২০ দিন ধরে ঠিক ভাবে ঘুমোতেও পারছিলেন না। আত্মহত্যার আগে এক ভিডিয়োয় কাঁদতে কাঁদতে এমনটাই বলেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও) সর্বেশ সিংহ। সোমবার সেই ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসে। দাবি করা হচ্ছে, আত্মহত্যার ঠিক আগেও ওই ভিডিয়োটি রেকর্ড করেছেন তিনি। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।
মোরেদাবাদের বহেরি এলাকার বাসিন্দা পেশায় স্কুলশিক্ষক সর্বেশ কমিশন নিযুক্ত বিএলও হিসাবে কাজ করছিলেন। রবিবার বাড়ির ভিতরেই ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোটও। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, কাজ শেষ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাননি তিনি। বিএলও হিসাবে কাজের চাপ নিতে না-পেরেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পরিবারের।
এরই মধ্যে সোমবার সর্বেশের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। তাতে নিজের বাস্তব পরিস্থিতির কথা কাঁদতে কাঁদতে পরিবারকে বোঝাচ্ছিলেন তিনি। ভিডিয়োয় সর্বেশ বলেন, “মা, আমার মেয়েদের খেয়াল রেখো। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি কাজ শেষ করতে পারিনি। তাই এই চরম পদক্ষেপ করতে হচ্ছে।” ভিডিয়োও তিনি এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর এই সিদ্ধান্তের জন্য কেউ দায়ী নন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “আমি খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। গত ২০ দিন ধরে আমি ঘুমাতেও পারছি না। আমার ছোট ছোট চার মেয়ে আছে। অন্যরা কাজ সেরে নিতে পারছে, কিন্তু আমি পারছি না।”
আরও পড়ুন:
কী কারণে ওই বিএলও-র মৃত্যু হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। একটি সুইসাইড নোটও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে। দু’পাতার ওই সুইসাইড নোটেও ‘এসআইআর-নিয়ে কাজের চাপে’র কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। সেখানে তিনি লিখেছেন, “দিন রাত কাজ করেও আমি এসআইআর-এর কাজ শেষ করতে পারছি না। প্রতিটি রাত আমার দুশ্চিন্তায় কাটে। খুব বেশি হলে দুই-তিন ঘণ্টা ঘুমোতে পারি।”
রবিবার উত্তরপ্রদেশে আরও এক বিএলও-র মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। বিজনৌরের বাসিন্দা শোভারানি পেশায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। ধামপুর এলাকায় একটি বুথে বিএলও হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। ডায়াবেটিস-সহ শারীরিক কিছু সমস্যাও ছিল তাঁর। সামনেই ছেলের বিয়ে ছিল। সেই প্রস্তুতি চলছিল। তা নিয়ে কিছুটা চিন্তাতেও ছিলেন। এরই মধ্যে এসআইআরের কাজও করতে হচ্ছিল তাঁকে। শুক্রবার অনেক রাত পর্যন্ত জেগে এসআইআর-এর এনুমারেশন ফর্ম আপলোড করতে হচ্ছিল তাঁকে। পরিবারের দাবি, তখনই বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। শনিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় শোভারানির। রবিবার তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। যদিও জেলা প্রশাসনের দাবি, শোভারানির উপর এসআইআরের কাজ সংক্রান্ত কোনও চাপ ছিল না।