ইউসুফ পাঠানকে পটনায় ১ সেপ্টেম্বর ভোটার অধিকার যাত্রার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে পাঠানোর সিদ্ধান্তে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করলেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, তেজস্বী বলেছেন, প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা বর্তমান সাংসদ ইউসুফকে দেখতে আরও বেশি মানুষ ভিড় করবেন।
বিহারে রাহুল গান্ধী-তেজস্বী যাদবের ভোটার অধিকার যাত্রা ১ সেপ্টেম্বর পটনায় শেষ হচ্ছে। ওই দিন বিরোধী শিবিরের সমস্ত নেতানেত্রীকে পটনায় হাজির থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা কোনও পোড়খাওয়া সাংসদের বদলে তৃণমূল কংগ্রেস ইউসুফ পাঠান ও ললিতেশ ত্রিপাঠীকে পটনায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তৃণমূলের বক্তব্য, তেজস্বী ইউসুফ পাঠানের ভক্ত। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন। তাঁকে শুক্রবার রাতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দুই প্রতিনিধির নাম জানানো হয়। তখনই তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন বলে খবর।
ইউসুফের সঙ্গে তৃণমূল উত্তরপ্রদেশের নেতা ললিতেশকে পটনায় পাঠাচ্ছে। গত লোকসভা নির্বাচনে ভাদোহিতে সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে তৃণমূলের হয়ে লড়েছিলেন তিনি। তৃণমূলের বক্তব্য, ললিতেশ এবং ইউসুফ দুজনেই হিন্দিতে চোস্ত। বিহারে সেটা বাড়তি সুবিধা। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে ললিতেশ ছিলেন কংগ্রেসে। সে সময়ে তিনি প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার ঘনিষ্ঠ অনুগামী বলে পরিচিত ছিলেন। পাশাপাশি ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের ভিতরে তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখে চলে অখিলেশের এসপি। ফলে তাঁকে পটনায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত, অখিলেশকেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।
এত দিন ঠিক ছিল, পটনায় বিহারে ভোটার অধিকার যাত্রার শেষে সমস্ত বিরোধীদের নিয়ে জনসভা হবে। এখন ঠিক হয়েছে, সোমবার পটনায় জনসভার বদলে গান্ধী ময়দান থেকে অম্বেডকর পার্কে ভীমরাও অম্বেডকরের মূর্তি পর্যন্ত যাত্রা হবে। তাতে অনেক বেশি প্রভাব পড়বে। তা ছাড়া ইতিমধ্যেই এম কে স্ট্যালিন, অখিলেশ যাদবরা ভোটার অধিকার যাত্রায় যোগ দিয়েছেন। ফের সবাইকে নিয়ে জনসভার অর্থ হয় না। কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল বলেন, ‘‘বিহারের ২৫টি জেলার ১১০টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে দিয়ে এই ১৩০০ কিলোমিটার যাত্রা রাজ্যের গণ আন্দোলনের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক। বিহারের মানুষের মনে ভোট চুরি হওয়ার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তাতে রাহুল গান্ধী, তেজস্বী যাদবের যাত্রা আশ্বাসের বার্তা দিয়েছে।’’ রাহুল নিজে আজ অখিলেশ যাদবকে যাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
রাহুল চেয়েছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ১ সেপ্টেম্বর পটনায় হাজির থাকুন। তাঁর নতুন বাংলোয় নৈশভোজে সেই আমন্ত্রণ তিনি জানিয়েছিলেন। তখন রাহুল এবং অভিষেকের উষ্ণতায় এমনই মনে হয়েছিল মমতা না গেলেও, অভিষেক থাকবেন পটনায়। কিন্তু বাদল অধিবেশনের একেবারে শেষের দিকে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে সুর কাটতে শুরু করে। জাতীয় স্তরে সংসদীয় রাজনীতির বিরোধী সমন্বয় শেষ হওয়ার পর ভোটমুখী পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল কোনও বাড়তি খাতির করতে চাইছে না। তাই শীর্ষ নেতারা কেউ বিহারে গিয়ে 'মধ্যমণি' রাহুলের পাশে জিপে দাঁড়িয়ে হাত নাড়বেন– এই দৃশ্য থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চাইছে তৃণমূল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)