রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডে দুই অভিযুক্ত খুনের কথা অস্বীকার করেছেন বলে দাবি মেঘালয় পুলিশের। পুলিশকে এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে যে বয়ান দিয়েছিলেন, সেই বয়ানও এ বার অস্বীকার করলেন ওই দুই অভিযুক্ত। শুধু তা-ই নয়, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেও মুখ খুলতে রাজি হননি তাঁরা।
শিলঙের পুলিশ সুপার হার্বার্ট পিনিয়াইড খারকোঙ্গর জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পেশ করা হয়েছিল এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম দুই অভিযুক্ত আকাশ রাজপুত এবং আননন্দ কুর্মিকে। কিন্তু তাঁরা বয়ান দিতে অস্বীকার করেন। তবে অভিযুক্তেরা তাঁদের বয়ান বদল করুক বা বয়ান দিতে অস্বীকার করলেও পুলিশের হাতে তাঁদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার হার্বার্ট।
রাজা হত্যাকাণ্ডে যে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে তার নেতৃত্বে রয়েছেন পুলিশ সুপার হার্বার্ট। তিনি জানিয়েছেন, আকাশ এবং আনন্দ এই দুই অভিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মুখ খোলেননি। ঘটনাচক্রে, মেঘালয় পুলিশ রাজার স্ত্রী সোনম-সহ পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর দাবি করেছিল যে, সব অভিযুক্তই তাঁদের অপরাধ স্বীকার করেছেন। পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি আদালতের গ্রাহ্য হয় না। অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তি না দেওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু তথ্যপ্রমাণও এ ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ আছে পুলিশের কাছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ফরেন্সিক রিপোর্টের অপেক্ষা করছি।’’
রাজাকে খুন করার জন্য আকাশ, আনন্দ এবং বিশাল সিংহ চৌহানকে ভাড়া করা হয়েছিল। রাজাকে খুনের সুপারি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সোনম এবং তাঁর প্রেমিক রাজের বিরুদ্ধে। দু’দিন আগেই ইনদওর থেকে মেঘালয়ে ফিরেছে এই মামলার তদন্তকারী দল। রাজাকে খুনের পর সেখানে একটি ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন সোনম। সেই ফ্ল্যাটের মালিক, আবাসনের এক রক্ষী এবং জমি বাড়ির এক ব্যবসায়ীকে সোমনদের সহযোগিতা এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বিয়ের পর ইনদওর থেকে মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন সোনম এবং রাজা। গত ২৩ মে রাজাকে খুন করা হয়। দীর্ঘ দিন নবদম্পতি নিখোঁজ ছিলেন। পরে ২ জুন রাজার দেহ উদ্ধার করা হয় জলপ্রপাতের ধার থেকে। সোনম তার পরেও অনেক দিন নিখোঁজ ছিলেন। পরে তিনি উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরে আত্মসমর্পণ করেন। রাজাকে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে মেঘালয় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সোনমের প্রেমিক রাজ-সহ আরও চার জনকে। রাজাকে খুনে তাঁরা সাহায্য করেছিলেন বলে দাবি। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ধৃতের সংখ্যা বেড়ে আট।