেশপ্রম।

রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, সংযুক্ত মোর্চায় যেমন ছিলেন চন্দ্রবাবু নায়ডু কিংবা এনডিএতে জর্জ ফার্নান্ডেজ— ইন্ডিয়া জোট তেমন কোনও আহ্বায়ক রাখতে চাইছে না সঙ্গত কারণে। কারণটি হল, সেক্ষেত্রে আহ্বায়ককে সরাসরি এনডিএ-র সর্বাধিনায়ক নরেন্দ্র মোদীর প্রতিপক্ষ মুখ হিসেবে দাঁড় করাবে রাজনৈতিক মহল। বিজেপিও এ ব্যাপারে ছায়াযুদ্ধ শুরু করে দেবে। স্বাভাবিক ভাবে মাঠে নামার আগেই বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাবেন মোদী। তাছাড়া, এর ফলে জোটের নেতৃত্বের প্রশ্নে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।

সূত্রের খবর, ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক হতে সবচেয়ে আগ্রহী জেডিইউ নেতা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তিনি আগে থেকেই উদ্যোগী হয়ে সমন্বয়ের কাজ করে চলেছেন বিরোধীদের মধ্যে। পটনা বৈঠকের আগে বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন নীতীশ। বিরোধী জোটের প্রথম বৈঠকটিও করা হয় পটনায়। তবে বেঙ্গালুরু বৈঠকে জোটের নামকরণের প্রশ্নে কংগ্রেস বা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের সঙ্গে মতপার্থক্য হয় তাঁর। সূত্রের খবর, এতে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়েছেন নীতীশ। তবে তার পরেও বিজেপি-বিরোধী রাজনীতিতে সমন্বয়কারী হিসেবে সক্রিয় হয়ে রয়েছেন তিনি। ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেওয়ার অনুরোধ নিয়ে এনডিএ-র সবচেয়ে পুরনো শরিক শিরোমণি অকালি দলের সঙ্গেও নীতীশ যোগাযোগ করছেন। ওমপ্রকাশ চৌটালার দলকেও (আইএনএলডি) একই অনুরোধ করেছেন তিনি। আপাতত আইএনএলডি হরিয়ানায় বিজেপির সঙ্গে জোটে রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে এগারো জনের সমন্বয় কমিটিতে নীতীশ তাঁর দলের সাংসদ লালন সিংহকে
না রেখে নিজেই থাকতে পারেন। স্থির হয়েছে, এগারোটি বড় দলের শীর্ষ নেতারা পছন্দমতো এক জনকে এই কমিটিতে পাঠাবেন। মনে করা হচ্ছে, কোনও দলেরই শীর্ষ পর্যায়ের নেতা বা নেত্রী নিজেরা সমন্বয় কমিটিতে থাকবেন না। দ্বিতীয় স্তরের নেতৃত্ব থেকে প্রতিনিধি বাছবেন তাঁরা। সেক্ষেত্রে নীতীশের মতো ওজনদার নেতা নিজেই যদি সমন্বয় কমিটিতে থাকেন, সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দল কংগ্রেসের দ্বিতীয় স্তরের কোনও নেতার (যেমন কে সি বেণুগোপাল) পক্ষে কমিটির আহ্বায়ক হওয়ায় সমস্যা তৈরি হতে পারে।

তবে এ ব্যাপারে সব আলোচনাই চূড়ান্ত হবে মুম্বইয়ের বৈঠকে। সূত্রের খবর, মুম্বইয়ের আলোচনার তিন সপ্তাহের মধ্যেই পরের বৈঠকটি করার কথা ভাবা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত রাজস্থান, হিমাচলপ্রদেশ বা মধ্যপ্রদেশের রাজধানীকে বৈঠকস্থল হিসেবে ভাবা হচ্ছে। মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকার। এই রাজ্যে ভোটও আসন্ন। যদি ভোপালে বৈঠক করা হয়, তাহলে সেই রাজ্যের মানুষের কাছেও বিরোধীদের পক্ষ থেকে বার্তা যাবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Opposition Parties Nitish Kumar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy