৩৭০ ধারা রদ এবং এনআরসি নিয়ে কংগ্রেস-সহ সমস্ত বিরোধী দল যখন ক্রমাগত নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে চলেছে, কেন্দ্রের এই দুই পদক্ষেপকেই ‘মানবিকতা বিরোধী’ অ্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, সে সময় সমর্থন উড়ে এল ভারতের সর্ববৃহৎ মুসলিম সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ-এর কাছ থেকে। মোদীর পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দাবি, ভারতের সঙ্গে সার্বিক ঐক্যের মধ্যেই যেমন কাশ্মীরীদের উন্নতি লুকিয়ে রয়েছে, তেমনই দেশের সুরক্ষায় এনআরসির মাধ্যমে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করাটাও জরুরি।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ-এর বার্ষিক সভা ছিল। সেই সভাতেই এমন মত প্রকাশ করে জমিয়তে। সভা শেষে এই দুই বিষয়ে সংগঠনের মতামত সাংবাদিকদের জানান সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ মাদানি।
তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীর আমাদের ছিল, আমাদের আছে, আমাদের থাকবে, যেখানে ভারত থাকবে সেখানেই আমরা থাকব। কাশ্মীরের মানুষদের রক্ষাকবচ হিসাবে ব্যবহার করে পাকিস্তান এিই উপত্যকাকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে। কিন্তু আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে, ভারতের সঙ্গে সার্বিক ঐক্যের (৩৭০ ধারা রদের মধ্য দিয়ে) মধ্যেই কাশ্মীরিদের উন্নতি লুকিয়ে রয়েছে।’’ কাশ্মীরে কোনওরকম বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন তাঁরা সমর্থন করেন না বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নিশানা শুধুমাত্র মমতা, অনৈক্য সামলান: বঙ্গ বিজেপিকে হুঁশিয়ারি শাহের
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ যে সব সময়ই কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে তা এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি এটাও জানিয়েছেন, কাশ্মীরে মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁরা। কারণ, ‘‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ কাশ্মীরকে ধ্বংস করতে চায়, তারা কাশ্মীরকে রাজনীতির প্ল্যাটফর্ম করে তুলেছে এবং সে জন্য কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ আসলে কী চান তা আমাদের কানে এসে পৌঁছয় না।’’
#WATCH Mahmood Madani, Jamiat Ulema-e-Hind: Kashmir hamara tha, hamara hai, hamara rahega. Jahan Bharat hai wahin hum. pic.twitter.com/mSsrxEYGAm
— ANI (@ANI) September 12, 2019
৩৭০ রদ নিয়ে কেন্দ্রকে পুরোপুরি সমর্থন জানানোর পরই এনআরসি প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। মাহমুদ মাদানি মনে করেন, কত অনুপ্রবেশকারী রয়েছেন তা চিহ্নিত করতে শুধু অসমেই নয়, সারা দেশে এনআরসি চালু করা দরকার। তাঁর সংযোজন, ‘‘যাঁরা ভারতীয় নাগরিক অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের দিকেও আঙুল তোলা হয়। তাই এটা হওয়া জরুরি। এনআরসি নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই।’’
আরও পড়ুন: হাজরায় মমতার উপর হামলা, ২৯ বছর পর ‘প্রমাণের অভাবে’ বেকসুর খালাস লালু আলম
দেশে যে হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্ব রয়েছে তা দূর করতে অভিনব ভাবনার আশ্রয় নিতে চলেছে জমিয়তে। তার জন্য ‘সদ্ভাবনা মঞ্চ’ গড়ে তুলতে চায় এই সংগঠন। এতদিন সংগঠনের যাবতীয় বৈঠক, সভায় শুধুমাত্র মুসলিমরাই অংশ নিতেন। হিন্দুদের প্রতি বা দেশের বিভিন্ন রীতি-নীতির প্রতি তাঁদের সংগঠনের কী ধারণা, তা বাকিরা জানতে পারতেন না। এই বিভেদ দূর করার জন্যই এই নয়া মঞ্চের ভাবনা। যেখানে হিন্দু-মুসলিম দু’জনেই বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিতে পারবেন।
ভারতের মুসলিম সংগঠনের মধ্যে সবচেয়ে বড় হল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। দেশভাগেরও বিরোধীতা করেছিল এই সংগঠন।