ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম বারের জন্য অবৈধ অভিবাসীদের ভারতে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, আমেরিকার একটি সামরিক বিমান ‘সি-১৭’ তাঁদের নিয়ে রওনা দিয়েছে ভারতের উদ্দেশে। এ বিষয়ে দিল্লির তরফে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। রাখঢাক রয়েছে আমেরিকার প্রশাসনেও। তবে সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে আমেরিকার দূতাবাসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আমেরিকা নিজের সীমান্তের দিকে সজাগ নজর রাখছে। অভিবাসন আইনে আরও কড়াকড়ি করা হচ্ছে। অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে অবৈধ অভিবাসী রাখার কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না।
অতীতে জো বাইডেনের জমানায় চার্টার্ড বিমানে করে ফেরত পাঠানো হয়েছিল অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের। তবে এ বার আর চার্টার্ড বিমানে নয়, আমেরিকার সামরিক বাহিনীর বিমানে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। ঘটনাচক্রে, চলতি মাসেই ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। আমেরিকা থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে মার্কিন দূতাবাসের ওই মুখপাত্রও সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, “আমেরিকা থেকে ভারতে বিমান পাঠানোর বিষয়ে অনেকেই আমার কাছে জানতে চাইছেন। কিন্তু এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।” এর পরেই অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে আমেরিকার কড়া পদক্ষেপের কথা জানান তিনি।
কত জন ভারতীয়কে আমেরিকা থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, দু’শোর বেশি ভারতীয়কে ফেরানো হচ্ছে আমেরিকার সামরিক বাহিনীর ওই বিমানে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ শুরু করেন ট্রাম্প। বিভিন্ন দেশের অবৈধ অভিবাসীদের খোঁজে শুরু হয় ধরপাকড়ও। এই আবহেই গত ২৭ জানুয়ারি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা হয় মোদীর। পরে আমেরিকান সংবাদমাধ্যমে ট্রাম্প জানান, সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতেই মোদী হোয়াইট হাউসে যাবেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে।
আরও পড়ুন:
মোদীর সঙ্গে কী কী বিষয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশাই রেখে দিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় সব বিষয়ই উঠে আসে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। আমেরিকায় থাকা অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের প্রসঙ্গেও সেই সময় মন্তব্য করেন ট্রাম্প। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জানান, অবৈধ অভিবাসীদের প্রসঙ্গে যেটি সঠিক হবে, ভারত সেটিই করবে।
বস্তুত ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমেরিকায় গিয়ে অবৈধ অভিবাসন প্রসঙ্গে দিল্লির অবস্থান স্পষ্ট করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আমেরিকায় কোনও অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী রয়েছেন কি না, তা নিয়ে মন্তব্য করেননি বিদেশমন্ত্রী। তবে তিনি জানান, যদি কোনও দেশে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী থাকেন এবং যদি দিল্লি নিশ্চিত হয় তিনি ভারতীয় নাগরিক, তবে তাঁকে ভারতে ফেরানোর জন্য কেন্দ্র সব সময় প্রস্তুত। এটি কেবল আমেরিকার জন্য নয়, সব দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।