Advertisement
E-Paper

কেন্দ্রীয় প্রকল্প অর্ধেক, প্রস্তাব নীতি আয়োগে

এক ধাক্কায় অর্ধেকে নেমে আসতে পারে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সংখ্যা। নীতি আয়োগ-এ মুখ্যমন্ত্রীদের উপ-কমিটি তেমনই সুপারিশ করতে চলেছে। এই সুপারিশ কার্যকর হলে যোজনা কমিশন ভেঙে নীতি আয়োগ তৈরির পর নতুন সংস্থার হাত ধরে সেটিই হবে সবথেকে বড় মাপের সংস্কার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৫ ০৩:২০

এক ধাক্কায় অর্ধেকে নেমে আসতে পারে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সংখ্যা। নীতি আয়োগ-এ মুখ্যমন্ত্রীদের উপ-কমিটি তেমনই সুপারিশ করতে চলেছে। এই সুপারিশ কার্যকর হলে যোজনা কমিশন ভেঙে নীতি আয়োগ তৈরির পর নতুন সংস্থার হাত ধরে সেটিই হবে সবথেকে বড় মাপের সংস্কার।

নরেন্দ্র মোদী যে ‘সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো’র মন্ত্রে রাজ্যগুলিকে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলেন, সেই নিরিখেও এটি বড় পদক্ষেপ। কারণ, এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু উন্নয়ন প্রকল্প রাজ্যগুলি নিজের চাহিদামতো রূপায়ণ করতে পারবে। আবার প্রয়োজন মনে না করলে রাজ্য তা আদৌ রূপায়ণ করবে না। কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্প অবশ্য বাধ্যতামূলক থাকবে।

নীতি আয়োগ তৈরির পর মুখ্যমন্ত্রীদের তিনটি উপ-কমিটি তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের নেতৃত্বে তৈরি কমিটির দায়িত্ব ছিল, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সংখ্যা কমানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখা। আজ দিল্লিতে সেই কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। বাইরে যখন তাঁর ইস্তফা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে, তখন নীতি আয়োগের বৈঠকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সংখ্যা ৭২টি থেকে অন্তত ৩০টিতে নামিয়ে আনার প্রস্তাবে সম্মতি জানান বসুন্ধরা। এই সব প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়া উচিত বলেও মুখ্যমন্ত্রীদের অধিকাংশের মত।

চলতি বাজেটেই ৭২টি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মধ্যে ১২টি-তে আর কেন্দ্রীয় অর্থসাহায্য দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর যুক্তি ছিল, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ মেনে রাজ্যের হাতে কেন্দ্রীয় সরকার এখন অনেক বেশি অর্থ তুলে দিচ্ছে। রাজ্য চাইলে এই ১২টি কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিজেরা চালাতে পারে। না হলে বন্ধ করে দিতে পারে। একশো দিনের কাজের মতো মূলত দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্পগুলিই কেন্দ্র চালাতে চাইছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, কেন্দ্র কোনও প্রকল্প চালালে তার পুরো অর্থ কেন্দ্রেরই দেওয়া উচিত। না হলে প্রকল্প তুলে দেওয়া হোক। কিন্তু সরকারের যুক্তি, এক বারে তা করা সম্ভব নয়। একশো দিনের কাজ, খাদ্য সুরক্ষার জন্য পৃথক আইন তৈরি হয়েছে। তাই রাজ্যগুলিকে সঙ্গে নিয়ে ধাপে ধাপে এগোতে চাইছে মোদী সরকার।

মুখ্যমন্ত্রীদের উপ-কমিটিতে অধিকাংশ সদস্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সংখ্যা অর্ধেক করে দেওয়ার বিষয়ে একমত হলেও জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তর-পূর্বের কিছু রাজ্যের এ বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। ওই রাজ্যগুলির দাবি, তাদের নিজস্ব আয় খুবই কম। তাই সেখানে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের পুরো খরচ কেন্দ্রই বহন করুক। ফলে সংখ্যা কমিয়ে আনার পরেও যে সব কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু থাকবে, সেগুলিতে কতখানি খরচ কেন্দ্র বইবে, কতখানি রাজ্য বইবে— তা নিয়ে এখনও ঐকমত্য হয়নি। শিবরাজ অবশ্য উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের আশ্বাস দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের সমস্যার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

বৈঠক শেষে শিবরাজ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্প কমিয়ে আনার বিষয়ে মোটের উপর সকলেই একমত। এ বার নীতি আয়োগের সিইও সিন্ধুশ্রী খুল্লারের নেতৃত্বে অফিসারদের একটি কমিটি খসড়া রিপোর্ট তৈরি করবে। তাতে মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মতি মেলার পর ওই রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে পেশ করা হবে।’’

প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে দু’ভাগে ভাগ করা হবে। একটি ভাগে থাকবে একশো দিনের কাজ, স্বচ্ছ ভারত মিশন, মিড ডে মিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। যেগুলি সব রাজ্যেই রূপায়ণ বাধ্যতামূলক হবে। সামাজিক সুরক্ষার অন্য প্রকল্পগুলি থাকবে দ্বিতীয় ভাগে। যেগুলি কোনও রাজ্য চাইলে না-ও রূপায়ণ করতে পারে। আপাতত যা কথা হয়েছে, প্রথম ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ অর্থ দেবে কেন্দ্র। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে দেবে ৫০ শতাংশ। তবে উত্তর-পূর্ব, জম্মু-কাশ্মীরের মতো অনগ্রসর রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ অর্থই দিতে পারে কেন্দ্র। আগামী অর্থবর্ষ থেকেই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করার সুপারিশ করা হবে রিপোর্টে।

narendra modi vasundhara raje Rajasthan prime minister chief minister
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy