কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার হয় ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট। পরের বছর ওই দিনেই ভূমিপুজো হয় অযোধ্যার রাম মন্দিরের। সেই ধারা মেনে আগামী ৫ অগস্ট অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল সংসদে পেশ হতে পারে বলে চর্চা শুরু সর্বস্তরে। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, আইন কমিশন আগামী দু’সপ্তাহ ওই বিলের বিষয়ে জনগণের মতামত নেবে। ফলে বাদল অধিবেশনের মধ্যে ওই বিলের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করা বেশ কষ্টসাধ্য।
গত মাসে আইন কমিশন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আইন প্রসঙ্গে জনগণের মতামত নেওয়া শুরু করতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, লোকসভার আগে হিন্দু ভোটের মেরুকরণের লক্ষ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকার ওই আইন আনতে চলেছেন। এরই মধ্যে চলতি সপ্তাহে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে দলীয় কর্মসূচির মঞ্চ থেকে খোদ প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে সরব হন। এই আবহে দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র আজ টুইট করেন, ‘‘৫ অগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার হয়েছিল। ৫ অগস্ট রাম মন্দিরের শিলান্যাস হয়েছিল। আর আগামী ৫ অগস্ট অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আসতে চলেছে।’’ কপিল ওই দাবি করলেও, বিষয়টি নিয়ে মেপে পা ফেলার পক্ষপাতী বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপি নেতাদের একাংশ মনে করছেন, আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত মতামত সংগ্রহ করবে আইন কমিশন। তার পরে সেগুলি পর্যালোচনা করে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যে হেতু বিষয়টির সঙ্গে সব ধর্মের মানুষের বিবাহ, বিচ্ছেদ ও উত্তরাধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি জড়িয়ে রয়েছে, তাই ওই বিল আনার আগে সব দিক খতিয়ে দেখার পক্ষপাতী সরকার। তা ছাড়া ওই বিল এলে বিভিন্ন মহল থেকে বিরোধিতা হবে। যা হিন্দু ভোটের মেরুকরণে সাহায্য করবে বিজেপিকে। সেই বিতর্ক যদি শীতকালীন অধিবেশনের সময়ে হয়, তা হলে সে সময়ে একাধিক বিধানসভা নির্বাচন বা পরের বছরে লোকসভা নির্বাচনে অনেক বেশি ফায়দা পাবে দল। কিন্তু বাদল অধিবেশনে বিল আনা হলে বিতর্কের রেশ লোকসভা ভোটের অনেক আগেই থিতিয়ে যাবে। বিজেপির ওই অংশের মতে, তাতে ভোটের বাক্সে ফায়দা হবে না দলের।
এরই মধ্যে আজ উত্তরাখণ্ড সরকারের কাছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিলের খসড়া জমা দেন তা তৈরির দায়িত্বে থাকা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই। বিশেষজ্ঞ কমিটির ওই খসড়া রিপোর্টে মূলত লিঙ্গ সমতার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এ ছাড়া খসড়া বিলে বহুবিবাহ, নিকা হালালার মতো প্রথা নিষিদ্ধ সুপারিশ করা হয়েছে। কপিল মিশ্র শিবিরের মতে, উত্তরাখণ্ডের খসড়া বিল প্রস্তুত। যার ভিত্তিতে আগামী দিনে কেন্দ্রকে চূড়ান্ত বিল তৈরি করতে হবে। আইন কমিশনের মতামত গ্রহণের শেষ দিনের পরেও অন্তত এক মাস সংসদ চলার কথা রয়েছে। যা ওই বিল সংসদে পেশ করার প্রশ্নে যথেষ্ট সময় বলেই দাবি বিজেপির ওইঅংশের নেতাদের।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)