জলে ডুবে গিয়েছে উড়ালপুলের একাংশ। বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে পিটিআইয়ের ছবি।
টানা পাঁচ দিন বৃষ্টিতে রেল লাইনের উপর দিয়ে জল বইছে চেন্নাই ও আশপাশের ছ’টি জেলায়। তাতেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ট্রেন চলাচল। মৌসম ভবন সূত্রের খবর, তামিলনাড়ুর উপকূলবর্তী এলাকা, পুদুচেরি, তিরুভাদুর ও কাঞ্চিপুরমে শুক্রবারও বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তাই রেল বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চেন্নাই থেকে কোনও ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশন কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে রেল।
রেল মন্ত্রকের অনুমান, এই মুহূর্তে ১০-১৫ হাজার পর্যটক চেন্নাইয়ের প্রধান দু’টি স্টেশনে আটকে রয়েছেন। তাঁদের বড় অংশ এসেছিলেন চেন্নাইয়ে চিকিৎসা করাতে। স্টেশনে যাত্রীদের মধ্যে খাদ্যাভাব ও জলাভাব হয়েছে বলে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ। সেই দাবি উড়িয়ে রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, আটকে থাকা যাত্রীদের জন্য ইতিমধ্যে প্রায় কুড়ি হাজার খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছে রেল। স্টেশনের খাবারের স্টলগুলিকে খোলা রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের দল মোতায়েন করা হয়েছে। চেন্নাইয়ে যাঁরা আটকে পড়েছেন, তাঁদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেরও প্রচুর মানুষ রয়েছেন। নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার নজর রাখেছে। কেন্দ্র ও তামিলনাড়ু সরকারের কাজের মধ্যে হস্তক্ষেপ করে সরকার কিছু করতে চায় না। তবে কেউ চাইলে সরকার সাহায্য করবে।’’ রানওয়েতে জল ঢুকে পড়ায় বন্ধ চেন্নাই বিমানবন্দরও। তাই অনেকেই এখন সড়ক পথে বেঙ্গালুরু যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
ভেলোর গিয়ে আটকে পড়েছেন সোনারপুরের চন্দনা মাইতি। বুধবার অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তিনটি ট্রেনে পাল্টে চেন্নাই পৌঁছেছেন। ট্রেন বন্ধ থাকায় তাঁরাও চেন্নাই থেকে বেঙ্গালুরুর বাসের টিকিট কিনেছেন। চন্দনাদেবী বলেন, ‘‘বেশির ভাগ যাত্রীই বাসে বেঙ্গালুরু যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ওখান থেকে ট্রেনে বা বিমানে অন্যত্র যাওয়া যাবে।’’ কর্নাটক রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থাও বেঙ্গালুরু যাওয়ার জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে তামিলনাড়ুর বেসরকারি কিছু পরিবহণ সংস্থাও। বুধবার থেকেই তামিলনাড়ু সরকারি পরিবহণের বেঙ্গালুরুমুখী বাসগুলিতে আর পা রাখার জায়গা নেই।
• ফের ভারী বর্ষণ! সন্ত্রস্ত চেন্নাইবাসী
• মনে হচ্ছে ’৭৮-এর বন্যার চেয়েও ভয়াবহ দশা
• একতলা ছেড়ে জল কি আমাদের ছোঁবে
দক্ষিণ রেল সূত্রের খবর, চেন্নাই থেকে দু’দিন ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ। ফলে কলকাতা থেকেও চেন্নাইমুখী সব ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। বৃহস্পতিবারও হাওড়া এবং শালিমার থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস-সহ চেন্নাইমুখী ট্রেন বাতিল করেছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেল কতৃর্পক্ষ। এই অবস্থায় বেঙ্গালুরু দিয়ে অনেক ট্রেন ঘুরপথে চালাতে গিয়ে ওই রুটে ট্রেন বেড়েছে। ফলে নতুন করে স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো যাচ্ছে না।
বুধবার চেন্নাই-বিল্লুপুরম সেকশনে মান্ডুয়াডিহি-রামেশ্বরম এক্সপ্রেস ট্রেনটি চেঙ্গলপাট্টু স্টেশনে আটকে যায়। ওই ট্রেনে প্রায় ৩০০ যাত্রী ছিলেন। রেল সূত্রে খবর, যে ভাবে ওই সময়ে জল বাড়ছিল তাতে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। আজ ট্রেনটি ঘুরপথে তিরুচিরাপল্লি পাঠানো হয়েছে। বৃষ্টিতে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব ভারতগামী লাইনগুলি। মন্ত্রক জানিয়েছে, কাল সকালে বৃষ্টি ধরায় কয়েকটি জায়গায় লাইন মেরামতির কাজে হাত দেয় রেল। কিন্তু সন্ধের বৃষ্টিতে ফের নতুন করে ভাঙন ধরে লাইনগুলিতে। কলকাতা থেকে ছাড়া বহু ট্রেন ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy