শফি আরমার
মার্কিন প্রশাসন গত ১৫ জুন তাকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীর তকমা দিয়েছে। ভারতে ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গি সংগঠনের সন্দেহভাজন প্রধান সেই শফি আরমারের বিরুদ্ধে এ বার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল কলকাতার এনআইএ আদালত। এ রাজ্যে আদালতের কোনও নথিতে সন্দেহভাজন আইএস চাঁই শফির নাম এই প্রথম উঠে এল।
শফির বিরুদ্ধে রাজ্যে এই আইনি পদক্ষেপের মূলে আছে ২০১৬-র ৫ জুলাইয়ের একটি মামলা। কর্নাটকের ভটকল শহরের যুবক, এখন দেশের বাইরে পালিয়ে থাকা শফিকে ভারতে আইএসের প্রধান নিয়োগকর্তা বলে মনে করে মার্কিন বিদেশ দফতর। কলকাতার আদালত যে-মামলায় শফির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছে, সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে শীঘ্রই চার্জশিট পেশ করবে এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা)। আদালত সূত্রের খবর, ভিন্ রাজ্যের বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত শফির বিরুদ্ধে তিন বছর আগে থেকেই গ্রেফতারি পরোয়ানা, হুলিয়া ও রেড কর্নার নোটিস জারি হয়ে আছে।
তা হলে কলকাতার আদালতের তরফে শফির বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার তাৎপর্য কী? এনআইএ জানাচ্ছে, এর ফলে শফি যখন যে-দেশেই ধরা পড়ুক, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কলকাতা শাখাও তাকে হেফাজতে পাওয়ার দাবিদার হয়ে থাকল।
শফির বিরুদ্ধে গোয়েন্দাদের অভিযোগ, সে বীরভূমের যুবক মহম্মদ মসিউদ্দিন ওরফে মুসার সঙ্গে ২০১৪-র গোড়ায় সামাজিক মাধ্যমে পরিচয় গড়ে তোলে। সেখানে নিয়মিত আলাপচারিতার সূত্রে পরে মুসাকে আইএসে নিয়োগ করে শফি।
এনআইএ জানাচ্ছে, কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় জঙ্গি হামলা চালাতে শফি ষড়যন্ত্র করেছিল মুসার সঙ্গে। কলকাতার মাদার হাউসে বিদেশিদের নিয়মিত আনাগোনা আছে জেনে সেখানে রুশ, ইংরেজ ও মার্কিনদের উপরে হামলা চালানোর জন্য মুসাকে নির্দেশ দেয় সে। মুসাকে সে বুঝিয়েছিল, সিরিয়া আর লিবিয়ায় আইএসের উপরে বোমা বর্ষণ করেছে আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও রাশিয়া।
গোয়েন্দাদের বক্তব্য, ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে মুসা ওই কাজ করেনি। বীরভূমের লাভপুরে এক ব্যবসায়ীকে খুনের ছক কষে সে। কিন্তু তার আগেই, গত বছর ৪ জুলাই রাতে বর্ধমান স্টেশনে ধরা পড়ে যায় মুসা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে তদন্তে নামে এনআইএ। ওই মামলায় শফি ছাড়াও বাংলাদেশের নাগরিক শরিফুল ইসলাম খালিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করবে এনআইএ। যাকে মুসা চিনত আবু সুলেমান নামে। শফির নির্দেশে খালিদ দু’বার এই রাজ্যে এসে মুসার সঙ্গে দেখা করে যায়। খালিদেরও হদিস পাননি গোয়েন্দারা।