Advertisement
E-Paper

ভর্তুকিতে রেশন পেতে লিখতে হবে, ‘আমি গরিব’!

জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন (এএফএসএ)-এর আওতায় যাঁরা রেশন পান তাঁদের জন্যই এই ব্যবস্থা। ধীরে ধীরে গোটা রাজ্যেই এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ১৯:৩৮
এ রকম দেওয়াল লিখন দেখা গেল রাজস্থানের এক ‘বিপিএল’ পরিবারের বাড়ির বাইরে। ছবি: সংগৃহীত।

এ রকম দেওয়াল লিখন দেখা গেল রাজস্থানের এক ‘বিপিএল’ পরিবারের বাড়ির বাইরে। ছবি: সংগৃহীত।

কারও বাড়ির দেওয়ালে লেখা হল, ‘আমি গরিব’। কারও বা বাড়িতে ছাপ পড়ল, ‘আমি অত্যন্ত গরিব’। ভর্তুকিযুক্ত রেশন পেতে হলে রাজ্যের বিপিএল তালিকাভুক্ত নাগরিকের বাড়িতে এমন ‘স্বীকারোক্তি’ই লেখা শুরু করল রাজস্থান সরকার। তবে, সরকারের এই ‘বৈষম্যমূলক’ উদ্যোগে রীতিমতো ক্ষুব্ধ দারিদ্রসীমার নীচে থাকা রাজ্যবাসী। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরাও। তবে সরকারের দাবি, গণবণ্টন ব্যবস্থায় দুর্নীতি রুখতেই এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে।

জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন (এএফএসএ)-এর আওতায় যাঁরা রেশন পান তাঁদের জন্যই এই ব্যবস্থা। ধীরে ধীরে গোটা রাজ্যেই এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি। ইতিমধ্যেই দৌসা জেলায় দেড় লক্ষ ‘বিপিএল’ পরিবারের বাড়িতে এ ধরনের দেওয়াল লিখেছে প্রশাসন। তবে যাঁদের জন্য সরকারের এই উদ্যোগ সেই বিপিএল তালিকাভুক্ত নাগরিকেরা এতে অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছেন। দৌসা জেলার এক বাসিন্দা বলেন, “বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় এটা দেখে সকলেই হাসাহাসি করছেন। আমদের তো রীতিমতো লজ্জা করছে।” অন্য এক গ্রামবাসী বলেন, “পরিবারের তিন জন মাত্র লোকের জন্য আমাদের বাড়ির দেওয়াল নষ্ট করেছে সরকারি লোকজন। জন প্রতি মাসে দু’কিলো আটার জন্য গরিবকে নিয়ে মজা করছে এই সরকার।”

আরও পড়ুন

স্বেচ্ছামৃত্যু ‘দণ্ড’ চাইলেন রাজীব গাঁধীর ঘাতক

আগামী বছরেই রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যবাসীর একাংশের এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার সুযোগ ছাড়ছে না বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, “এএফএসএ-র আওতাধীন ওই প্রকল্পে বিপিএল পরিবারগুলিকে ভর্তুকিতে রেশন দিয়ে সরকার তাদের কোনও দয়া-দাক্ষিণ্য করছে না। বরং এটা তাদের অধিকার।” প্রাক্তন আম আদমি পার্টির নেতা তথা স্বরাজ অভিযানের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য যোগেন্দ্র যাদব টুইট করেছেন, “গরিবের সঙ্গে এ ধরনের জঘন্য রসিকতা করা সরকারের সাজে কি?” রাজ্য কংগ্রেসের এক নেতা ডি সি বাইরওয়ার অভিযোগ, ভুর্তকিতে রেশন দেওয়া এড়াতে রীতিমতো পরিকল্পনা করেই এই নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

দৌসা জেলায় দেড় লক্ষ ‘বিপিএল’ পরিবারের বাড়িতে এ ধরনের দেওয়াল লিখেছে প্রশাসন। ছবি: সংগৃহীত।

বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়ে আসরে নেমেছে সরকারও। রাজ্যের বিজেপি নেতা দীপক জোশী এ সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, এএফএসএ-র প্রকল্পের আওতাধীন মানুষজন যাতে এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন সে জন্যই এ ভাবে চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করেছে সরকার। যদিও বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়ে তা গোটা রাজ্যে তা আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। দৌসার অতিরিক্ত জেলাশাসক কে সি শর্মার গলায় যদিও শোনা গেল সম্পূর্ণ উল্টো সুর। তাঁর দাবি, “জেলা প্রশাসনের তরফে এ ধরনের কোনও দেওয়াল লিখনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। দুর্নীতি রুখতেই সম্ভবত এ ধরনের নির্দেশ দিয়েছে জেলা পরিষদ।” এ বিষয়ে সমস্ত রকমে অভিযোগই খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Ration BPL National Food Security Act NFSA বিপিএল জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন এএফএসএ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy