Advertisement
E-Paper

‘অন্যায্য, অযৌক্তিক’! ট্রাম্পের শুল্ক হুঁশিয়ারির কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত, পাল্টা পদক্ষেপের বার্তা বিদেশ মন্ত্রকের

সোমবার রাতে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা নিয়ে নয়াদিল্লিকে বার বার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে নিশানা করছে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ২৩:১৬
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

রাশিয়ার থেকে তেল কেনা নিয়ে সোমবার রাতে ভারতকে আরও একবার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানিয়েছেন, ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ থেকে তেল কিনে খোলা বাজারে তা বিক্রি করার ‘অপরাধে’ ভারতের উপর আরও শুল্ক চাপানো হবে। আমেরিকার সেই হুঁশিয়ারির পরেই এ বার কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। জানানো হল, জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ করবে ভারত।

সোমবার রাতে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা নিয়ে নয়াদিল্লিকে বার বার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে নিশানা করছে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এটি শুধু অন্যায্যই নয়, অযৌক্তিকও। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার জন্য ভারতকে নিশানা করা হচ্ছে। আদতে সংঘাত শুরুর পর সমস্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী ইউরোপে চলে যাচ্ছিল বলেই ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি শুরু করে। সে সময় বিশ্বের জ্বালানির বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানিতে উৎসাহও দিয়েছিল আমেরিকা।’’

শুধু তা-ই নয়, বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, ভারতের সমালোচনাকারী দেশগুলি নিজেরাই রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যে লিপ্ত হচ্ছে! পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, শুধু ২০২৪ সালেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং রাশিয়ার মধ্যে ৬৭,৫০০ কোটি ইউরোর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছে। ২০২৩ সালে বাণিজ্য হয়েছে ১৭,২০০ কোটি ইউরোর, সেই হিসাবে দেখতে গেলে যা ভারত-রাশিয়ার মোট বাণিজ্যের চেয়ে অনেক বেশি। শুধু তা-ই নয়, ২০২৪ সালে ইউরোপের প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির পরিমাণও ১৬৫ লক্ষ টনে গিয়ে পৌঁছেছে, যা ২০২২ সালের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। কেবল জ্বালানিই নয়, রাশিয়া থেকে সার, খনিজ, রাসায়নিক, লোহা, ইস্পাত এবং নানা যন্ত্রপাতিও আমদানি করে ইউরোপ। পিছিয়ে নেই আমেরিকাও। রাশিয়ার কাছ থেকে তারা পারমাণবিক শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, প্যালাডিয়াম, বিবিধ সার এবং রাসায়নিক কেনে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষের পরেও সেই আমদানি অব্যাহত রয়েছে। এর পরেই বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, ‘‘ভারতের উপর এ হেন আক্রমণ অন্যায্য এবং অযৌক্তিক। বিশ্বের যে কোনও প্রধান অর্থনীতির মতো ভারতও তার জাতীয় স্বার্থ এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ করবে।’’

প্রসঙ্গত, ভারতীয় সময় অনুযায়ী সোমবার রাত ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে ভারতকে সরাসরি হুমকি দেন ট্রাম্প। ট্রাম্প লেখেন, ‘‘ভারত যে শুধু রাশিয়ার থেকে বিপুল পরিমাণে তেল কিনছে, তা নয়। বরং মুনাফার জন্য তারা কেনা তেলের বেশির ভাগ অংশ খোলা বাজারে বিক্রিও করছে। এ দিকে রাশিয়ার যুদ্ধপ্রক্রিয়া ইউক্রেনের কত মানুষের প্রাণ কাড়ছে, তার পরোয়াও করছে না ভারত। এই কারণেই আমি ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক আরও বৃদ্ধি করব।’’ প্রসঙ্গত, গত বুধবারই ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। পাশাপাশি, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল এবং অস্ত্র কেনার জন্য ভারতকে ‘জরিমানা’ও দিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। জরিমানার অঙ্ক সম্পর্কে অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। সোমবার ফের একই সুরে শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দিতে শোনা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। যদিও কত বাড়তে পারে শুল্ক, সে বিষয়ে এ বারেও কিছু স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প। সেই হুঁশিয়ারির পর এ বার প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত।

Donald Trump US Tariff War India-US Relationship India US Tariff War PM Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy