আমেরিকার শুল্ককোপের জেরে কমতে পারে ভারতের জিডিপি। এমনটাই মনে করছেন দেশের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন। আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নাগেশ্বরনের মতে, এর জেরে চলতি অর্থবর্ষে দেশের জিডিপি প্রায় ০.৫ শতাংশ কমে যেতে পারে। তবে অনিশ্চয়তা দীর্ঘমেয়াদি হলে ভারতের জন্য ‘ঝুঁকি’ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
ভারতের উপর ট্রাম্প যে অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন, তা বেশি দিন স্থায়ী হবে না বলেই মনে করছেন নাগেশ্বরন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ টিভি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, “আমি আশা করছি, জরিমানা বাবদ অতিরিক্ত শুল্ক একটি স্বল্পস্থায়ী ঘটনা। চলতি অর্থবর্ষে এটি কত দিন ধরে চলবে, তার উপর নির্ভর করে এটি (ভারতের) জিডিপির উপর ০.৫-০.৬ শতাংশ প্রভাব ফেলতে পারে।”
তবে মার্কিন শুল্ক ঘিরে এই অনিশ্চয়তা যদি পরবর্তী অর্থবর্ষেও চলতে থাকে, তবে এর প্রভাব আরও ‘ব্যাপক’ হতে পারে। তখন সেটি ভারতের জন্য একটি বড় ‘ঝুঁকি’ তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। বস্তুত, ভারতের উপর প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলেন ট্রাম্প। পরে রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ‘জরিমানা’ হিসাবে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান দিল্লির উপরে। বর্তমানে ভারতের উপরে সবমিলিয়ে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছেন তিনি। এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে ভারতের উপরেই মার্কিন শুল্কের হার সবচেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের এই শুল্কনীতির জেরে বেশ কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারত ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে বস্ত্রশিল্পের ক্ষেত্রে প্রতিযোগী ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশের তুলনায় আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুটা পিছিয়ে পড়তে পারে ভারত। ধাক্কা খেতে পারে গহনা শিল্পও। তবে নাগেশ্বরন জানাচ্ছেন, চলতি অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার যে ৬.৩-৬.৮ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির আভাস দিয়েছে, তিনিও তার সঙ্গে সহমত। এর কারণও জানিয়েছেন তিনি। মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার কথায়, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) জিডিপি খুব ভাল হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দেশের অর্থনীতি ৭.৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে বৃদ্ধি।
পাশাপাশি সম্প্রতি পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) ব্যবস্থায় সরলীকরণ করা হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির হারও গত আট বছরে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এই অনুঘটকগুলিও দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তিনি। নাগেশ্বরনের মতে, জিএসটি সংস্কারের ফলে দেশের জিডিপি ০.২-০.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।