Advertisement
E-Paper

পাক প্রতিআক্রমণের প্রস্তুতির আড়ালেই প্রত্যাঘাতের কৌশল! ‘মক্‌ ড্রিল’ নিয়ে প্রচার কি তবে অপারেশন সিঁদুরেরই অংশ ছিল?

‘মক্ ড্রিল’ নিয়ে ভারত জুড়ে প্রচারের আসল লক্ষ্য ছিল পাক বাহিনীকে কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকার সুযোগ করে দেওয়া। আর তারই সদ্ব্যবহার করে মঙ্গলবার গভীর রাতে হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৫ ২৩:৩১
চলছে মক্ ড্রিল।

চলছে মক্ ড্রিল। —ফাইল চিত্র।

দেশের অন্দরে যখন ‘আর এক যুদ্ধের’ প্রস্তুতি নিয়ে প্রচার চলছিল, তখনই ভারতীয় সেনা তৈরি হচ্ছিল প্রত্যাঘাতের জন্য। ‘মক্ ড্রিলে’র নির্ঘণ্ট নিয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণার আবহেই পাক ভূখণ্ডে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নয়াদিল্লির নিপুণ ‘সারপ্রাইজ় এলিমেন্টস’ বলে মনে করছেন অনেকেই।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রকের তরফে সম্ভাব্য পাক হামলা থেকে আত্মরক্ষার জন্য সাধারণ নাগরিকদের সংগঠিত করার বার্তা দেওয়া হয়েছিল গত রবিবার। জানানো হয়েছিল, আপৎকালীন বা যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য সাধারণ মানুষকে প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে হবে ‘অসামরিক মহড়া’। ঘটনাচক্রে তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাক পঞ্জাবে তিনটি জঙ্গিগোষ্ঠীর ডেরায় আকাশ হামলা চালাল ভারতীয় বায়ুসেনা।

খড়গপুর স্টেশনে মক্ ড্রিল।

খড়গপুর স্টেশনে মক্ ড্রিল।

১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় শেষ বার ভারতে সাধারণ নাগরিকদের জন্য ‘মক্‌ ড্রিলে’র আয়োজন করা হয়েছিল। তার পরে আবার সেই ধরনের মহড়ারই আয়োজন ঘিরেই মঙ্গলবার দিনভর ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। তার সেই সাজ সাজ রবের আবহে গভীর রাতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল পাক জঙ্গিদের ন’টি ডেরা।

‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই বুধবার গোটা দেশের নানা জায়গায় অসামরিক মহড়া হয়েছে। মহড়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরও নানা জায়গায়। পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে হাওড়া স্টেশন এলাকার গোলমোহর মাঠে মহড়ার আয়োজন করা হয়েছিল। খড়্গপুর স্টেশনেও ‘মক্ ড্রিল’ হয়। এ ছাড়া, মহড়া চলানো হয় শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি স্কুলের মাঠে।

পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে হাওড়া স্টেশন লাগোয়া গোলমোহর মাঠে মক্ ড্রিলের আয়োজন করা হয়।

পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে হাওড়া স্টেশন লাগোয়া গোলমোহর মাঠে মক্ ড্রিলের আয়োজন করা হয়।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী দেশ জুড়ে মক্ ড্রিল প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার। মূলত বিমানহানা এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে আত্মরক্ষাই এই মহড়ার লক্ষ্য। অর্থাৎ, পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান যদি ভারতের লোকালয়ে বোমা বা ‘ভূমি থেকে ভূমি’ ক্ষেপাণাস্ত্র হামলা চালায়, তা হলে সাধারণ মানুষ কী করবে, মহড়ায় তা শেখানো হয়। এই ধরনের হামলার ক্ষেত্রে ঘরের বা মহল্লার সমস্ত আলো তো আগেই নেবাতে হয়। শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমানের নজর এড়াতে ‘ব্ল্যাক আউট’ করা হয় জনপদে। সেই সঙ্গে বোমা-ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্ফোরণের ধাক্কা ও ‘শার্প নেল’ এড়াতে আপাত নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি স্কুলের মাঠে নাগরিক মহড়া বা মক্ ড্রিল  চালাল এসএসবির ৪১ ব্যাটেলিয়ন।

শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি স্কুলের মাঠে নাগরিক মহড়া বা মক্ ড্রিল চালাল এসএসবির ৪১ ব্যাটেলিয়ন।

অনেকে বলছেন, ‘মক্ ড্রিল’ নিয়ে ভারত জুড়ে প্রচারের আসল লক্ষ্য ছিল পাক বাহিনীকে কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকার সুযোগ করে দেওয়া। আর সেই সুযোগেরই সদ্ব্যবহার করে মঙ্গলবার গভীর রাতে আকস্মিক ‘‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ হয়েছে ন’টি সন্ত্রাস পরিকাঠামোয়। বস্তুত, মঙ্গলবার রাতেই যে পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদীদের পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে, ঘুণাক্ষরেও তার আঁচ মেলেনি। নয়াদিল্লিতে রাত জেগে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ নজর রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টা আগেও প্রধানমন্ত্রীকে এবিপি সামিটে দেখে বোঝা যায়নি কী হতে চলেছে। শুধু পাকিস্তান বা সিন্ধু চুক্তির নাম না নিয়ে ‘জলবণ্টন’ প্রসঙ্গে প্রতিবেশীকে খোঁচা দিয়েছিলেন তিনি। সেই আপাত নির্লিপ্ততা যে আসলে প্রত্যাঘাতের প্রতীক্ষা, রাতেই তা টের পেয়ে গেল ইসলামাবাদ।

Mock Drills Operation Sindoor 2025 Operation Sindoor Pahalgam Terror Attack Pahalgam Incident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy