Advertisement
E-Paper

বুজে আসছে বড়াপানি, বিদ্যুৎ ভাবনায় শিলং

মেঘালয় পূর্ণরাজ্য হয়ে ওঠারও সাত বছর আগে, ১৯৬৫ সালে, পাহাড়ি নদী উমিয়ামের বুকে বাঁধ বসিয়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করেছিল অবিভক্ত অসমের বিদ্যুৎ পর্ষদ।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০২:০৯
পর্যটকদের আকর্ষণ বড়াপানি। নিজস্ব চিত্র

পর্যটকদের আকর্ষণ বড়াপানি। নিজস্ব চিত্র

আশঙ্কাটা দানা বাঁধছিল অনেক দিন ধরেই। শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্যি হতে চলেছে। হাতে সময় মেরেকেটে পাঁচ বছর। তার পরই শেষ হয়ে যাচ্ছে বড়াপানির জীবনকাল!

মেঘালয় পূর্ণরাজ্য হয়ে ওঠারও সাত বছর আগে, ১৯৬৫ সালে, পাহাড়ি নদী উমিয়ামের বুকে বাঁধ বসিয়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করেছিল অবিভক্ত অসমের বিদ্যুৎ পর্ষদ। তা ছিল উত্তর-পূর্বের প্রথম জলসঞ্চয় করে তৈরি বিদ্যুৎপ্রকল্প। উমিয়ামের বিদ্যুতেই আলোকিত হয়ে এসেছে শিলং পাহাড়। দিন যত গড়িয়েছে, উমিয়াম জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পর্যটন আকর্ষণও বেড়েছে। আশপাশে তৈরি হয়েছে রিসর্ট, উদ্যান, জলক্রীড়া কেন্দ্র। তৈরি হয়েছে লোককথা। খাসি ভাষায় উমিয়ামের অর্থ চোখের জলে তৈরি হ্রদ। বলা হয়, মেঘালয়ে আসার পথে হারিয়ে যাওয়া এক বোনের জন্য অন্য বোনের কান্নার জলেই উমিয়াম তৈরি। অবশ্য লোকমুখে তার নাম এখন বদলে হয়েছে ‘বড়াপানি’। জলাধার, আশপাশের বাগান, বাঁধের এলাকা মিলিয়ে বড়াপানির আয়তন প্রায় ২২০ বর্গ কিলোমিটার। মেঘালয় এনার্জি কর্পোরেশন লিমিটেড অতীতে জানিয়েছিল, জলাধার ও বাঁধের জীবনকাল হবে ১০০ বছর, অর্থাৎ ২০৬৫ সাল পর্যন্ত।

কিন্তু নগরায়ন বাড়ার প্রভাব পড়েছে পরিবেশ ও নদীগুলোর উপরে। শিলংয়ের সব আবর্জনা উম শিরপি ও উমখ্রা নদী হয়ে উমিয়ামে মিশছে। জলাধারে পড়েছে আশপাশের নেড়া পাহাড়ের মাটি ও পাথরও। সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় চল্লিশ হাজার কিউবিক মিটার পলি ও আবর্জনা উমিয়াম জলাধারে জমা হচ্ছে।

নতুন করে সমীক্ষার পরে এমইসিএল জানায়, উমিয়াম জলাধারের গভীরতা একেবারেই কমে গিয়েছে। তার জীবনকাল শতবর্ষ দূরের কথা, মাত্র ৪১ বছর। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে বিধানসভার বিশেষ কমিটি গড়া হয়। বিধায়ক এস কে সানের নেতৃত্বে কমিটির প্রতিনিধিরা গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন বাঁধের অবস্থা ঘুরে দেখেন। সান জানান, পাড়ে থাকা বাসিন্দারা যেমন উম শিরপি ও উমখ্রা নদীতে আবর্জনা ফেলে শহরের অবস্থা কলুষিত করেছেন, তেমনই উমিয়াম বাঁধের জীবনকাল কমিয়ে নিজেদের সর্বনাশ ডেকে এনেছেন। বাঁধের কাছে থাকা মাওদুন গ্রামের বাসিন্দারা জল থেকে সেই আবর্জনা সংগ্রহ করে রুটি-রুজি চালান। ফলে খানিকটা হলেও আবর্জনা কমে। কিন্তু বাঁধটি আর মাত্র পাঁচ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে। তার পর রাজ্যের রাজধানী ও আশপাশের এত বড় এলাকা কোথা থেকে বিদ্যুৎ পাবে কেউ জানে না।

কমিটির সদস্য এইচ এম সাংপ্লিয়াং জনতার কাছে নদীগুলিতে আবর্জনা না-ফেলার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আবর্জনা যাতে উমিয়ামে না-জমা হয় তা নিয়ে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। উমিয়াম বন্ধ হলে বিকল্প কিহবে তা নিয়েও অবিলম্বে আলোচনায় বসা উচিত।

মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসে অবিলম্বে উমখ্রা ও উম শিরপি নদী পরিষ্কার করার অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। উমিয়ামের আশপাশের সব গ্রামপ্রধানকেও জলাধার পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

Meghalaya Umiam Lake Electricity
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy