প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি রয়টার্স।
আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক হতে পারে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করা পরে এটিই হবে দু’জনের প্রথম বৈঠক। সোমবার বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র উদ্ধৃত করে প্রকাশিত খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
গত ২৭ জানুয়ারি ট্রাম্প ফোন করেছিলেন মোদীকে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে দু’জনের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। পরের দিন ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারিতেই মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হতে পারে। অন্য দিকে, ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনের কথা জানিয়ে এক্স পোস্টে মোদী লিখেছিলেন, ‘‘তাঁর ঐতিহাসিক দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য অভিনন্দন জানালাম। আমরা পারস্পরিক উন্নয়ন এবং বিশ্বস্ত অংশীদারির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আমাদের জনগণের কল্যাণে এবং বিশ্বের শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্য একসঙ্গে কাজ করব।’’
গত ২০ জানুয়ারি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হয়েছে ট্রাম্পের। সেখানে মোদীর প্রতিনিধি হিসাবে হাজির ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। গত ৭ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পরেই তাঁকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মোদী। সমাজমাধ্যমে সে কথা জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘আমার বন্ধু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি দুর্দান্ত কথোপকথন হল। অসাধারণ জয়ের জন্য তাঁকে অভিনন্দন। প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, শক্তি, মহাকাশ এবং অন্যান্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্য আবার একসঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ।’’
মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত স্তরেও সম্পর্ক বেশ মসৃণ। প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্পের শেষ বিদেশ সফর ছিল ভারতে। ২০১৬-২০ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন ট্রাম্প বারে বারেই মোদীকে ‘বন্ধু’ বলেছেন। ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে টেক্সাসের হিউস্টনে ছিল ‘হাউডি মোদী’ সভা। সেখানে প্রায় ৫০ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয়ের সামনে কূটনীতির বেড়া টপকে ‘অব কি বার ট্রাম্প সরকার’ স্লোগান দিয়েছিলেন মোদী। বলেছিলেন, ‘‘ট্রাম্পের নেতৃত্বগুণ, আমেরিকাকে নিয়ে ওঁর আবেগ, দেশের নাগরিকদের জন্য ওঁর উদ্বেগ এবং আমেরিকাকে ফের মহান করে তোলার জন্য ওঁর মনের তাগিদ আমাকে অনুপ্রাণিত করে।’’
২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে দু’দিনের ভারত সফরে এসে গুজরাতের মোতেরায় মোদীর নামাঙ্কিত পুনর্নির্মিত ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উদ্বোধনে গিয়েছিলেন ট্রাম্প এবং তৎকালীন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া। সেখানে লক্ষাধিক মানুষের জমায়েতে মোদী দাবি করেছিলেন, তিনি এবং ট্রাম্প মিলে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবেন। ২০২০-র অগস্টে প্রেসিডেন্টপদে পুনর্নির্বাচন চেয়ে ট্রাম্পের ‘আরও চার বছর’ (ফোর ইয়ার মোর) প্রচারের সূচনায় ‘ভিডিয়ো ক্যাম্পেনিং’-এ তুলে ধরা হয়েছিল ট্রাম্প-মোদীর সেই যৌথ জনসভার নানা ক্লিপিংস। এ বারও প্রেসিডেন্ট ভোটের প্রচারে ট্রাম্পের মুখে শোনা গিয়েছে ‘বন্ধু’ মোদীর নাম। দুই রাষ্ট্রনেতার এই সমীকরণ নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্কে নতুন মাত্রা আনবে বলে কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন।
ট্রাম্প এ বার ক্ষমতায় আসার পর বেশ কিছু নীতি গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম হল আমেরিকার স্বার্থকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেখা হবে, তার পরে অন্য দেশের কথা বিবেচনা করা হবে। এই নীতির নাম ‘আমেরিকা ফার্স্ট’। সেই লক্ষ্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও করতে শুরু করেছে তাঁর সরকার। অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে দেশ থেকে বিতাড়ন (ডিপোর্ট) করতে শুরু করেছে ট্রাম্পের প্রশাসন। সেই তালিকায় অনেক ভারতীয়ও রয়েছেন। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসন কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কোনও অবৈধ অভিবাসীর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নথি পেলে ভারত তাঁদের ফিরিয়ে নেবে বলেও জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy