এত দিন ধরে বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে শুল্ক বাবদ যে অর্থ আদায় করল আমেরিকা, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিলে তার অর্ধেকই ফেরত দিয়ে দিতে হবে। আমেরিকার অর্থনীতি তাতে বড়সড় ধাক্কা খাবে। মেনে নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট। সে ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের সামনে বিকল্প কী থাকবে, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি। আপাতত হোয়াইট হাউস তাকিয়ে আদালতের রায়ের দিকে।
নিউ ইয়র্কের একটি আদালত কিছু দিন আগে জানিয়েছিল, বিভিন্ন দেশের উপর ট্রাম্প যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তা বেআইনি। যদিও শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দেয়নি আদালত। সময় দেওয়া হয়েছে অক্টোবর পর্যন্ত। এর পরেই নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালে়ঞ্জ জানিয়ে ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। রবিবার মার্কিন অর্থসচিব এনবিসি নিউজ়ের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলে শুল্কের প্রসঙ্গ ওঠে। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আমাদের বিপক্ষে গেলে খুব সমস্যা হবে। আমাদের শুল্কের অর্ধেক টাকাই ফেরত দিয়ে দিতে হবে। সেটা অর্থনীতির খুব ক্ষতি করবে। কিন্তু যদি আদালত বলে, আমাদের তো করতেই হবে।’’
আরও পড়ুন:
আপাতত সুপ্রিম কোর্টের উপর আস্থা রাখছে ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু যদি বিপক্ষে রায় আসে, সে ক্ষেত্রে কোন পথে এগোবেন? মার্কিন অর্থসচিব এ বিষয়ে খুব খোলসা করে কিছু বলতে চাননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, শুল্কের ক্ষেত্রে পদক্ষেপের জন্য অন্য অগুনতি উপায় রয়েছে। তবে পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করে বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলির উপর এখন ট্রাম্প যে ভাবে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন, তখন আর সেই অবস্থানে থাকবেন না। বেসেন্ট মেনে নিয়েছেন, শুল্ক নিয়ে অন্য কোনও পদক্ষেপে ট্রাম্পের হাতে সমঝোতার চাবিকাঠি আর থাকবে না।
এর আগে সিবিএস নিউজ়কে একটি সাক্ষাৎকারে অনুরূপ কথা বলেছিলেন আমেরিকার ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট। জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে রায় দেয়, তবে আমেরিকায় অন্য অনেক আইনসম্মত কর্তৃপক্ষ আছেন, যাঁরা শুল্ক ধার্য করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে নিজের কাজ তাঁদের দিয়ে করিয়ে নিতে পারবেন ট্রাম্প। কিন্তু কী করলে কী হবে, সবটাই এখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের উপর নির্ভর করছে। আপাতত সে দিকেই চোখ রেখেছে মার্কিন প্রশাসন।
দেশগুলির উপর শুল্ক আরোপ করতে আমেরিকার আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করেছিলেন ট্রাম্প। দাবি করেছিলেন, আমেরিকার সঙ্গে বিভিন্ন দেশের যে পরিমাণ বাণিজ্যিক ঘাটতি রয়েছে, তাতে অর্থনীতিতে জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর সমাধানের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপ প্রয়োজন। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলেছে নিম্ন আদালত।