Advertisement
E-Paper

কোন মেয়ের নম্বর চাই? নিলাম হচ্ছে ছবি দেখিয়ে

দেখতে তেমন সুন্দরী না হলে ৫০ থেকে ১০০। একটু চলনসই হলে সেটাই গিয়ে দাঁড়াবে ৫০০-র কোঠায়। আর এই টাকাটুকু খসাতে পারলেই কেল্লা ফতে। টেবিলের তলা দিয়ে সুড়ুৎ করে হাতে চলে আসবে ছোট্ট চিরকূট।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৩:২১

দেখতে তেমন সুন্দরী না হলে ৫০ থেকে ১০০। একটু চলনসই হলে সেটাই গিয়ে দাঁড়াবে ৫০০-র কোঠায়। আর এই টাকাটুকু খসাতে পারলেই কেল্লা ফতে। টেবিলের তলা দিয়ে সুড়ুৎ করে হাতে চলে আসবে ছোট্ট চিরকূট। তাতে লেখা ঝকঝকে দশ সংখ্যার মোবাইল নম্বর। এরপরেই অফুরন্ত ফোন, মেসেজ, কখনও অশ্লীল প্রস্তাব। এমন ‘লোভনীয়’ অফারের ডালি নিয়ে হাজির উত্তরপ্রদেশের রাস্তার ধারে গজিয়ে ওঠা মোবাইল রিচার্জের দোকানগুলো। আর অভিযোগের ঠেলায় রীতিমতো হিমশিম অবস্থা পুলিশের। ঘটনাটা ঠিক কী?

পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইলে রিচার্জ করতে আসা মেয়েদের নম্বর আলাদা করে রেখে দিচ্ছে দোকানগুলো। পরে সেই নম্বরই টাকার বিনিময়ে চলে যাচ্ছে ‘দাবিদার’দের হাতে। রীতিমতো নিলামও চলে এক-একটা নম্বরের জন্য। দেখতে সুন্দর মেয়ের নম্বর হলে তার দাম উঠতে পারে ৫০০ টাকা বা তারও বেশি।

অবস্থাটা ঠিক কতটা ভয়াবহ? তদন্তকারী অফিসার নিভনত সেকেরা বলেন, ‘‘রাজ্যজুড়ে রমরমিয়ে চলছে এই নম্বর পাচারের ব্যবসা। রাজ্যের বেশির ভাগ মোবাইল রিচার্জের দোকান থেকেই খোলামকুচির মতো ছড়িয়ে পড়ছে মেয়েদের নম্বর। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ‘ওমেন পাওয়ার লাইন’ খোলা হয়েছে। প্রতি দিন একই অভিযোগ নিয়ে একাধিক ফোন আসে। মেয়েরা বুঝতেও পারে না ‘রিচার্জ ভাইয়া’রা আসলে কী ভাবে ফাঁসাচ্ছে তাঁদের।’’

তবে শুধু মোবাইল রিচার্জের চক্করই নয়, নতুন সিম কার্ড তুলতে গিয়েও একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের। অনেক সময়ই সিম তোলার প্রয়োজনীয় ফর্ম নিজেরাই ফিল আপ করে নিচ্ছেন দোকানদাররা। ফলে গ্রাহকের ফোন নম্বর, ঠিকানা থেকে শুরু করে বেশির ভাগ ব্যক্তিগত তথ্যই চলে আসছে বিক্রেতাদের হাতে। আর ক্রেতাদের এই অসচেতনতার সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

যেমন শাহজানানপুরের মহম্মদ। বছর ২৪ বয়স। সংবাদ মাধ্যমের কাছে সে স্বীকার করেছে, এখানে তাঁর পছন্দের একটি মোবাইল রিচার্জের দোকান আছে। সেই দোকানে গিয়ে টাকার বিনিময়ে নম্বর নিয়ে আসে সে। দোকানের ছেলেটির সঙ্গে ভাল ‘দোস্তি’ হয়ে গিয়েছে মহম্মদের। কী করেন নম্বরগুলি নিয়ে? উত্তরে মহম্মদের সটান জবাব, ‘‘হোয়াটসঅ্যাপে উত্তেজক ছবি পাঠাই।’’

এমন ব্যবসা যে রমরমিয়ে চলছে তা কবুল করে নিয়েছে এলাহাবাদের একটি পিসিও-র মালিক মনু ভাইয়াও। মনু অবশ্য দাবি, ‘‘আমরা এমনটা করি না। কিন্তু আমার অনেক বন্ধুরাই নম্বর পাচারের ব্যবসায় নেমে পড়েছে।’’

এই ভাবে মেয়েদের নম্বর জোগাড় করে যাঁরা ফোন করছেন দেখা যাচ্ছে বেশির ভাগ সময়ই ‘বন্ধুত্ব’ করার নামে তাঁরা অশ্লীল প্রস্তাব দিচ্ছেন। সীতাপুরের এক গৃহবধূ জানান, ‘‘অচেনা নম্বর থেকে মাঝ রাতে ফোন আসে। নোংরা কথা বলে।’’ হেল্প লাইনে ফোন করে অভিযোগ জানানোর পর সমস্যার সমাধান হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সেকেরা জানান, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। অভিযুক্তদের আপাতত সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে অবৈধ নথিতে সিম কার্ড দেওয়ার অপরাধে ইতিমধ্যেই তিন জন অসাধু ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

কিন্তু অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন? পুলিশের একাংশের আশঙ্কা, নম্বর পাচার চক্রে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা শুরু করলে উত্তরপ্রদেশের জেলগুলো উপচে পড়বে। তাই আপাতত সে পথে না হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

(তথ্য: উত্তরপ্রদেশ পুলিশ)

Mobile Numbers Uttar Pradesh Mobile Recharge Phone Booth Girls Number For Sale
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy