Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রাসাদ গড়ে অস্তিত্ব প্রচারের লড়াই

দক্ষিণ মুম্বইয়ের একতলা-দোতলা বস্তি দেখতে দেখতে যখন এক ঝলক স্বচ্ছ বাতাসের জন্য আকাশের দিকে তাকালেই নাকের ডগায় ইম্পিরিয়াল টাওয়ারের যমজ কোণাকৃতি মাথা দুটো ধাক্কা খেত তখন মনে হত ভূমিকম্প কেন আসে না। কিন্তু এ বাড়ি তো ভূমিকম্পে পড়ে যাওয়ার মতো বাড়ি নয়—এ তো অ্যান্টিলিয়া অম্বানী এম্পায়ারের প্রাসাদ! রিখটার স্কেলের আট রিখটার পর্যন্ত কম্পন সহ্য করার ক্ষমতা রাখে।

পৌলমী সরকার
শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৫ ০১:০৭
Share: Save:

দক্ষিণ মুম্বইয়ের একতলা-দোতলা বস্তি দেখতে দেখতে যখন এক ঝলক স্বচ্ছ বাতাসের জন্য আকাশের দিকে তাকালেই নাকের ডগায় ইম্পিরিয়াল টাওয়ারের যমজ কোণাকৃতি মাথা দুটো ধাক্কা খেত তখন মনে হত ভূমিকম্প কেন আসে না। কিন্তু এ বাড়ি তো ভূমিকম্পে পড়ে যাওয়ার মতো বাড়ি নয়—এ তো অ্যান্টিলিয়া অম্বানী এম্পায়ারের প্রাসাদ! রিখটার স্কেলের আট রিখটার পর্যন্ত কম্পন সহ্য করার ক্ষমতা রাখে।

মুম্বইয়ে একটু পা বাড়ালেই সমুদ্র এসে পা জড়িয়ে ধরে। এ রকম স্থান সঙ্কুলানের মধ্যে পৃথিবীর রাজা- মহারাজাদের থাকতে হবে তো, আর তাও আবার সেই দক্ষিণ মুম্বইতে। অগত্যা আকাশের সঙ্গে গুঁতোগুঁতি।

সিঙ্ঘানিয়াদের টনকটা নড়েছিল অ্যান্টিলিয়া আরব সাগরতীরে গজিয়ে ওঠার কিছু দিন বাদে। একদা অ্যাটলান্টিকের একটি রূপকথার দ্বীপ অ্যান্টিলিয়া সত্যিই আরব সাগরতীরে উড়ে এসে জুড়ে বসার মতো ঘটনা। কারণ পৃথিবীর দ্বিতীয় অ্যান্টিলিয়ার প্রভু মুকেশ অম্বানি পেডার রোডের বা অল্টামাউন্ট রোডের বাসিন্দা ছিলেন না কোনও দিনই। থাকতেন কাফ প্যারেডে। কাজে যেতেন হেলিকপ্টারে চড়ে। পাড়ার লোকেরা শব্দদূষণের ওজর-আপত্তি তুলে মহারাজকে উঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।

অল্টামাউন্ট রোডের জমিটা অম্বানীরা কিনেছিলেন করিমভয় ইব্রাহিম খোজা অনাথালয় ট্রাস্টের কাছ থেকে দুশো দশ কোটি টাকার কিছু বেশি দিয়ে। ২০০২ সালে ওয়াকফ অ্যাক্টের সাহায্যে। প্রাথমিক পর্যায়ে ওয়াকফ মন্ত্রী এই বেচাকেনায় আপত্তি করেন। এবং মহারাষ্ট্র সরকারেরও আপত্তি ছিল। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। আদালত মামলাটি খারিজ করে বম্বে হাইকোর্টে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। তাই জমি কেনার শুরুতেই আদালত থেকে বিক্রির জন্য স্টে-অর্ডার জারি হয়। এলাহাবাদ কোর্টেও এ নিয়ে মামলা হয়। মামলার রায়ে বলা হয় এ জমি বিক্রয়যোগ্য নয়, হস্তান্তর যোগ্যও নয়। অগত্যা ওয়াকফ বোর্ডের কাছ থেকে ‘তাদের কোনও আপত্তি থাকবে না’ এই বয়ানের শংসাপত্র হাসিল করতে হয় অম্বানীদের। তখন ওয়াকফ বোর্ড আর আদালতে না গিয়ে দেড় কোটির কিছু বেশি টাকার বিনিময়ে অম্বানীদের জমি ছেড়ে দেয়।

সাতাশ তলার অ্যান্টিলিয়ার প্রত্যেক তলার সিলিং অনেক উঁচুতে তাই এটি সাধারণ বহুতলের ষাট তলার সমান উঁচু। অ্যান্টিলিয়ায় তিনটে হেলিপ্যাডের বন্দোবস্ত করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন অম্বানীরা। ভারতের নৌসেনা মুম্বইয়ের কোনও নাগরিকের বাড়িতে হেলিপ্যাড তৈরির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। শব্দদূষণের আপত্তি এসেছিল পরিবেশ দফতর থেকে। কিন্তু বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে যশলোক হাসপাতালের অনতিদূরেই হাসপাতালকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অ্যান্টিলিয়ার ছাদে তিন-তিনটে হেলিপ্যাড তৈরির ছাড়পত্র এসে যায়। শোনা যায়, গাড়ি পার্ক করা নিয়েও আপত্তি উঠেছিল। কিন্তু এই বিরাট কর্মযজ্ঞে এ রকম অভিযোগ কোন অতলে যে তলিয়ে যায়, তার আর ভেসে ওঠার সম্ভাবনাই দেখা দেয়নি।

বাড়িটিতে একটা নয়, অনেক ছাদ। প্রথমের কয়েকটি তলায় গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়িটিতে পার্ষদবর্গের সংখ্যা ছ’শো। একটা বল নাচের ঘর, একটা পঞ্চাশ আসনের প্রেক্ষাগৃহ রয়েছে, একটা জমি-সহ হেল্থ ক্লাব রয়েছে, রয়েছে সুইমিং পুল। বাড়িটির উপরের তলায় অম্বানীর পরিবার থাকে।

মুম্বইয়ের মানচিত্রটা দেখলে মনে হয় আরব সাগরের বুকের উপর মুম্বই শহরটা করমর্দনের জন্য বাড়িয়ে দেওয়া একটা হাত। মুম্বই সকলকে আহ্বান করে। বর্তমানে মুম্বইয়ে বসবাসকারী লোকসংখ্যা এক কোটি সাতাশ লক্ষের কিছু বেশি। এক বর্গ কিলোমিটারে বসবাসকারী মুম্বইকরের সংখ্যা কুড়ি হাজার চারশো বিরাশি জন। মুম্বইয়ের এই জনসংখ্যার ঘনত্ব পৃথিবীর অন্য শহরগুলির মধ্যে মুম্বইকে চতুর্থ স্থানে এনে দিয়েছে। বিগত বিশ বছরে মুম্বইয়ের জনসংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে বেড়েছে। এর মধ্যে পঞ্চান্ন শতাংশ মুম্বইকর বস্তিতে থাকে। বস্তির মধ্যে এক-একটি পরিবার একশো ষাট বর্গফুট জায়গার মধ্যেও দিব্যি থেকে যায়। গেল মুম্বই শহরের বস্তিবাসীদের কথা, যাদের মাথায় ছাদ আছে। আর যাদের মাথায় ছাদ নেই সে রকম মুম্বইকরের সংখ্যাও কম নয়।

টাটা কোম্পানির রতন টাটা মুম্বই জিমখানার কাছে যে চেয়ারম্যানের বাংলো নির্দিষ্ট করা আছে সেই বাংলোতে থাকতেন না। তাঁর ধারণা ছিল, সারা দিন বাদে বাড়ি এসে শুধু রাত কাটানোর জন্য একা মানুষের এত আড়ম্বরের প্রয়োজন নেই। তার অনুপস্থিতিতে বাড়ির পরিচারক- পরিচারিকারাই বাড়িটি ভোগ করবে। তার বদলে তিনি বাড়িটি ভাড়া দিয়ে এক কামরার একটা ফ্ল্যাটে থাকতেন। আর ভাড়ার টাকা সমাজসেবার কাজে লাগাতেন। বড় মানুষদের যাঁর যে রকম অভিপ্রায়। মুম্বইয়ের মতো ধনী আর বুভুক্ষুর শহরে প্রাচুর্যের এই প্রদর্শন নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। রতন টাটাও বাদ যাননি। ডারউইন তত্ত্বের এ রকম নজিরবিহীন প্রদর্শন বোধহয় আর হয় না।

বিবর্তন অনুসরণ করলে দেখা যায় জঙ্গলে উঁচু গাছের ডালের পাতা খাওয়ার জন্য জিরাফের গলা লম্বা হয়ে গেছে। জঙ্গলে একটা গাছের উচ্চতাকে আর একটা গাছের ছাড়িয়ে ওঠার প্রতিযোগিতার পিছনে সূর্যের আলো পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকে। কিন্তু একটা বাড়ির লম্বা হওয়ার পিছনে কোন বিবর্তনবাদ কাজ করে? না কি কাজ করে প্রতিযোগিতা?

সূর্যালোক পাওয়ার জন্য তো এ সংঘর্ষ নয়। সূর্যালোক পৌঁছয় না বস্তির গলিগুলোয়। চৌকো সিমেন্টের স্ল্যাবের আধপাকা-আধকাঁচা গলির রাস্তাগুলোয় সূর্যালোকের থেকেও বেশি প্রয়োজন জল নিষ্কাষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা। বস্তিবাসীদের এ সংঘর্ষ নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার। প্রতিদিন মুম্বইতে লোক চলে আসছে দেশের নানা প্রান্ত থেকে। একটু বেশি রোজগারের আশায়। কিন্তু মুঠোভর্তি টাকা রোজগার করেও মানুষ মুম্বইতে যা নির্দিষ্ট করতে পারে না, তা হল নিজস্ব ঠিকানা।

বাড়িতে বাড়িতে উচ্চতার সংঘর্ষ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখারই কাছাকাছি তবে একটু আলাদা। আসলে তা হল নিজেদের অস্তিত্ব প্রচারের সংঘর্ষ। পেডার রোডের উপর আরও দুটি অট্টালিকা রয়েছে শিল্পপতিদের। একটা জিন্দলদের আর অন্যটি মফতলালদের। কিন্তু তাঁদের এ রকম আত্মপ্রচারের প্রকাশ দেখা যায় না। শিল্পপতিদের সাধারণ প্রাসাদের মতো তাঁদের অট্টালিকা দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই দুই প্রাসাদ অ্যান্টিলিয়া তৈরি হওয়ার আগেও ছিল, এখনও আছে। পৃথিবীর বিখ্যাত স্থাপত্যকার অ্যান্টিলিয়া তৈরির দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বাড়িটির প্রতিটি স্তম্ভ, প্রতিটি ইট প্রতি মুহূর্তেই মনে করিয়ে দেয় যে, এ-ঠিকানাটি কার। পৃথিবীর প্রথম পাঁচ জন ধনীর মধ্যে এক জনের। সেখানেই এ বাড়ির উচ্চতার —সেই সঙ্গে নানা সুবিধারও গুরুত্ব। অল্টামাউন্ট-পেডার রোডের সমান্তরালে ওয়ার্ডন রোড। যা আজ ভুলাভাই দেশাই রোড নামেও পরিচিত। সিংঘানিয়া গোষ্ঠীর রেমন্ডের প্রধান শোরুমটা এই রাস্তার উপরে ব্রিচকান্ডি হাসপাতালের উল্টো দিকে অনেক দিন থেকেই ছিল। যেটা ছিল না সেটা হল অস্তিত্বের প্রচার। রেমন্ডের বিজ্ঞাপনের বাঁধা ধরা জায়গা ছিল হিরা পান্না শপিং মলের মাথাটা, যেখানে বিরাট হোর্ডিংএ রেমন্ডের বিজ্ঞাপন থাকত। ব্যস ওই পর্যন্তই। যাঁদের দক্ষিণ মুম্বইতে এত দিনের বাস—তাঁদের নস্যাত্‌ করে দিয়ে কেউ যদি উড়ে এসে জুড়ে বসে, তা হলে সমুদ্রের ধার থেকে নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করতে হয় বইকী! অর্থাত্‌ সিংঘানিয়ারাও বাড়ি বানিয়ে দেখিয়ে দিতে চাইলেন কি?

শুরুতে সিঙ্ঘানিয়া প্রাসাদের উচ্চতা ছ’সাত তলা কমানোর জন্য মিউনিসিপ্যালিটি থেকে বলা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অম্বানীদের টেক্কা না দিয়েই এ-বাড়ির উচ্চতা একশো তেতাল্লিশ মিটার নির্ধারিত হয়, অ্যান্টিলিয়ার যা কিনা ১৭৩ মিটার। সিংঘানিয়াদের রেমন্ড শোরুম কিছু দিনের জন্য স্থানান্তরিত হয়ে অ্যাটরিয়া শপিং মলে উঠে গিয়ে বসল। অনেকে মনে করলেন জায়গাটি ভাড়ায় ছিল। দোকানের কর্মচারীরাও এ বিষয়ে কিছু বলতে চাইছেন না। জিজ্ঞাসা করলে বলছেন শোরুম মেরামতের কাজ চলছে, ঠিক হলেই আবার শোরুম যথাস্থানে ফিরে যাবে। রেমন্ড শোরুম অ্যাটরিয়া থেকে যখন ফিরে এল নিজস্ব জায়গায়, তখন শোরুমের ধারণাটাই একেবারে পাল্টে গেছে। দোতলা তিন তলায় শোরুম। দামের তারতম্য অনুযায়ী শোরুমে বিভিন্ন স্থানে নির্দিষ্ট করা রয়েছে। বিলাসবহুল সোফাসেট পাতা রয়েছে যেখানে বসে দামি কাপে চা খেতে খেতে সেন্টার টেবিলে রাখা কাপড়ের থানগুলো পছন্দ করা যায়। এর পর অম্বানীদের মতোই সিংঘানিয়াদের জে কে হাউসের প্রথম কয়েকটি তল গাড়ি রাখার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

সিংঘানিয়াদের আভিজাত্যের প্রকাশটা একটু অন্য রকম। সিংঘানিয়াদের সংগ্রহে বহু দিন ধরে এমন সব জিনিস ছিল যে, তা দিয়ে একটি তলায় সংগ্রহশালার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুরো তলাটা সংগ্রহশালার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সিংঘানিয়াদের বর্তমান কর্মকর্তা গৌতম সিংঘানিয়ার কাছে জেড পাথরের সংগ্রহ ছিল। যেগুলো স্থান পাবে এই সংগ্রহশালায়। সাধারণ মানুষকে এই সংগ্রহশালা দেখতে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে। জে কে হাউসে কোনও থিয়েটারের ব্যবস্থা নেই—যা কিনা রয়েছে অ্যান্টিলিয়ায়। বাড়িটিতে আছে দুটো সুইমিং পুল।

জে কে হাউসের গাড়ি রাখার পাঁচটা তলা আর শোরুমের দুটি তলা বাদ দিলে নীচের দিকের তলাগুলো অতিথি-অভ্যাগতদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। উনিশ তলাটি রাখা হয়েছে বাড়িটির সমস্ত কাজ পরিচালনা করার জন্য। মোট সাঁইত্রিশ তলা বাড়িটির কুড়ি তলা থেকে ছত্রিশ তলা পর্যন্ত সিংঘানিয়া পরিবারের লোকজনদের জন্য রাখা রয়েছে। অ্যান্টিলিয়ার মতো এ বাড়িতেও ছাদে হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু জে কে হাউস তৈরির পশ্চাতে অ্যান্টিলিয়াকে টেক্কা মারার কোনও অভিপ্রায় ছিল না। কারণ একে তো জে কে হাউসের অবস্থানগত সুবিধা একটা ছিলই, এর সামনে বহুতল বাড়ি ওঠার কোনও সম্ভাবনা নেই। জমিটাও ছিল নিজস্ব।

কিন্তু পরিসংখ্যান বলে, এই দেশেই এক-তৃতীয়াংশ গরিব মানুষ বাস করে। গরিবের সংখ্যা যেমন এ দেশে বেশি, সে রকমই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনীদের মধ্যে একজনের বাসও এ দেশেই। অ্যান্টিলিয়ার বৈভব সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে বিদেশি পত্রপত্রিকা ভারতের দারিদ্রের উল্লেখ করতে ভোলে না। অনেকে এই প্রয়াসকে টাকার অপচয় মনে করেছেন যেমন—সেই রকমই এই অট্টালিকা দেখাশোনার জন্য প্রচুর মানুষের চাকরির সংস্থান হয়েছে, এটাও ঠিক।

মুম্বইয়ে সাধারণ মানুষের দারিদ্র নির্মূল করা সহজ নয়। প্রতিদিন মানুষ এসে ভিড় করে এই শহরে। ভারতে জনসংখ্যার কমতি নেই। মুম্বইতে একশো ষাট বর্গফুটের একটি কামরার অনেক শরিক। তাই অস্থায়ী এই ঘরগুলোর মাথায় আরও একটা করে ঘর। অনেক সময়ই এই ঘরের বাসিন্দারা ভাড়াটে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বস্তির ঘরগুলো ভিন রাজ্যের বাসিন্দারা সস্তায় কিনে রাখেন—আসলে বস্তি উচ্ছেদের সময় পরে যখন পাকা বাড়ি তৈরি করে বস্তিবাসীদের দেওয়া হবে, তখন যাতে বস্তির কাঁচা ঘরের বদলে দিব্যি একটা পাকা ঘর হাতিয়ে নেওয়া যায়, সেই উদ্দেশ্যে। রাস্তার উপর প্রায় উঠে আসা বস্তিবাসীদের কাপড় কাচার মেশিন ও অস্থায়ী ছাদে টিভি-র ডিশ তাদের নিয়মিত রোজগারের ইঙ্গিতই করে। তাই যদি মুকেশ অম্বানী বা গৌতম সিংঘানিয়ারা সাহায্য করতে চান, তবে কাদের সাহায্য করবেন? মুম্বইতে নকল দরিদ্রের ভিড়ে আসল দরিদ্র যে হারিয়ে যায়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE