E-Paper

হিমন্তের দাবি শুনে অবাক উত্তমের গ্রাম

বছর পঞ্চাশের উত্তমকে অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে অসম ফরেনার্স ট্রাইবুনাল আইনে নোটিস দেওয়া হয়েছে। অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনাল এফ টি কামরূপ (এম) সেকেন্ড কোর্ট তাঁর কাছে পুরনো ভোটার তালিকা, জমির নথি চেয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫ ০৯:২০
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। —ফাইল চিত্র।

তিনি না কি গুয়াহাটির বাসিন্দা! শুক্রবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার এমন দাবি শুনে আকাশ থেকে পড়েছেন কোচবিহারের দিনহাটার উত্তমকুমার ব্রজবাসী। অবাক তাঁর গ্রাম—দিনহাটার চৌধুরীহাটের সাদিয়ালের কুঠি। উত্তমের এক প্রবীণ পড়শি গিরীশ বর্মণের কথায়, ‘‘উত্তম তো বটেই, ওর বাপ-ঠাকুরদাকে পর্যন্ত চিনতাম। কয়েক পুরুষ ধরে ওরা এ গ্রামেই থাকে। অসমের বাসিন্দা হবে কী করে?’’

বছর পঞ্চাশের উত্তমকে অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে অসম ফরেনার্স ট্রাইবুনাল আইনে নোটিস দেওয়া হয়েছে। অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনাল এফ টি কামরূপ (এম) সেকেন্ড কোর্ট তাঁর কাছে পুরনো ভোটার তালিকা, জমির নথি চেয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমে ওই ঘটনায় ‘এনআরসি’-র (জাতীয় নাগরিকপঞ্জি) অবৈধ প্রয়োগের অভিযোগে সরব হন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, উত্তম রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ। পঞ্চাশ বছর এ রাজ্যের বাসিন্দা। বৈধ পরিচয়পত্র থাকলেও তাঁকে বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে হয়রান করা হচ্ছে। ‘‘এটি গণতন্ত্রের উপরে পরিকল্পিত আক্রমণ’’ বলেওমন্তব্য করেন।

সে অভিযোগকে নস্যাৎ করে এ দিন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার বক্তব্য, “ঘটনার সঙ্গে এনআরসির যোগ নেই। এটি একেবারেই বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়। উত্তম কুমার ব্রজবাসী নামের ওই ব্যক্তি আদতে দিনহাটার স্থায়ী বাসিন্দা নন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক্স-এ উল্লেখিত তথ্যও ঠিক নয়। উত্তম আসলে গুয়াহাটির রিহাবারির বাসিন্দা এবং অস্থায়ী ভাবে পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছেন।” অসমের মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন: ‘‘অসম সরকার কোচ-রাজবংশী সম্প্রদায়ের লোকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের সমস্ত মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে অনুসারে মামলা প্রত্যাহার করা যেতে পারত। কিন্তু ওই ব্যক্তির আইনজীবীরা অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনালকে সে যুক্তি দেখাতে ব্যর্থ।”

অসমের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি অবশ্য মানছে না দিনহাটার সাদিয়ালের কুঠি। গ্রামবাসী লালমোহন বর্মণ বলেন, ‘‘উত্তম আমার সমবয়সী। ছোট থেকে এক সঙ্গে বড় হয়েছি। গ্রামেই বরাবর দেখছি ওর পরিবারকে। অসমের বাসিন্দা হবে কী করে!’’ উত্তমের আর এক পড়শি ফিরোজা বিবি বলেন, ‘‘এই গ্রামে কয়েক দশক ধরে আমরা আছি। উত্তমেরা আমাদের প্রতিবেশী। কী সব বলা হচ্ছে!’’ উত্তম নিজেও দাবি করেছেন, ‘‘জীবনে অসমে থাকিনি। অসমের আদালত ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে হাজিরা দিতে বলেছে। যাব না বলে ভাবছি।’’ দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহের কটাক্ষ, ‘‘এনআরসির চিঠি পাঠিয়ে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যে অভিযোগ এনেছে অসম সরকার। এক মিথ্যে ঢাকতে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী আর এক মিথ্যে বলছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Himanta Biswa Sarma Assam Cooch Behar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy