E-Paper

সংসদ না চললে করিডরেই প্রতিবাদে তৃণমূল

চলতি সপ্তাহে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার কথা তুলতে না দেওয়া হলে এই ‘অভিনব’ কৌশল অবলম্বন করতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৩ ০৮:২৬
Sudip Bandyopadhyay.

তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

সংসদ করিডরে সংসদীয় দলের প্রতিবাদ মিছিল! এমন ঘটনা স্মরণকালের মধ্যে প্রত্যক্ষ করেনি সংসদ। চলতি সপ্তাহে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার কথা তুলতে না দেওয়া হলে এই ‘অভিনব’ কৌশল অবলম্বন করতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। আজ এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

আগামিকাল থেকে চলতি বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধের নতুন সপ্তাহ শুরু হচ্ছে। তৃণমূলের আশঙ্কা, এই সপ্তাহটিও জলে যাবে। শাসক দল এবং কংগ্রেসের মধ্যে রাহুলের মন্তব্য এবং তাঁর ক্ষমা চাওয়া, না-চাওয়ার জেরে অধিবেশন চলতেই দেওয়া হবে না। সুদীপবাবুর বক্তব্য, “নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, মুখ খুলতে না-দেওয়া হলে সংসদের মধ্যেই তার প্রতিবাদ লিপিবদ্ধ করতে হবে। বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। আমি বিষয় উপদেষ্টা কমিটিতে পঞ্চায়েতি রাজ, গ্রামোন্নয়ন নিয়ে আলোচনার দাবি তুলেছি। নেত্রীর পরামর্শ মাফিক কালো কাপড় বেঁধে কক্ষে প্রতিবাদ করা হয়েছে। এর পর প্রয়োজন হলে লোকসভার করিডরে বাংলার বঞ্চনা নিয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিল করার কথা ভাবছি। সেখানে বাংলার বঞ্চনা, দেশের সাধারণ মানুষের নিত্য প্রয়োজনের কথা তোলা হবে। সংসদের মূল প্রবেশদ্বারের সামনে হাতে হাতে দিয়ে বন্ধন তৈরি করব।” অন্য দিকে তাঁর নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমরা চাই, সংসদ খোলা থাকুক। আদানির বিষয়ে আলোচনা হোক। কেন আদানির ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে না? কেন এলআইসির বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে না? কেন গ্যাসের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে না? আবার ইউনিফর্ম সিভিল কোড পেশ করেছে। আমরা ইউনিফর্ম সিভিল কোড মানি না এবং আমরা করতেও দেব না। এনআরসি করতে দিইনি। এটা রাজ্য সরকারের হাতে। এটা অন্য রাজ্য করলেও আমি করব না। আমি এনআরসিও করতে দেব না, সিএএ ও করতে দেব না। যেমন ইউনিফর্ম সিভিল কোডও আমরা মানি না।’’

সব মিলিয়ে এই সপ্তাহে প্রতিবাদের রাস্তায় হাঁটতে দেখা যাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে। তবে রাজনৈতিক শিবির বলছে, এই প্রতিবাদ হবে অন্য কোনও বিরোধী দলের সঙ্গে সমন্বয় করে নয়, একক ভাবে। যেমনটা গত সপ্তাহে করতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল সাংসদদের। অন্য দিকে কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, ১৬টি বিরোধী দল এখন একযোগে বিজেপি-বিরোধিতায় সক্রিয় এবং সে কারণেই শাসক দল যথেষ্ট চাপে। কিন্তু তৃণমূল সেই ঐক্যকে দুর্বল করে আলাদা ভাবে প্রতিবাদ করে আসলে বিজেপিরই সুবিধা করে দিচ্ছে। আর সেই বার্তা যাতে মানুষের কাছে না যায়, তাতে আড়াল করতে বিভিন্ন পথ নিচ্ছে।

তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “এটা স্পষ্ট, শাসক দল আর সংসদ চালাতে দেবে না। কোনও বিষয় নিয়েই চর্চা করবে না। আসলে এ বারে তাদের কর্মসূচি একটাই — যে ভাবে হোক আদানিকে বাঁচাও! সামনেই কর্নাটক এবং তার পর আরও গুরুত্বপূর্ণ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মোদী-শাহ চান না, মানুষের কাছে আদানি নিয়ে কোনও অস্বস্তিকর বার্তা যাক। যা তাঁদের নির্বাচনে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করে রাখার কৌশল নেওয়া হয়েছে।” ডেরেকের অভিযোগ, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী সাংসদদের কোনও কথাই শোনেন না। তাঁর একটাই কাজ, প্রধানমন্ত্রীর পিছনে ঘুরে বেড়ানো!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Sudip Bandyopadhyay

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy