E-Paper

জোর করে বা ভুল বুঝিয়ে বিমা বিক্রি নয়, ব্যাঙ্ককে বার্তা কেন্দ্রের

রবিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আর্থিক পরিষেবা দফতরের সচিব বিবেক জোশী জানান, বহু দিন ধরেই এমন অভিযোগ জমা পড়ছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫০
insurance

—প্রতীকী ছবি।

ঋণ নেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু জোর করে গছিয়ে দেওয়া হল বিমা প্রকল্প!— বহু দিন ধরেই বিভিন্ন ব্যাঙ্ক সম্পর্কে এই অভিযোগ গ্রাহকদের। কখনও ভুল বুঝিয়ে, কখনও কার্যত জোর করে তা চাপিয়ে দেওয়া হয় বলে ক্ষুব্ধ অনেকে। কোভিডের পরে এই ঝোঁক বেড়েছে বলেও দাবি একাংশের। এ বার বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধীনস্থ আর্থিক পরিষেবা দফতর। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের কড়া বার্তা, ভুল বুঝিয়ে বা জোর করে গ্রাহকদের বিমা প্রকল্প বিক্রি করা চলবে না।

রবিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আর্থিক পরিষেবা দফতরের সচিব বিবেক জোশী জানান, বহু দিন ধরেই এমন অভিযোগ জমা পড়ছিল। বিষয়টি নিয়ে ব্যাঙ্ককে সংবেদনশীল হতে হবে। অ্যাকাউন্টহোল্ডারদের স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। সচিবের সতর্কবার্তা, গ্রাহককে ভুল বুঝিয়ে প্রকল্প বিক্রির ঝোঁক নিয়ে ভিজ়িল্যান্স কমিশনও আপত্তি তুলেছে। তাদের মতে, বিমা প্রকল্প বিক্রি শুধু ব্যাঙ্কের ফিল্ড অফিসারদের উপরে চাপ বাড়ায় না, ব্যাঙ্কের মূল ব্যবসারও ক্ষতি করে। সচিবের বক্তব্য, এ ভাবে বিমা প্রকল্প নিতে বাধ্য করার প্রবণতা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। অনেকে যদিও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এই একই ঘটনা ঘটে বেসরকারি ব্যাঙ্কেও।

সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ব্যাঙ্ক এবং বিমা সংস্থার মধ্যে ব্যবসায়িক সমঝোতা থাকে। সেই অনুযায়ী শাখা থেকে ওই সংস্থার বিমা প্রকল্প বেচে তারা। কিন্তু অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের প্রকল্পের সঙ্গে ভুল বুঝিয়ে বা চাপাচাপি করে সেগুলি বিক্রি করেন ব্যাঙ্ক কর্মীরা। ৭৫ বছরের বেশি বয়সি মানুষকে পর্যন্ত এ ভাবে বিভ্রান্ত করার ঘটনা সামনে এসেছে। শাখার পদস্থ অফিসারদের জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁদের উপর চাপ রয়েছে। অ্যাকাউন্ট খোলা বা স্থায়ী আমানত করার মতো কাজে গিয়েও এমন ফাঁদে পড়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেকের।যেমন, বছর দুয়েক আগে চাকরি পাওয়া প্রীতি মজুমদারের অভিযোগ, সাধারণ একটি কাজে ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন। আমানত প্রকল্পের নামে তাঁর কাছে ২০ বছরের জীবন বিমা প্রকল্প বিক্রি করেছেন ব্যাঙ্ক কর্মী। বিষয়টি যখন বুঝলেন, আর কিছু করার নেই। বার্ষিক প্রিমিয়ামের ৫০,০০০ টাকার প্রথম কিস্তি দেওয়া হয়ে গিয়েছে। প্রীতির দাবি, সকলে টাকা-পয়সার বিষয়গুলি বোঝার ক্ষেত্রে সমান দক্ষ হন না। ওই কর্মীর সহজ ও সপ্রতিভ কথায় বিশ্বাস করেই ভুল করেছেন তিনি।

বিভিন্ন শিল্পের সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ সম্প্রতি গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করে ব্যাঙ্কের প্রকল্প বিক্রির অভিযোগ নিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে চিঠি পাঠিয়েছে। সংগঠনের আহ্বায়ক সৌম্য দত্তের দাবি, ‘‘ব্যাঙ্ক থেকে তৃতীয় পক্ষের পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব দিয়েছি আমরা। ব্যাঙ্ক কর্মী বিমা পণ্য বেচে যে কমিশন পান, তাতেও ঊর্ধ্বসীমা দরকার। তাঁদের উন্নতির ক্ষেত্রে এগুলি বিক্রির বাধ্যবাধকতাকে সরিয়ে দিতে হবে।’’

জোশী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে স্বর্ণঋণও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ বিধি মানা হচ্ছে না। লঙ্ঘিত হচ্ছে সোনা বন্ধকের মাপকাঠি। অসঙ্গতির অভিযোগ আসছে নগদে ফি ও পাওনা টাকা নেওয়াতেও। এ নিয়ে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Insurance Banks Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy