নোট বাতিল ও ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীর প্রতিবাদ এবং জেলবন্দি সন্দেহজনক ভোটারদের মুক্তির দাবিতে সরব হয়ে অসমে হারানো জমি ফিরে পেতে তৎপর হল তৃণমূল কংগ্রেস। সে দিকে তাকিয়ে ঢেলে সাজানো হবে দলের প্রদেশ কমিটিকেও।
নোট বাতিলে জনতার হয়রানির প্রতিবাদে তৃণমূল সারা ভারতে যে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেছে, অসমে সে কথা জানাতে এলেন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। তিনি বললেন, “তাপস পাল ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা রাজনৈতিক চক্রান্ত।” একইসঙ্গে মুকুলবাবু জানিয়ে দিলেন, অসমে কার্যত মুছে যাওয়া তৃণমূলকে ফের নতুন করে গড়া হবে। প্রদেশ সভাপতি দীপেন পাঠকের নেতৃত্বে জেলাগুলিতে দলকে সংগঠিত করা হবে। দলের যুব শাখাকে শক্তিশালী করে তোলার ভার তিনি দিলেন তড়িৎ চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁকে অসম যুব তৃণমূলের সভাপতি করা হয়েছে।
আজ গুয়াহাটিতে সাংবাদিক বৈঠকে মুকুলবাবু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনবিরোধী নোট বাতিলের পদক্ষেপ কালো টাকা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে। উল্টে তার ধাক্কায় ১১৩ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। রোজগার বন্ধ হয়েছে ৬ কোটি লোকের।” তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নোট-বিহীন দেশ গড়ার কথা
বলছেন, অ্যাপের ভিত্তিতে লেনদেনের কথা বলছেন— সে সব অবাস্তব চিন্তা। ওই জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি অসমেও তৃণমূলের আন্দোলন চলবে। তিনি জানান, প্রদেশ সভাপতি
দীপেন পাঠকের নেতৃত্বে ৯-১১ জানুয়ারি গুয়াহাটিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে।
মুকুলবাবুর অভিযোগ, “প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যাঁরাই সরব হচ্ছেন, তাঁদের নামে কালোবাজারিদের আড়াল করার কুৎসা রটাচ্ছেন মোদী। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রথম দিন থেকে মোদীর বিরুদ্ধাচরণ করছি। সে জন্যই আমাদের দলের দুই সাংসদকে গ্রেফতার করা হল।”
মুকুলবাবুর দাবি, ২০১৪ সালের ৯ মে অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশায় চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলার তদন্ত শুরু হয়েছিল। সিবিআইয়ের কাছে প্রমাণ থাকলে তাঁরা আগেই কেন তাপল পাল ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করল না? নোট বাতিলের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার পরেই তাঁদের গ্রেফতার করা হল?
অসমে ডি-ভোটার সন্দেহে বন্দি থাকা ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতেও সরব হন মুকুলবাবু। তিনি জানান, জমির দলিল, নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র থাকা স্বত্বেও অনেককে অন্যায় ভাবে আটকে রাখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় গণ পরিষদকে সঙ্গে নিয়ে লড়বে তৃণমূল। অন্যায় ভাবে বন্দি থাকা মানুষদের মুক্ত করতে রাষ্ট্রপতির কাছেও দরবার করবে। আসন্ন সংসদ অধিবেশনে এ নিয়ে সরব হবে দল। ধর্না দেওয়া হবে নয়াদিল্লিতে। তৃণমূল নেতা আরও জানান, শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আইন সংশোধন করাও অনুচিত। সংবিধান অগ্রাহ্য করে এ ভাবে শুধু হিন্দুদের ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া তৃণমূল মানবে না।
অন্য দিকে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের সঙ্গে বৈঠক করে আসু দাবি করেছে, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া মানা হবে না। অসম চুক্তির ষষ্ঠ দফা অবিলম্বে রূপায়ণ করতে হবে। দ্রুত শেষ করতে হবে নাগরিকপঞ্জি নবীকরণের কাজ। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিষয়টি নিয়ে জটিলতা কাটাতে তিনি রাজ্য সরকার, কেন্দ্র সরকার, আসু ও রাজ্যের সব উপজাতি সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy