চিন এবং ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও উন্নত করতে, বন্ধুত্ব আরও জোরদার করতে কী কী করা প্রয়োজন? এ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চারটি পরামর্শ দিয়েছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। রবিবার ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী সে কথা জানিয়েছেন। ভারত এবং চিনের মধ্যে বাণিজ্যে যে বিপুল ঘাটতি রয়েছে, দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনায় সে প্রসঙ্গ এসেছে। এসেছে সীমান্তে দুই দেশের সেনা সংঘাতের প্রসঙ্গও। পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলি সমাধানের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে।
চিনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির জন্য চারটি বিষয় প্রয়োজন। প্রথমত, চিন এবং ভারতের মধ্যে কৌশলগত যোগাযোগ আরও জোরদার করতে হবে। একে অপরের প্রতি গভীর আস্থার বাতাবরণ তৈরি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সহযোগিতা এবং লেনদেন বৃদ্ধি করতে হবে। তবেই দু’পক্ষ লাভবান হবে এবং সাফল্য আসবে। তৃতীয়ত, একে অপরের সমস্যা এবং উদ্বেগে সাহায্যের চেষ্টা করতে হবে। চতুর্থত, উভয়ের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে।
আরও পড়ুন:
দুই দেশের মধ্যে আমদানি এবং রফতানিতে যখন কোনও ভারসাম্য থাকে না, তখন বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়। অর্থাৎ, কোনও দেশের মোট আমদানি যদি ওই দেশের মোট রফতানির চেয়ে বে়ড়ে যায়, তাকেই বলে বাণিজ্য ঘাটতি। চিন এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি সম্প্রতি পৌঁছে গিয়েছে আট লক্ষ কোটি টাকায়। মোদী-জিনপিং বৈঠকে সে প্রসঙ্গ উঠেছিল। দুই নেতাই স্বীকার করেছেন, এই মুহূর্তে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে অস্থিতিশীল অবস্থা চলছে, ভারত এবং চিন তা স্বাভাবিক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ঘাটতি মেটানোর জন্য লেনদেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। তার জন্য বাণিজ্যের পথ সহজ করতে হবে। রাজনৈতিক এবং কৌশলগত পন্থা অবলম্বন করতে হবে।
২০২০ সালে গলওয়ান উপত্যকায় চিন এবং ভারতের মধ্যে জোরালো সংঘাত হয়েছিল। তার পর ধীরে ধীরে উত্তেজনা শিথিল হয়েছে। সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি, মেনে নিয়েছেন দুই রাষ্ট্রপ্রধানই। সীমান্তে শান্তি থাকলেই চিন এবং ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে দিয়েছেন মোদী। রবিবার জিনপিঙের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সারেন। এর পর সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে চিনেই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার কথা তাঁর। তার পর দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী।