অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। ছবি: পিটিআই
প্রাক্তন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নাম নিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার বিতর্কিত টুইটকে ঘিরে শনিবারেও সরব বিরোধীরা।
মোদীর আমেরিকা সফরকালে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছিলেন, মোদী সংখ্যালঘুদের না দেখলে দেশটা টুকরো হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। এর পরেই এক ভারতীয় সাংবাদিক টুইটারে হিমন্তের উদ্দেশে প্রশ্ন ছোড়েন, ‘‘গুয়াহাটিতে কি ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগে ওবামার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে? অসম পুলিশ কি ওমাবাকে গ্রেফতার করার জন্য ওয়াশিংটন রওনা হয়েছে?’’
হিমন্ত তার জবাবে লেখেন, ‘‘ভারতেই অনেক হুসেন ওবামা আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটাই আমাদের অগ্রাধিকার। অসম পুলিশ আমাদের নিজস্ব অগ্রাধিকার অনুযায়ী কাজ করবে।’’
তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যখন দাবি করছেন, আমাদের নেতাদের শিরায় গণতন্ত্র প্রবাহিত হয়, তখনই অসমের মুখ্যমন্ত্রী চরম অগণতান্ত্রিক মন্তব্য করেছেন। সাংবিধানিক নীতি-নিয়ম নয়। হিমন্ত খোলাখুলিই স্বীকার করেছেন, অসম পুলিশ শুধুমাত্র বিজেপির কথামতো কাজ করে। প্রধানমন্ত্রী কী জবাব দেবেন, কোন গণতন্ত্রে এমনটা চলে?’ তৃণমূলের দাবি, ‘বিজেপির ‘নব্য ভারতে’ মুখ্যমন্ত্রী পদাধিকারীরাও খোলাখুলি হুমকি দেওয়া, একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে নিশানা করা ও ধর্মীয় বৈষম্যের পথ নিয়েছেন।
আমেরিকান সংবাদপত্রেও হিমন্তের মন্তব্য উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, ওবামার সাক্ষাৎকারের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় রাজনীতিবিদ হিমন্ত বারাক ওবামা ও ভারতীয় মুসলিমদের নিশানা করেছেন। প্রবন্ধে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, ধর্মীয় হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগে অতীতে নরেন্দ্র মোদীকেও আমেরিকায় নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভূপেন বরা বলেন, “হিমন্ত অসম ও দেশের মাথা নত করেছেন। ওবামার মতো বিশ্বনেতা সম্পর্কে এমন বৈষম্যমূলক ও হীন মন্তব্য করে শুধু অসমের মানুষ নয়, নিজেদের প্রধানমন্ত্রীরও মাথা হেঁট করেছেন হিমন্ত।”
রাইজর দলের বিধায়ক অখিল গগৈ হিমন্তের মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, “ওবামার প্রতি হিমন্তের সাম্প্রদায়িক ও বিকৃত মন্তব্যের জন্য তাঁর সহকর্মী হিসেবে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”
কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির কথায়, “ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আমেরিকা সফরকালে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য ভারতের ভাবমূর্তির পক্ষে খুবই হানিকর। বিশেষত যখন ভারতে সংখ্যালঘুদের উপরে চলা অত্যাচার নিয়ে অনেক কথা উঠছে।”
সমালোচনার মুখে বিজেপি অবশ্য হাতিয়ার করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ভিডিয়ো, যেখানে ট্রাম্পকেও ব্যঙ্গাত্মক ভাবে ‘বারাক হুসেন ওবামা’ বলতে শোনা যাচ্ছে। বিজেপি নেতারা আরও দাবি করছেন, ওবামার পুরো নাম বারাক হুসেন ওবামাই। তাই হিমন্ত ‘হুসেন ওবামা’ বলে নাম বিকৃত করেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy