Advertisement
E-Paper

টিকিটহীন যাত্রী প্রচুর, তবু আদায় কম রেলের

ধরা পড়া বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে কত টাকা আদায় হল, প্রতি বছরেই রেলের তরফে তার ছবি তুলে ধরা হয় সংসদে। এ বারেও হয়েছে।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিনা টিকিটের যাত্রী ধরার অভিযান চলছে ঠিকই। কিন্তু এই ধরনের যত যাত্রী ধরা পড়ছেন, সেই অনুপাতে ভাড়া বা জরিমানা আদায়ের পরিমাণ অনেক কম। গত এক বছরে যে-পরিমাণ টাকা আদায় হয়েছে, তার সঙ্গে টিকিট পরীক্ষকদের হাতে ধরা পড়া যাত্রীর সংখ্যা ঢের বেশি।

ধরা পড়া বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে কত টাকা আদায় হল, প্রতি বছরেই রেলের তরফে তার ছবি তুলে ধরা হয় সংসদে। এ বারেও হয়েছে। সম্প্রতি রেলের ভিজিল্যান্সের সেই রিপোর্ট নিয়ে সংসদে আলোচনার সময়ে এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে রেলের সংসদীয় কমিটি। এর পিছনে কোনও দুর্নীতি রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ করেনি কমিটি। তবে তারা খেদের সুরে উল্লেখ করেছে, রেলের এই রিপোর্টে কোথাও গোলমাল হয়েছে। তাই হিসেব মিলছে না। রেলের উচিত, যে-সব জোন নিজেদের রিপোর্টে ওই হিসেব ঠিকঠাক দেখাতে পারেনি, অবিলম্বে তাদের সঙ্গে কথা বলে বিনা টিকিটের যাত্রী-সংখ্যা এবং জরিমানা আদায়ের পরিমাণের মধ্যে সাযুজ্য আনা।

সংসদে পেশ করা রেলের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৬-’১৭ সালে বিভিন্ন জোন মিলিয়ে বিনা টিকিটের প্রায় দু’‌কোটি যাত্রীর কাছ থেকে ৯৩৫ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে। সব থেকে বেশি আদায় হয়েছে উত্তর রেলে। সেখানে বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে আয় হয়েছে ২৬ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। তার পরে রয়েছে দক্ষিণ-মধ্য রেল। তারা আদায় করেছে ২৫ কোটি ৮৬ লক্ষ। ২৪ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা আদায় করে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মধ্য রেল। তার পরে আছে পশ্চিম, পূর্ব-মধ্য, উত্তর-মধ্য, উত্তর-পূর্ব রেল। এই খাতে বাকি জোনগুলির আদায় করা অর্থের পরিমাণ আরও কম।

ওই রিপোর্ট বলছে, রেলের নিয়ম অনুযায়ী বিনা টিকিটের যাত্রী ধরা পড়লে তিনি যে-দূরত্ব ভ্রমণ করেছেন, সেই দূরত্ব ট্রেন-সফর করার প্রাথমিক ভাড়া তো দিতেই হবে। সেই সঙ্গে ‘টিকিট চেকিং জোন’-পিছু ২৫০ টাকা জরিমানাও দিতে হবে যাত্রীকে। ‘টিকিট চেকিং জোন’ মানে টিকিট পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত রেলপথের ভাগ। কেউ যদি বিনা টিকিটে হাওড়া থেকে টাটানগর পর্যন্ত গিয়ে ধরা পড়েন, তাঁকে ওই পথের ভাড়া মেটাতে হবে। সেই সঙ্গে ওই দীর্ঘ রেলপথকে যে-ক’টি ‘টিকিট চেকিং জোন’-এ ভাগ করা হয়েছে, তার প্রতিটির জন্য দিতে হবে ২৫০ টাকা। কোনও যাত্রী যদি বিনা টিকিটে প্ল্যাটফর্মে ঢুকে ধরা পড়েন, সে-ক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্ম টিকিটের মূল্যের সঙ্গে সঙ্গে জরিমানা বাবদ ২৫০ টাকা দিতে হবে। কিন্তু ক্ষতি কত হয়েছে, রেল তাদের রিপোর্টে তা পরিষ্কার করেনি। কমিটির বক্তব্য, তা হলে বাকি জোনগুলিতে হয় টিকিট পরীক্ষাই হয়নি নতুবা টিকিট পরীক্ষা হলেও জরিমানা আদায় হয়েছে খুব কম।

কমিটি বলেছে, বিনা টিকিটের যাত্রীর যে-সংখ্যা দেখানো হয়েছে, তাতে প্রতি জোনে গড়ে ৫০০ কোটি টাকা আদায় করার কথা। কিন্তু তা হয়নি। তাই রেলের মতো জাতীয় পরিবহণ সংস্থার উচিত, বিনা টিকিটের যাত্রী ধরতে পর্যবেক্ষক দল তৈরি করা। ওই দলের সদস্যেরা আচমকা ট্রেনে উঠে টিকিট পরীক্ষার অভিযান চালাবেন। তাতে রেলের লোকসান কিছুটা হলেও কমবে।

সংসদীয় কমিটি ওই রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলায় রেলকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু করেছেন। রেলকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, টিকিট পরীক্ষকদের একটি বিরাট অংশ ধরা পড়া যাত্রীদের কাছ থেকে কম জরিমানা (যা আইনে করা যায়) নেন মানবিকতার খাতিরেই। তাই বিনা টিকিটের যাত্রী-সংখ্যা গুনতিতে বাড়লেও জরিমানা আদায় হয় কম।

Ticket inspection Indian Railways Revenue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy