Advertisement
১০ মে ২০২৪
Karnataka Assembly Election 2023

কোন অঙ্কে শিবকুমারকে পিছনে ফেললেন সিদ্দা? কংগ্রেস নেতৃত্বের ‘আস্থা’ পেলেন যে পাঁচ কারণে

কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন থেকে উঠে আসা শিবকুমার ছেড়ে হাইকমান্ড কেন জেডিএস থেকে আগত সিদ্দারামাইয়ার হাতে বেঙ্গালুরুর কুর্সি তুলে দিল, তাঁর একাধিক ব্যাখ্যা উঠে আসছে দলের অন্দরে।

The reasons why Siddaramaiah won and DK Shivakumar lost in the race for Karnataka CM post

ডিকে শিবকুমার এবং সিদ্দারামাইয়া। ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৩ ২১:৩৫
Share: Save:

বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের জন্য তাঁর ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। দলীয় নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য আর একনিষ্ঠতার মাপকাঠিতেও কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ডিকে শিবকুমার এগিয়ে ছিলেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সিদ্দারামাইয়ার থেকে। কিন্তু শেষ হাসি হাসলেন সিদ্দাই। কংগ্রেস হাইকমান্ড কেন ‘জনতা পরিবার’ থেকে আসা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই ফের বেঙ্গালুরুর কুর্সি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল, তাঁর একাধিক ব্যাখ্যা উঠে আসছে কংগ্রেসের অন্দর থেকে।

কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর মতো পদে থাকলেও সমাজবাদী ঘরানার রাজনীতির সিদ্দার বিরুদ্ধে কোনও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নেই। অন্য দিকে, প্রাক্তন মন্ত্রী শিবকুমারের বিরুদ্ধে রয়েছে আর্থিক অনিয়মের নানা মামলা। চলতি সপ্তাহেই শিবকুমারের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির মামলার তদন্তের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে সিবিআই। গত সেপ্টেম্বরে তাঁর বিভিন্ন ঠিকানায় তল্লাশিও চালিয়েছিল তারা।

ডিসেম্বরে সিবিআই হানা দিয়েছিল বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিবকুমারের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এরই মাঝে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে আর এক কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে। ফলে দলের প্রতি দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির ‘অতিসক্রিয়তা’ শিবকুমারের বিপক্ষে গিয়েছে।

কর্নাটকের নবনির্বাচিত কংগ্রেস বিধায়কদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশও সিদ্দারামাইয়াকে চেয়েছিলেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। এআইসিসির তরফে ৩ সদস্যের পর্যবেক্ষক দল বিধায়কদের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে কথা বলে যে রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন তাতেও স্পষ্ট ভাবে এ কথা জানানো হয়েছিল।

ওসিবি জনগোষ্ঠীর এই নেতা অনগ্রসর, দলিত এবং মুসলিমদের নিয়ে যে ‘অহিন্দা’ সমীকরণ তৈরি করেছিলেন, লোকসভা ভোটে তার ফল মিলতে পারে বলে আশা করেছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। কর্নাটকে ‘অহিন্দা’ ভোটদাতা ৪০ শতাংশেরও বেশি। লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর ওবিসি পরিচয়ের মোকাবিলায় কর্নাটকে সেই ভোটব্যাঙ্ক অক্ষত রাখতে ওবিসি সিদ্দারামাইয়াকেই দরকার বলে মল্লিকার্জুন খড়্গে, রাহুল গান্ধীরা মনে করেছেন। ফলে পিছিয়ে পড়েছেন ভোক্কালিগা জাতির নেতা শিবকুমার। কর্নাটকে ভোক্কালিগা ভোটদাতার সংখ্যা ১৫ শতাংশ, তাঁদের বড় অংশ ‘জেডিএসের সমর্থক’ বলে পরিচিত।

তা ছাড়া, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের আশঙ্কা ছিল, শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করে সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী করা না হলে তিনি বিদ্রোহ করতে পারেন। এমনকি তিনি দেবগৌড়ার দল জেডিএসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপির সমর্থনে সরকার গড়ে ফেলতে পারেন বলেও ‘আঁচ’ মিলেছিল। একদা দেবগৌড়ার দলের তরফেই কংগ্রেস-জেডিএস সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সিদ্দা। ফলে লোকসভা ভোটের আগে কর্নাটকে ‘একনাথ শিন্ডে’ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রাখতে চায়নি কংগ্রেস।

সূত্রের খবর, কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করতে প্রথমে আড়াই বছর অন্তর কুর্সি ভাগাভাগির কথা ভেবেছিলেন। সিদ্দারামাইয়াকে প্রথম আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, কোনও অবস্থাতেই ‘কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী’ হবেন না। ফলে সেই সম্ভাবনায় ইতি পড়ে যায় তখনই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE