ভারত এবং পাকিস্তানের পরিস্থিতির দিকে প্রতি দিন প্রতিনিয়ত নজর রাখছে আমেরিকা। এমনটাই দাবি করলেন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো। একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি জানান, যে কোনও সংঘর্ষবিরতি নিয়ে উভয়পক্ষের সম্মতি পাওয়ার পর তা দিনের পর দিন বজায় রাখা কঠিন। ভারত-পাকিস্তানের মতো বিশ্বের নানা প্রান্তে একাধিক সংঘর্ষরত দেশগুলির দিকেও আমেরিকার নজর রয়েছে, দাবি রুবিয়োর।
গত মে মাসে ভারত এবং পাকিস্তান সশস্ত্র সেনা সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল। দুই দেশের মধ্যে টানা চার দিন সংঘাত চলার পর ১০ মে সংঘর্ষবিরতি হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম দিন থেকে দাবি করে আসছেন, এই সংঘর্ষ তাঁর মধ্যস্থতায় থেমেছে। বাণিজ্যের প্রস্তাব দিয়ে তিনি ভারত এবং পাকিস্তানকে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি করিয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্পের এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে ভারত সরকার। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে রুবিয়ো রবিবার বলেন, ‘‘সংঘর্ষবিরতির অন্যতম জটিলতা হল তাকে বজায় রাখা। সেটা খুবই কঠিন। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কী চলছে, তার দিকে আমরা সর্ব ক্ষণ নজর রাখছি।’’
আরও পড়ুন:
চেষ্টা করলেও রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ এখনও থামাতে পারেননি ট্রাম্প। সে প্রসঙ্গে রুবিয়ো বলেন, ‘‘সংঘর্ষবিরতির একটাই পথ। উভয়পক্ষকে গোলাগুলি চালানো বন্ধের বিষয়ে রাজি হতে হবে। রাশিয়ানেরা এখনও তাতে রাজি হয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যে কোনও সংঘর্ষবিরতি খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে পড়তে পারে। বিশেষত যখন সা়ড়ে তিন বছর ধরে যুদ্ধ চলছে (ইউক্রেনে)। আমরা এখনও চিরস্থায়ী কোনও যুদ্ধবিরতি চাইছি না। আমরা একটা শান্তি চুক্তি চাইছে যাতে এখন যুদ্ধ বন্ধ হয় এবং ভবিষ্যতেও না-হয়।’’
অন্য একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন রুবিয়ো। বলেন, ‘‘আমরা খুব ভাগ্যবান যে আমরা এমন এক জন প্রেসি়ডেন্টকে পেয়েছি, যিনি শান্তিস্থাপনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। আমরা কম্বোডিয়া-তাইল্যান্ডে দেখেছি। ভারত-পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও দেখেছি। রোয়ান্ডা-ডিআরসিতে দেখেছি। আগামী দিনেও বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার সব সুযোগ আমরা কাজে লাগাব।’’
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। ৬ মে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান হয়, যার নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাক জঙ্গিঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে যায় ভারতের হামলায়। এর পর দুই দেশ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। ট্রাম্পের দাবি, ভারত-পাক সংঘাত পরমাণু যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছিল। তিনি হস্তক্ষেপ না-করলে ব়ড় অঘটন ঘটতে পারত। তবে ট্রাম্পের এই দাবি মানেনি নয়াদিল্লি। প্রথম থেকেই তাদের বক্তব্য, পাকিস্তানের তরফ থেকে সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব এসেছিল এবং ভারত তাতে রাজি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের দিকে নজর রেখেছে আমেরিকা।