Advertisement
E-Paper

সংসদে মোদীর বিরোধিতাই করবে তৃণমূল

আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকেই কেন্দ্রের দাদাগিরির বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদের অধিবেশনেও যাতে সেই চড়া সুরই বজায় থাকে, সেটা শনিবার দিল্লি ছাড়ার আগে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলের সংসদীয় নেতাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩৬

আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকেই কেন্দ্রের দাদাগিরির বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদের অধিবেশনেও যাতে সেই চড়া সুরই বজায় থাকে, সেটা শনিবার দিল্লি ছাড়ার আগে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলের সংসদীয় নেতাদের। তার পরে রবিবারই সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সামনে দলনেত্রীর মনোভাব স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল নেতারা। দলীয় সূত্রের বক্তব্য, সোমবার থেকে শুরু হওয়া সংসদের বাদল অধিবেশনে কেন্দ্র-বিরোধী অবস্থানই নিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল।

এমন অবস্থানের কারণ কী? তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব বলছেন, জাতীয় স্তরে মোদী-বিরোধী পরিসরটি বামেদের ছাড়তে নারাজ নেত্রী। মমতা তাই দলের সংসদীয় নেতাদের কালই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, মোদীর প্রতি তৃণমূল কোনও ভাবেই নরম মনোভাব দেখাবে না। বিজেপির ফাঁদেও পা দেবে না।

রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে সবর্দল বৈঠকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুখেন্দুশেখর রায়-রা সেটাই স্পষ্ট করে দিলেন। গত কালই আন্তঃরাজ্য বৈঠকে মমতা ঋণগ্রস্ত রাজ্যগুলির বোঝা কী ভাবে লাঘব হতে পারে, তা নিয়ে একটি কমিটি গড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আজ সুদীপরা তা নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবি তুললেন। একই সঙ্গে সন্ত্রাস মোকাবিলায় রাজ্য সরকারকে আরও আগাম তথ্য জানানো, সমন্বয় বাড়ানোর মতো বিষয় নিয়েও সংসদে আলোচনার দাবি তুলেছে তৃণমূল। নির্বাচন সংস্কার নিয়েও পৃথক আলোচনা চায় তারা। ভোটের সময় নির্বাচন কমিশন-সহ কেন্দ্র ও রাজ্যের ভূমিকা, রাজনৈতিক তহবিল নিয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে যে সুপারিশ করা হয়েছে, তা নিয়েও সরব দল।

মোদী সরকার যে ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির দরজা খুলে দিচ্ছে, এমনকী প্রতিরক্ষা বা ওষুধের ক্ষেত্রেও, তার প্রভাব নিয়ে আগামী অধিবেশনে সরকারের জবাব চাইবে তৃণমূল। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে কত কর্মসংস্থান হল, তারও হিসেব চায় তারা। সংসদের অধিবেশনে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা চাইছে কংগ্রেস। তৃণমূল ইতিমধ্যেই তা নিয়ে দুই সভায় নোটিস দিয়েছে।

তৃণমূল সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, এত জবাবদিহি করার মানে এই নয় যে, এ নিয়ে দল সংসদ অচল রাখবে। তৃণমূল সংসদ অচল রাখার বিরোধী। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সূত্র ধরে কেন্দ্রের সঙ্গে সুসম্পর্কই বজায় রাখতে চায় দল। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে বলা হচ্ছে, তিন দিন দার্জিলিঙে থাকার পর মমতা যে কলকাতায় না ফিরে দিল্লিতে আসতে খুব উৎসাহী ছিলেন, তা নয়। অতীতেও এ ধরনের অনুষ্ঠান বয়কটের প্রবণতাই দেখা গিয়েছে তাঁর মধ্যে। কিন্তু এ বারে তা করেননি। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক বজায় রাখতেই তিনি দিল্লি এসেছেন। গোটা দিন রাষ্ট্রপতি ভবনের চৌহদ্দিতে আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে ধৈর্য ধরে বসেও ছিলেন। যে পণ্য ও পরিষেবা কর বিল নিয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আজও সর্বদল বৈঠকে বিরোধীদের সহযোগিতা চেয়েছেন, সেখানেও পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়েছে তৃণমূল।

একাধিক ক্ষেত্রে সরকারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেও জাতীয় রাজনীতির অঙ্কে মমতা কিন্তু কৌশলী। কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বামেরা মোদী-বিরোধিতার পরিসরটুকু কেড়ে নিক, তা মোটেই চায় না তৃণমূল। জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে সনিয়া গাঁধী যে কারণে মোদী-বিরোধী মঞ্চে মমতাকে পাশে চান, সেই একই কারণে মমতাও সনিয়ার দলকে অচ্ছ্যুৎ করে রাখতে চান না। পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক এখন মমতার পাশেই। বিজেপির বি-টিম হিসেবে চিহ্নিত হয়ে সেই ভোটব্যাঙ্ক খোয়াতে চান না তৃণমূল নেত্রী। তাই আন্তঃরাজ্য বৈঠকের মতোই সংসদেও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থানই নিতে চলেছে তৃণমূল।

modi TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy