জেলের ঘরে সোনার ছেলে! ডাকসাইটে খুনের আসামি-ই এ বার মেধাতালিকার শীর্ষে। ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (ইগনু) থেকে পর্যটন বিদ্যায় প্রথম স্থান অধিকার করে স্বর্ণপদক পেলেন বছর চব্বিশের অজিত কুমার সরোজ। প্রতিবেশীকে খুনের দায়ে ২০০২ থেকেই অজিত বারাণসী সেন্ট্রাল জেলে।
ইগনুর দাবি, তাদের বারাণসী শাখার ২০টি জেলার ৬ হাজার ছাত্রের মধ্যে এই প্রথম কেউ স্বর্ণপদক পেলেন। এই সাফল্যে গর্বিত অজিতের বাবা রাম বচ্চন সরোজ। তিনি বলেন, ‘‘ছোট থেকেই ও প়ড়তে ভালবাসে। কপালের ফেরে গত তিন বছর ধরে জেলে। তবু পড়াশোনা ছাড়েনি।’’ খুশির রেশ জেলের সুপার সঞ্জীব ত্রিপাঠীর গলাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘জেলের পরিবেশটাই বদলে দিয়েছে ছেলেটা। খুব খুশি আমরা। জেল যেন আজ আক্ষরিক অর্থেই সংশোধনাগার।’’
জেল সূত্রের খবর, জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এক প্রতিবেশীকে খুনের দায়েই অজিতকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় স্থানীয় আদালত। রামবাবু অবশ্য এখনও ছেলেকে দোষী মানতে নারাজ। বলেন, ‘‘এমনিতে ও খুব ঠান্ডা মাথার ছেলে। আমাদের বাঁচাতে গিয়েই খুন করে ফেলে। সে দিন কী করে যে সব হয়ে গেল, আজও ভেবে পাই না। তবে ঢের শিক্ষা পেয়েছি ওই ঘটনায়। যেচে আর কোনও ঝামেলায় আমরা নিজেদের আর জড়াই না।’’ ছেলের মুক্তি চেয়েই আপাতত দিন কাটাচ্ছে সরোজ পরিবার। ছেলের শাস্তির মেয়াদ ফুরোতে এখনও বাকি ৭ বছর!
ইগনুর ২৮তম বার্ষিক সমাবর্তন উপলক্ষে গত কালই অজিতের হাতে পুরস্কার ও শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। জেল কর্তৃপক্ষই তাঁকে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন। ফৈজাবাদের রাম মনোহর লোহিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জি সি জয়সোয়াল পদক তুলে দেন কৃতী ছাত্রের হাতে। জেলে বসে পরীক্ষা পাশের কৃতিত্ব অবশ্য এ বারই প্রথম নয় তাঁর। ইগনু সূত্রের খবর, এর আগে মানবাধিকার, বিপর্যয় মোকাবিলা, খাদ্য ও পুষ্টির মতো বিষয়ে চারটি সার্টিফিকেট কোর্স শেষ করেছেন অজিত। ইগনুর বারাণসী শাখার প্রধান এ এন ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘শুধু পাশ করা নয়, এই কোর্সগুলির প্রত্যেকটিতেই ৬৫ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেয়েছেন তিনি।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দাবি, ইগনুই বিশ্বের এক মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে জেলের কয়েদিদের দূরশিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়া হয়। উপাচার্য বলেন, ‘‘দেশ জুড়ে ৯৪টি জেলে স্টাডি সেন্টার রয়েছে আমাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy